শেষের পাতা
বিবিএস’র প্রতিবেদন
প্রবৃদ্ধিতে বড় পতন
স্টাফ রিপোর্টার
১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় পতন হয়েছে। স্থিরমূল্যে এই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশে। যেখানে আগের প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও প্রবৃদ্ধি হারের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থিরমূল্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩ দশমিক ৭৮ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সে তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধি বেড়েছে কৃষিতে, কমেছে শিল্প ও সেবা খাতে: এদিকে বিবিএস’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে শিল্প ও সেবার সব খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে। শুধুমাত্র কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কৃষিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা প্রথম প্রান্তিকে ছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
ওদিকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতেও (গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়) শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ব্যাপক কমেছে, আর কৃষিতে বেড়েছে। বিবিএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষিখাতে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থিরমূল্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের একই প্রান্তিকে তা ছিল ২ দশমিক ২০ শতাংশ। অন্যদিকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থিরমূল্যে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই প্রান্তিকে ছিল ১০ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থিরমূল্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে হয়েছিল ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে বেশি দেখছে এডিবি: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ছয় দশমিক এক শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। যদিও দুই সপ্তাহ আগে বিশ্বব্যাংক এবারের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছিল। দুই সংস্থার পূর্বাভাসের ব্যবধান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট।
গত বৃহস্পতিবার ম্যানিলাভিত্তিক সংস্থাটি ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক, এপ্রিল ২০২৪’- প্রকাশ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে ছয় দশমিক ছয় শতাংশে উন্নীত হতে পারে। এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, আমরা চলতি বছর ও আগামী বছর উন্নয়নশীল এশিয়ার বেশির ভাগ অর্থনীতির শক্তিশালী ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। অ্যালবার্ট পার্ক আরও বলেন, ভোক্তাদের আস্থা উন্নত হচ্ছে এবং বিনিয়োগ সামগ্রিকভাবে স্থিতিস্থাপক। বাহ্যিক চাহিদাও কমে আসছে বলে মনে হচ্ছে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে। নীতি-নির্ধারকদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, কারণ বেশক’টি ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্ন, মার্কিন আর্থিক নীতি সম্পর্কে অনিশ্চয়তা, চরম আবহাওয়ার প্রভাব এবং চীনে সম্পদ বাজারের আরও দুর্বলতা।