অনলাইন
পাথর গলা জলে প্রশান্তির ছোঁয়া
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
(১০ মাস আগে) ১৩ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৬:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪২ পূর্বাহ্ন

ঈদের দিন থেকে সিলেটে তাপমাত্রা বাড়ছে। শনিবার বিকেল ৫ টায় ছিলো ৩৩ ডিগ্রী সেলিসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস হচ্ছে; তাপ প্রবাহ থাকার কারনে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। সেটি আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ৩৬ কিংবা ৩৭ ডিগ্রীতে পৌছতে পারে। রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত সিলেটে না শীত ও না গরম। দিনে কিছুটা গরম অনুভূত হলেও রাতে ঠান্ডা অনুভূত হয়েছে। কিন্তু ঈদের দিন থেকে বদলে যায় আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি। বৃষ্টির দেখা নেই সিলেটে আকাশে। ফলে ঈদ মৌসুমে গরমে নাভিশ্বাস সিলেটের মানুষের। এই অবস্থায় মানুষ ছুটে চলেছে পাথর গলা জলের সন্ধানে।
সিলেটে যখন তীব্র তাপদাহ থাকে তখন মানুষের গন্তব্য থাকে সীমান্তবর্তী পর্যটনস্পট জাফলং, বিছনাকান্দি, সাদাপাথর, লালাখাল সহ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে। ওপারে ভারতের মেঘালয়ের বিশাল পাথরের পাহাড় রাজি। নিচে সমতল বাংলাদেশ। ফলে পাথর গলা পানি নেমে আসে পিয়াইন, ডাউকি, ধলাই, লোভা, সারি সহ কয়েকটি নদী দিয়ে। বর্ষায় তো পানি আসেই, শুস্ক মৌসুমেও ঝরনা দিয়ে পানি নামতে থাকে। এ পানি শীতল। পা চুবিয়ে বসে থাকলেই মিলে প্রশান্তির ছোয়া। আবার সাতার কাটতে মন চাইবে।
ঈদ মৌসুমের গরমে এবার সিলেটের মানুষ ছুটে চলেছেন পাথর গলা জলের কাছে। ঈদের দিন থেকে দলে দলে যাচ্ছেন জাফলং, সাদাপাথর সহ কয়েকটি পর্যটন স্পটে। এ কারনে ভিড় আর ভিড় এসব পর্যটনস্পটে। তবু ভিড় ঠেলে ছুটে চলেছে মানুষ। ঈদের পরদিন শুক্রবার ছিলো রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের উপস্থিতি। তিন ধারনের ঠাই ছিলো না এসব পর্যটন স্পটে। কয়েক লাখ পর্যটক একই দিনে ভিড় করেছিলেন। এ কারনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। জাফলং পর্যটন স্পটে দায়িত্বে থাকা ট্যুরিষ্ট পুলিশের ওসি রতন শেখ জানিয়েছেন; পর্যটকরা আনন্দ করতে আসছেন। এ কারনে পর্যটন পুলিশ মুল স্পট এবং জেলা পুলিশ যানবাহনের ভিড় সামাল দিতে কাজ করেছে। পাশাপাশি এসব স্পটে যাতে কেউ দুঘর্টনা বা হয়রানীর শিকার না হন সে কারনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার রাত অবধি অনেক পর্যটক ছিলেন জাফলংয়ে। সেখানে ছিলো বখাটেদের উৎপাতও। তরুনীদের ইভটিজিং করার দায়ে দুই বখাটেকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। তরুন বয়সী বন্ধুরা মিলে মাইক বাজিয়ে খোলা ট্রাক, ভ্যানে করে জাফলং যাচ্ছিলেন। জৈন্তাপুরের দরবস্ত এলাকার মানুষ এসব উন্মাদনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তারা খোলা ট্রাক ও ভ্যানে যেসব তরুনদের পেয়েছেন তাদের সিলেট অভিমুখে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এতে করে জাফলংয়ে এবার বখাটেপনা কমই ছিলো বলে জানিয়েছেন পর্যটকরা।
সাদাপাথরে এবার রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের উপস্থিতি ছিলো। স্থানীয় ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান নোমান জানিয়েছেন- ঈদের দিন বিকেল থেকেই কোম্পানীগঞ্জ সাদা পাথরে আসতে থাকেন মানুষ। শুক্র ও শনিবার বেশি সংখ্যক পর্যটকদের উপস্থিতি ছিলো। গরমে হাসঁফাস করা পর্যটকরা প্রশান্তির ছোয়া পেতে ভোগান্তি শিকার করেও সাদা পাথরে এসেছেন। তবে; পাথর গলার পানি ছোয়ায় মনে প্রশান্তি নিয়ে তারা বাড়ি ফিরছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নিরাপত্তা বেশি ছিলো।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক রাফি আহমদ জানিয়েছেন- মুল স্পটে যাওয়া জন্য যে নদী পথ রয়েছে সেটিতে পানি কম। এ কারনে নৌকায় যেতে হলে বার বার তলা মাটিতে লেগে যাচ্ছে। নেমে ধাক্কা দিয়ে নৌকা নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে করে পর্যটকরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।