ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

নেই পৌরসভার অনুমোদন, পরিষ্কার নয় লিজ প্রক্রিয়া

দিনের আলোয় বেদখল হচ্ছে জজ কোর্টের জায়গা

প্রতীক ওমর, গাইবান্ধা থেকে ফিরে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার
mzamin

নেই পৌরসভার অনুমোদন। কোন প্রক্রিয়ায় লিজ দেয়া-নেয়া হচ্ছে সেটিও পরিষ্কার নয় কারও কাছে। নীরব তত্ত্বাবধায়ক জেলা ও দায়রা জজ আদালত কর্তৃপক্ষও। কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছে না দখলদাররা। নির্মাণ চলছেই । গাইবান্ধার পুরাতন জজ কোর্টের জায়গায় দিনদুপুরে দখল-বেদখল ও লিজ প্রক্রিয়ার আইনগত বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বামপন্থি রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বিবৃতি পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমে। সেখানে তারা উল্লেখ করেছেন, জায়গাটির তত্ত্বাবধায়ক জেলা ও দায়রা জজ আদালত কর্তৃপক্ষের হলেও তারা অনেকটা নীরব ভূমিকায় আছেন। ফলে বিশিষ্টজনরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কথিত লিজের প্রক্রিয়ার বৈধতাসহ সকল প্রশ্নের জবাব প্রকাশ করতে হবে। এসব তথ্য জানার অধিকারকে নাগরিক অধিকার বলে মনে করেন তারা।  গণমাধ্যমে বিবৃতিদাতারা হলেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গাইবান্ধা জেলা সভাপতি প্রণব চৌধুরী, বাসদ, (মার্কসবাদী) জেলা আহ্বায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জেলা আহ্বায়ক মৃনাল কান্তি বর্মণ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগ জেলা সম্পাদক রেবতি বর্মণ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা আহ্বায়ক এডভোকেট নওশাদুজ্জামান এবং বাসদ, (মার্কসবাদী) জেলা কমিটির সদস্য এডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কয়েকদিন আগে থেকে গাইবান্ধা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত পুরাতন জজ কোর্টের জায়গায় দখল-বেদখল শুরু হয়েছে। সেখানে অনেক মূল্যবান গাছ ছিল সেগুলোও কাটা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায়, কীভাবে জায়গাটি লিজ দেয়া হয়েছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। জায়গাটি দখল করে মার্কেট নির্মাণ এবং গাছ কেটে হরিলুট করার পরও আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান-জায়গাটির তত্ত্বাবধায়ক জেলা ও দায়রা জজ আদালত কর্তৃপক্ষের নির্বিকার ভূমিকা জনমনে প্রশ্ন তুলেছে। এমন কর্মকাণ্ডে আমরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছি’। জজ কোর্টের জায়গা দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে ওই কোর্টের নায়েবে নাজির শাহীনের একটি অডিও রেকর্ড থেকে উঠে আসে কিছু তথ্য। অডিওতে শাহীন একজন সাংবাদিকের প্রশ্নে জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘সরকারে রাজস্ব খাতে প্রতি স্কোয়ার ফিটে ৮ টাকা জমা দিতে হবে সেই শর্তে দেয়া হচ্ছে ঘরগুলো। আগের পুরাতন ঘরগুলো যেভাবে দেয়া হয়েছে সেভাবেই এগুলো দেয়া হচ্ছে। সেই টাকা অগ্রিম জমা দিতে হচ্ছে। টাকা জমা হলে আমরা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে কিছু শর্ত দিয়ে ঘরগুলো দিচ্ছি। সেখানে বলা হয়েছে আমাদের যখন জায়গার দরকার হবে তখন তাদের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে কতোগুলো ঘর হচ্ছে সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো সঠিক পরিসংখ্যান বলা যাচ্ছে না।

 সদরের এমপি কিছু ঘর করছেন। তার ঘরগুলো হলে সেই তালিকা আমরা পেলে সংখ্যাটা বলা যাবে। এজন্য এক সপ্তাহ সময় লাগবে। সাংবাদিক শাহীনকে আবারো প্রশ্ন করেন যে, আপনি নাকি ঘরগুলো লিজ দিচ্ছেন? উত্তরে শাহীন বলেন, না আমি তো করার কেউ না। এটা জেলা জজ স্যারের কনসাল্ট। জেলা জজ স্যার না দিলে আমার তো দেয়ার এখতিয়ার নেই। আমি তো প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী মাত্র। ওই অডিওতে শাহীন স্থানীয় কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা ঘর চেয়েছিল বিধায় তাদেরকে একটি করে ঘর দেয়া হয়েছে। তারা সেখানে অফিস করবে’।   বিষয়গুলো নিয়ে শাহীনকে একাধিকবার তার মুঠোফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে সাড়া দেননি। ফোনে পাওয়া যায় নি গাইবান্ধা সদরের সংসদ সদস্য শাহ সারোয়ার কবীরকেও। জজ কোর্টের জায়গায় মার্কেট নির্মাণের কোনো প্ল্যান পাস বা অনুমোদন পৌরসভা থেকে নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমান মানবজমিনকে বলেন, অনুমোদন ছাড়া পৌরসভায় কোনো স্থাপনা করার বৈধতা নেই। কাচারি বাজারের ওই জায়গায় মার্কেট হচ্ছে কিন্তু কোনো অনুমোদন নেই। আমি কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে বিষয়টা জানিয়েছি। কাজ বন্ধ না হলে আইনি পদক্ষেপ নিবো।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status