শেষের পাতা
নতুন ৯৩ জন আক্রান্ত
বরগুনায় ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু
বরগুনা প্রতিনিধি
২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
বরগুনায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। ডেঙ্গুতে একদিনে নতুন করে আরও ৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৫ জনে। মারা গেছেন আরও একজন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। বর্তমানে মোট ২১৭ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার নাম বিপ্লব। সোমবার রাতে বরগুনা থেকে বরিশাল নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। তিনি বরগুনা পৌরসভার শহীদ স্মৃতি সড়কের বাসিন্দা ছিলেন।
গতকাল বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরগুনা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৩ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ভর্তি রয়েছেন ২০ জন। এরমধ্যে তালতলীতে ৬, বেতাগী ১, বামনায় ১১ ও পাথরঘাটায় ২ জন। বর্তমানে জেলা জুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১৭ জন। এরমধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮৩ জন, আমতলীতে ৮ জন, বেতাগীতে ২ জন, বামনায় ১৫ জন, পাথরঘাটায় ৩ জন এবং তালতলীতে ৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বছর জেলায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৮০৮ জন। এ ছাড়া বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বরগুনার বাইরে চিকিৎসা নিয়ে মারা গেছেন আরও ২১ জন। জেলায় ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৭। মারা যাওয়া ২৭ জনের মধ্যে ২৪ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায় এবং একজনের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলায় এবং দুই জনের বাড়ি বেতাগী উপজেলায়। আক্রান্তের দিক থেকে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে রয়েছে সদর উপজেলা। এখানেই আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৩০ জন। পাথরঘাটায় ১২০ জন, বামনায় ৭৯ জন, তালতলীতে ৩৭ জন, আমতলীতে ৩০ জন এবং বেতাগীতে ২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।
বরগুনা সদর জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রায় দুই শতাধিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে সবমিলিয়ে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৬০০ জন ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। অপরদিকে, বরগুনা সদর উপজেলার পর বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ভর্তি বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও সমানভাবে ভর্তি এবং সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পাওয়ায় ব্যালেন্স হচ্ছে। আর এ কারণেই এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে আমরা স্থান দিতে পারছি। তবে সামনের দিনগুলোতে যদি রোগীর সংখ্যা আরও বেশি হয়, তাহলে ওই সময় পরিস্থিতি কেমন হবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, বৃষ্টি কমলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ বৃষ্টির পর জমে থাকা পানির মধ্যেই এই এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। এখনো যে পরিস্থিতি তাতে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।