ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

জার্মান মিডিয়াকে ড. ইউনূস

তারা আমাকে জেলে পাঠাতে পারে

মানবজমিন ডেস্ক
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবারmzamin

জার্মানির একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কারাবাসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন  বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জার্মানির সাপ্তাহিক ডি সাইট পত্রিকাকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার। গণমাধ্যমটি লিখেছে, নিজ দেশে ৮৩ বছরের ইউনূসের কারাগারে যাওয়ার উদ্বেগ বাড়ছে। এমতাবস্থায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ শত শত নোবেলজয়ী ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একাধিক খোলা চিঠি লিখেছেন, যাতে তারা ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান ‘নিরবচ্ছিন্ন হয়রানির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেন।
কিন্তু শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে জানুয়ারিতে ড. ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এখন যদিও তিনি জামিনে আছেন। তবে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, তাদের ৮টি প্রতিষ্ঠানকে জবরদখল করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই তিনি ডি সাইটকে ওই সাক্ষাৎকারটি দেন।

সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক, খুবই দুঃখজনক। আমাদের অফিসগুলো  অজ্ঞাত ব্যক্তিরা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এক সপ্তাহ আগে আমাদের সামাজিক ব্যবসা সংস্থাগুলোর সদরদপ্তর যে ভবনে সেখানে প্রায় ৩৫ জনের একটি দল প্রবেশ করে। তারা নিরাপত্তারক্ষীদের পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে আমাদের ৮টি কোম্পানি দখলের ঘোষণা দেয়। রাত ৯টা পর্যন্ত আমাদের কর্মীদের বের হতে দেয়নি তারা। রাতে ভবন থেকে বের হওয়ার সময় তারা অফিসগুলোতে নিজেদের তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরের দিন সকালে তারা আবার ফিরে আসে এবং কোম্পানির কর্মীদের প্রবেশ করার জন্য তালা খুলে দেয়। প্রতিদিনই তারা আগ্রাসী হয়ে উঠছে।
প্রফেসর ইউনূসের কাছে জানতে চাওয়া হয় এই মানুষগুলো কারা? এর উত্তরে তিনি বলেন, আমি যে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম সেই ব্যাংকের পাঠানো লোক হিসেবে তারা নিজেদের পরিচয় দেয়। আমাকে ২০১১ সালে ওই ব্যাংক থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। যারা ভবন দখল নিয়েছে তারা সরকারের লোক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইউনূস বলেন, আমি এমনটা বলতে পারি না। আমি যা জানি তা হলো, আমরা পুলিশে ফোন করেছিলাম কিন্তু আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। 

ডি সাইট প্রফেসর ইউনূসকে প্রশ্ন করে যে, যারা তাকে চাপ দিয়ে আসছে এতদিন তাদের সমালোচনা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন ইউনূস। তবে এখন কেন প্রকাশ্যে এ নিয়ে কথা বলছেন তিনি? জবাবে ইউনূস বলেন, আমাদের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বাংলাদেশে সবাই জানে, এসব কীভাবে ঘটে। কারও নাম নিতে নেই; এটা অনেক খারাপ পরিণতি নিয়ে আসে।
গত ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, এ নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল ছিল না। প্রধান বিরোধী দলের নেতারা কারাগারে ছিলেন। ডি সাইট ইউনূসের কাছে জানতে চায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে তাকে ‘গরিবের রক্তচোষা’ বলে অভিহিত করেছিলেন, তা নিয়ে তার ভাবনা কি? ইউনূস বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) দাবি করেন যে আমি গরিব মানুষের রক্ত চুষতে ব্যাংক তৈরি করেছি, তাদেরকে অতিরিক্ত সুদে ঋণ দিয়েছি। কিন্তু সত্য হচ্ছে এর বিপরীতটি। এই ঋণের কারণেই দরিদ্র মানুষরা তাদের নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে এবং দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে সক্ষম হয়েছিল। এমনকি এই ব্যাংকটির মালিকও গ্রামের ওই দরিদ্ররা। শেখ হাসিনা আরও দাবি করেন যে, দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের তহবিল আটকে দিতে আমি মার্কিন সরকারের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করেছি, যেটা আমি কখনো করিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানি’ দেয়া সংক্রান্ত মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন একটি বিশাল অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে সকল বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বেশির ভাগ কথাই ছিল আমাকে নিয়ে। আমি কীভাবে সেতুর বিরোধিতা করেছি এবং কীভাবে তিনি আমার বিরুদ্ধে জিতেছেন সে সম্পর্কে। তিনি নিশ্চিত করতে চান যে, মানুষ আমাকে ঘৃণা করুক। শেখ হাসিনা কেন এমন চান তা জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, আমার কোনো ধারণা নেই। কেউ বলে এটা ব্যক্তিগত, কেউ বলে এটা রাজনৈতিক।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status