প্রথম পাতা
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও স্ত্রীর মৃত্যু
রিপোর্টে অ্যালকোহলের আলামত
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবারআগের দিন অসুস্থ হয়ে মারা যান পরিবেশ অধিদপ্তরের (ঢাকা অঞ্চল) পরিচালক সৈয়দ নজমুল আহসান। পরদিন মৃত্যু হয় তার স্ত্রী নাহিদ বিনতে আলমের। হাসপাতালের ভর্তির কাগজ থেকে অন্যান্য তথ্যাদির বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। যদিও পরিবারের দাবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তারা মারা গেছেন। এই দম্পতির বড় মেয়ে নাজিফা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। বুধবার রাতে যখন বাবার মরদেহ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তখন পর্যন্ত নাজিফা জানে না তার বাবা আর নেই। মা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে। এ সময় পরিবারের সদস্যদের কাছে বারবার জানতে চায় তার পরীক্ষা চলছে বাবা কেন আসছে না। মা কোথায়? তখন তাকে শান্ত্বনা দিয়ে বলা হয় তার বাবার শরীর খুব খারাপ। হাসপাতালে ভর্তি। মা, বাবাকে দেখাশোনার জন্য হাসপাতালে রয়েছেন। এই দম্পতির দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে নামিরার বয়স ১২ বছর। নজমুল আহসানের খালাতো বোন কাজী নাজনীন মানবজমিনকে বলেন, নজমুল আহসানরা ৫ ভাই ২ বোন। এক বোনসহ ৩ জন বিসিএস কর্মকর্তা। বাবা নেই। মা রাবেয়া বেগম বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের গ্রামের বাড়ি মাগুরা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নজমুল। এ সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থবোধ করলে তার স্ত্রী বড় ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এ সময় শ্যালক এসে দেখতে পান তিনি প্রচ- ঘামছেন। তৎক্ষণাৎ তাকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। একই সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে নাহিদ বিন আলমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হলে গতকাল সকালে তার মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন তাদের দু’জনেরই হার্টঅ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সৈয়দ নজমুল আহসান ও তার স্ত্রী নাহিদ বিনতে আলমের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ জানাজা শেষে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান মানবজমিনকে বলেন, আমরা খবর পেয়েছি বুধবার রাতে স্যারের মৃত্যু হয়েছে। এবং তার স্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
এদিকে প্রাথমিক সুরতহাল এবং ময়নাতদন্ত শেষে মতামত প্রদানকৃত কাগজের বরাত দিয়ে হাসপাতাল সূত্র জানায়, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভর্তির কাগজেও উল্লেখ ছিল অ্যালকোহল ওভারডোজ। এসব কাগজপত্র মানবজমিন’র হাতে এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আ. ম. সেলিম রেজা মানবজমিনকে বলেন, এখন পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ শনাক্ত করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্ত শেষে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মদ্যপানে মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষক্রিয়া কিংবা অ্যালকোহলজনিত কোনো কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা সেটা জানতে ভিসেরা পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেতে প্রায় ২ মাস সময় লাগবে। দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর-২-এ অবস্থিত মিরপুর গভর্নমেন্ট অফিসার্স কমপ্লেক্সে বসবাস করতেন এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ওসি মুন্সী সাব্বির আহমেদ বলেন, বুধবার মিরপুর-২ অফিসার্স কমপ্লেক্সে বাসায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ে অসুস্থ হলে নজমুল আহসানকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপরে তার স্ত্রীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। সৈয়দ নজমুল আহসানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। পৃথক পৃথক শোকবার্তায় তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। শোকবার্তায় পরিবেশমন্ত্রী জানান, নাজমুল আহসান পরিবেশ অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের বায়ুমান শাখার পরিচালক পদে কর্মরত থাকাকালীন দেশের বায়ুমানের উন্নয়নে সাধ্যমতো চেষ্টা করে গেছেন। তার মতো একজন সদালাপী কর্মকর্তার অকাল মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সৈয়দ নজমুল আহসান ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন।
very bad drink green water
দুই মদ্যপি -কে বুদ্ধিজীবি গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বুঝুন এবার, একটা দেশের প্রশাসন কাদের প্রমোট করে।
তারা কি ধরনের বাবা-মা যে ভাবলো না যে তাদের দুটি কিশোরী মেয়ে আছে যাদের ভবিষ্যৎ সামনে পড়ে আছে। তাছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের এত বিলাসিতা যে স্বামী স্ত্রী মনের সুখে মদ পান করে ।এবং সরকারের কোন নজর নাই