খেলা
ম্যাক্সওয়েল-সাউদির রেকর্ড, রান বন্যার ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস জয় অস্ট্রেলিয়ার
স্পোর্টস ডেস্ক
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার
শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য দরকার ৩৫ রান। ১৯তম ওভারে ১৯ রান নিলো অস্ট্রেলিয়া। আরও জমে উঠেলো খেলা। শেষ ওভারে অজিদের প্রয়োজন ১৫ রান। কিউই পেসার টিম সাউদির করা প্রথম তিন বল থেকে মিচেল মার্শ-টিম ডেভিডরা পান ৪ রান। শেষ তিন বলে অজিদের প্রয়োজন তখন ১২ রানের। চতুর্থ বলে ছক্কা, পঞ্চম বলে ডাবলস এবং শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে নাটকীয় এক জয় উপহার দেন টিম ডেভিড। ৬ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। আর এই ম্যাচে নিজ দেশের হয়ে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ড গড়েন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি। গতকাল ওয়েলিংটনে ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রের ফিফটিতে ৩ উইকেটে ২১৫ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। জবাবে মিচেল মার্শের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এটি ছিল টিম সাউদির ১২৩তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ২০ ওভারের ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়তে মার্টিন গাপটিলকে পেছনে ফেলেন ৩৫ বছর বয়সী এই পেসার। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি অভিষেক হওয়া সাউদি ১২৩ ম্যাচে ১৫৭টি উইকেট নিয়েছেন।
সেরা বোলিং ফিগার ৫/১৮ ব্যাট হাতে ৩০৩ রান নেন এই পেসার। ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১২২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন গাপটিল। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ১০৪ ম্যাচ খেলার পথে অ্যারন ফিঞ্চের রেকর্ড ভাঙেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১০৪ টি-টোয়েন্টি খেলে ৫ সেঞ্চুরিতে ২ হাজার ৪৪২ রান করেন তিনি। ২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০৩ ম্যাচ খেলে ৩ হাজার ১২০ রান করেছিলেন সাবেক অজি অধিনায়ক ফিঞ্চ। নিজ দেশের হয়ে সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়া সাউদি বৈশ্বিক তালিকায় রয়েছেন পঞ্চম স্থানে। সর্বোচ্চ ১৫১ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার। আর এই তালিকায় ১৮তম গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৬১ রান তোলেন নিউজিল্যান্ডের ফিন অ্যালেন এবং ডেভন কনওয়ে। ১৭ বলে ২ চার ও ৬ ছক্কায় ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অ্যালেন আউট হওয়ার পর ভাঙে এই জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৩ রান করেন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র। ৩৫ বলে ২ চার ও ৬ ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৬৮ রানে রবীন্দ্র আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ৪৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৬৩ রান করেন কনওয়ে। শেষে গ্লেন ফিলিপস ১৯ এবং মার্ক চ্যাপম্যান ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে একটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, অধিনায়ক মিচেল মার্শ এবং প্যাট কামিন্স। ২১৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৪র্থ ওভারের চতুর্থ বলে অ্যাডাম মিলনের বলে ক্যাচ তোলেন অজি ওপেনার ট্রাভিস হেড।
সাউদির তালুবন্দি হওয়ার আগে ১৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। দলীয় ৬৯ রানে ফেরেন ৩২ রান করা ডেভিড ওয়ার্নার। ১১ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করে আউট হন রেকর্ডগড়া ম্যাক্সওয়েল। জশ ইংলিস আউট হন ২০ রানে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলেন অধিনায়ক মার্শ। ৪৪ বলে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ৭২ রান করে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন এই ম্যাচসেরা অলরাউন্ডার। ১০ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন টিম ডেভিড। ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার। একটি করে উইকেট পান অ্যাডাম মিলনে এবং লকি ফার্গুসন। নিজে ম্যাচসেরা হলেও জয়ের কৃতিত্ব শেষ ওভারে চমক দেখানো টিম ডেভিডকে দিয়েছেন মিচেল মার্শ। ম্যাচ শেষে অজি অধিনায়ক বলেন, ‘শেষে খুবই শান্ত মাথায় এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে ব্যাট চালিয়েছে টিম ডেভিড। তার দলে থাকাটাই সৌভাগ্যের। দুর্দান্ত একটি ম্যাচ চিল। ২১৬ রান তাড়া করে জয় পাওয়া আসলেই দুর্দান্ত।’ নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার বলেন, ‘আমার মনে হয় না, খুব খারাপ বোলিং করেছি আমরা। কিন্তু তারা শেষে যে চমক দেখালো, সে কারণেই তারা অন্যতম সেরা দল। (২১৫ রান) স্কোর খারাপ ছিল না। আমরা জানতাম, ব্যাটিংয়ে তারা (অস্ট্রেলিয়া) দাপট দেখাবে। তাদের থামানোর একমাত্র উপায় হলো দ্রুত উইকেট নেয়া। যা করতে পারিনি আমরা।’ আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি অকল্যান্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।