শরীর ও মন
ক্যাম্পস’র ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্প
বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা পেল টাঙ্গাইলের প্রায় ৩ হাজার সাধারণ জনগণ
স্টাফ রিপোর্টার
(২ মাস আগে) ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার, ৬:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:১৫ অপরাহ্ন
প্রায় সাড়ে তিন হাজার সুবিধা বঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজনটি ২০ বছর ধরে করে আসছে ক্যাম্পস। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ তম বছরে এসে ক্যাম্পস চলতি বছরেও টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার হাতিবান্ধা গ্রামের তালিমঘর প্রাঙ্গণে ‘‘ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্প’’ এর মাধ্যমে অসহায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্পে টাঙ্গাইল ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের দরিদ্র গ্রামবাসীগণের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জন রোগীর নিবন্ধন ও প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বিনামূল্যে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে মেডিকেল ক্যাম্পের ১০ দিন আগে থেকে অর্থাৎ ১১ থেকে ২০শে ফেব্রুয়ারি এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির দিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ সহ প্রায় অর্ধশতাধিক চিকিৎসক, দিনব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র প্রদান সহ বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদান করে। এছাড়াও ২৫০ এর অধিক চক্ষু রোগীদের চোখের ছানী অপারেশন ও লেন্স প্রতিস্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।
দেশের শীর্ষস্থানীয় কিডনি বিশেষজ্ঞ, ক্যাম্পস এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে “সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি-সুস্থ জীবনধারা” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও প্রয়াস-২০ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
আলোচনা সভায় কিডনি বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির অধিক লোক দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য এরমধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানেনা যে মরণঘাতী কিডনি রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর হার শতকরা ১৬-১৮ ভাগ। কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল। একবার কিডনি বিকল হয়ে গেলে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, এরূপ মানবিক আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। সমাজের প্রত্যেকের ক্যাম্পস এর মতো মানবিক কর্মকা-ে নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখা উচিত।
ক্যাম্পস এর সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, ক্যাম্পস বিগত বছরগুলোতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক লাখেরও অধিক রোগীর বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা, সারে-তিন হাজার রোগীর চোখের ছানী অপারেশন, তিনশত রোগীর ঠোঁট কাটা, তালু কাটা রোগীর অপারেশন করেছে এবং বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত সাতটি সেন্টারের মাধ্যমে ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
ক্যাম্পস’র নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালেহীন এই মানবিক কর্মকা-ে সহযোগিতার নিমিত্তে আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সকল নিবেদিত প্রাণ, চিকিৎসকদের এবং টাঙ্গাইল জেলা রোভারের সকল সদস্যদের।