প্রথম পাতা
৩ যমজের মেডিকেল জয়, সামনে অনিশ্চয়তা
মরিয়ম চম্পা
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবারবাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৫ বছর আগে। এরপর শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে যমজ তিন ভাই। যমজ তিন জনই এবার মেডিকেলে চান্স পেয়েছেন। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হলেও সামনে তিন ভাইয়ের পড়ার খরচ কীভাবে আসবে সেটা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তায় তারা। না মাঝপথে থেমে যেতে পারে তাদের স্বপ্ন আর পরিশ্রম। আর তা নিয়েই তাদের সংশয়।
যমজ ভাইদের একজন মাফিউল হাসান কথা বললেন মানবজমিন-এর সঙ্গে। বলেন, ২০০৯ সালে যখন বাবা গোলাম মোস্তফা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তখন আমরা খুবই ছোট। বাবার স্নেহ-মমতা কিছুই পাইনি। মা আর্জিনা বেগম এসএসসি পাস করলেও বর্তমানে গৃহিণী। তিন যমজ ভাইয়ের মধ্যে মো. মাফিউল হাসান ঢাকার শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এবং এবার মো. সাফিউল হাসান দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ও মো. রাফিউল হাসান নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন। মাফিউল হাসান, সাফিউল হাসান এবং রাফিউল হাসান এসএসসি এবং এইচএসসিতে পড়াকালীনও চিন্তা করেননি তারা মেডিকেলে পড়বেন। পরবর্তীতে মেডিকেলে পড়াশোনারত বড় ভাইদের উৎসাহ এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিন যমজ ভাই মেডিকেলের কোচিং-এ ভর্তি হন। কঠিন পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে দেশের তিন মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পান। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হলেও সামনে তিন ভাইয়ের পড়ার খরচ কীভাবে আসবে সেটা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তায় তারা।
যমজ ভাইদের আরেকজন রাফিউল হাসান। তিনি জানান, পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর শুরুতে আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। এরপর পরিচিত অন্যদের দিয়ে একাধিকবার রোল নম্বর চেক করানোর পরে নিশ্চিত হই। আমার অন্য দুই ভাইয়েরও একই অবস্থা। আমরা বয়সে দুই থেকে তিন মিনিটের ছোট বড়। তিনজনই পরিশ্রমী। নিয়মিত কোচিংয়ে ক্লাসের পাশাপাশি বাসায় দৈনিক প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছি। আমাদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে মা তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৬ বিঘা জমি বিক্রি করে দেন। নিজস্ব ফসলি জমি থাকলেও সংসারে সেভাবে উপার্জনক্ষম কেউ নেই এখন। মায়ের বয়স হয়েছে। সবার বড় বোন অনার্সের শিক্ষার্থী। আরেক ভাই এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর নিয়মিত করেননি। আব্বু যখন মারা যান তখন আমরা খুব ছোট। তখন ততটা বুঝতাম না। বাবার ইচ্ছা ছিল আমরা বড় হয়ে পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবো। চিকিৎসক হবো এমন চিন্তা তখন বাবা কিংবা আমাদের মধ্যে ছিল না। বাবা মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে মা আমাদের সংসার খরচ এবং পড়াশোনার খরচ চালাতেন। যাকে বলে মধ্যবিত্ত। আমার দাদা-কাকা তারাও স্কুল শিক্ষক। কিন্তু প্রত্যেকেই আলাদা।
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রত্যন্ত বথুয়াবাড়ী গ্রামের রাফিউল হাসান বলেন, আমাদের তিন ভাইয়ের অনেক স্বপ্ন চিকিৎসক হয়ে দেশের সাধারণ মানুষের সেবা করবো। গরিব-অসহায়দের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবো। কিন্তু একসঙ্গে তিন ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে চলবে সেটা ভাবলেই চোখে অন্ধকার দেখি। স্বপ্নগুলো ফিকে হয়ে আসে। টিউশনি করে কতটা চালাতে পারবো জানি না। তবে সমাজের অনেকেই আছেন যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা যদি আমাদের তিন ভাইয়ের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ান তাহলে হয়তো নির্বিঘ্নে পড়াশোনা শেষ করতে পারবো। না হলে মাঝপথে থেমে যেতে পারে আমাদের স্বপ্ন আর পরিশ্রম।
তিনি বলেন, আমরা কত খুশি হয়েছি প্রকাশ করতে পারবো না। গ্রামের লোকজন যখন দেখতে আসে তখন মনের জোর আরও বেড়ে যায়। মায়ের বরাত দিয়ে রাফিউল বলেন, আমার মা নিজে কষ্ট করে জমি বিক্রি করে আমাদের পড়ালেখা করিয়েছেন। মায়ের দু’চোখে এখন কেবলই স্বপ্ন আমরা তিন ভাই সফল চিকিৎসক হবো। গ্রামের লোকজন আমাদের ফলাফলে খুবই আনন্দিত। এই শিক্ষার্থী বলেন, প্রবল ইচ্ছাশক্তি, কঠোর অধ্যবসায় এবং চেষ্টা থাকলে মানুষের জীবনে অসাধ্য বলে কিছু নেই।
মাশাল্লাহ। সমাজের বিত্তবানরা অবশ্যই এগিয়ে আসবেন। মোবাইল নাম্বার দিন। আশা করি অনেকের সাড়া দিবেন।
Mashallha
মাশাআল্লাহ।
"৩ যমজের মেডিকেল জয়, সামনে অনিশ্চয়তা " এই শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি আমি হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এবং বসুন্ধরার মালিক আহমেদ আকবর সোবহানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তাদের যমজ দুই ভাইয়ের মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করার খরচের দায়িত্ব নেয়ার জন্য জোর সুপারিশ করছি । ইনশাআল্লাহ, বিষয়টি জানতে পারলে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আহমেদ আকবর সোবহান এগিয়ে আসবেন এবং যমজ দুই ভাইয়ের মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করার খরচের দায়িত্ব নিশ্চিত তারা নেবেন।
Phone no add korun. Onek e help korar Jonno egiay ashbe.