শরীর ও মন
ব্যায়াম-এর মাধ্যমে কমিয়ে ফেলুন ‘স্ট্রেস’
ডা. মো. বখতিয়ার
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবারস্ট্রেস থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই নানা চেষ্টা করে থাকেন। স্ট্রেসকে পাশ কাটিয়ে দীর্ঘ সুস্থ জীবন গড়তে হলে সবচাইতে সহজ সমাধান হলো: ব্যায়াম।
স্ট্রেস প্রতিরোধে কতোটা ব্যায়াম প্রয়োজন
প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট অর্থাৎ কমপক্ষে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট মাঝারি ‘অ্যারোবিক’ ব্যায়ামের পরামর্শ দেয় আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন। যদি আপনার সময় কম থাকে, পুরো ৩০ মিনিটের সেশনটি সারা দিনে তিনবার ১০-মিনিট করে ভেঙে ভেঙে করতে পারেন।
এর পাশাপাশি আপনার সাপ্তাহিক রুটিনে পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়ামগুলোর কমপক্ষে দুইটি সেশন রাখা জরুরি। এ ব্যায়ামগুলো আপনার বাহু, কাঁধ, বুক, পিঠ, পেট, পা এবং অন্যান্য পেশিকে সবল রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত ব্যায়াম এর জন্য প্রয়োজন অভ্যাসের। শরীরচর্চার সঙ্গে ধীরে ধীরে আপনার শরীরকে মানিয়ে নিন। প্রথমে না হয় সপ্তাহে তিনদিন ২০ মিনিট করে জোরে জোরে হাঁটুন এবং পরে সেখান থেকে ধীরে ধীরে বাড়ান।
কী ধরনের ব্যায়াম স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয়?
স্ট্রেস কমানোর জন্য যেসব ব্যায়াম সেগুলো করার জন্য আপনাকে ক্রীড়াবিদ হতে হবে না। প্রায় যেকোনো ধরনের ব্যায়াম সহায়ক হতে পারে। মূল কথা হলো ঘাম ঝরতে হবে, হার্টবিট স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ করে বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। মাঝারি মানের যে কোনো ব্যায়ামই এগুলোর জন্য যথেষ্ট।
মাঝারি অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে আছে:
# সাইকেল চালানো
# দ্রুত হাঁটা বা জগিং
# সাঁতার কাটা
# টেনিস
# নাচ
# রোয়িং
এমনকি শীতকালের খেলা ব্যাডমিন্টন
পেশি-শক্তিশালী ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ভারোত্তোলনকে বিবেচনা করতে পারেন।
এমনকি বাগান করা বা লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো সহজ কিছু ব্যায়ামও আপনার স্ট্রেস কমিয়ে দিতে পারে।
ব্যায়ামের ভীতি কাটানোর একটা ভালো উপায় হলো- বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে মিলে একসঙ্গে শরীরচর্চা করা। যেমন দুই বন্ধু মিলে দৌড়ান বা সাঁতার কাটেন কিংবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাঁটতে বের হন। এতে ব্যায়ামের শারীরবৃত্তীয় উপকারগুলো বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কটাও আরও ভালো হয়ে ওঠে, যা স্ট্রেস কমাতে আরও বেশি সাহায্য করে।
তবে সব বয়সের জন্য সব ধরনের ব্যায়াম নয়। আপনার বয়স এবং শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই কোনো ধরনের ব্যায়াম করবেন এবং কতোক্ষণ করবেন সেটা ঠিক করে নেয়া উচিত। প্রয়োজনে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি আপনাকে আপনার শরীরের ফিটনেস অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।
লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।