শেষের পাতা
সীমান্ত এলাকায় সরানো হলো পরীক্ষাকেন্দ্র
বাংলারজমিন ডেস্ক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবারমিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি হলেও আপাতত শান্ত রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা। গতকাল সীমান্তে কোনো গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। তবুও আতঙ্ক কাটছে না সীমান্তঘেঁষা মানুষের। আর যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এদিকে চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ভেন্যু ছিল। এই ভেন্যুটি পরিবর্তন করে ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে সীমান্তবর্তী কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র করা হয়েছে। এদিকে সোমবার তুমব্রু পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম ও চট্টগ্রাম পুলিশের ডিআইজি নূরে আলম মিনাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি আগে থেকে অনেক ভালো। সীমান্তের বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের আলাপ-আলোচনা হচ্ছে এবং সহসায় একটি সিদ্ধান্ত আসবে যারা এখানে আসছে তাদেরকে ফেরত দেয়ার জন্য। এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষার মূল কেন্দ্র ছিল ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়। এখান থেকে কেন্দ্র পরিবর্তন হয়ে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যাবে। এতে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা, উখিয়া নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান, ঘুমধুম চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজসহ ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সীমান্ত দিয়ে দুষ্কৃতকারী ও রোহিঙ্গারা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ পাহারায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ইতিমধ্যে ১৩৭ জনকে প্রতিহত করা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্র জানায়। গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের নাফ নদী ও স্থলে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল থেকে অন্তত তিনটি স্পিডবোট নাফ নদীতে টহল দিতে দেখা গেছে। স্থলেও রয়েছে অতিরিক্ত টহল। গতকাল সকালে টেকনাফের দমদমিয়ায় নাফ নদী সীমান্তে স্পিড বোট দিয়ে জালিয়ার দ্বীপসহ নাফ নদীতে টহল বাড়িয়েছে বিজিবি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাশাপাশি কোনো দুষ্কৃতকারী যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকে দমদমিয়ার নাফ নদী সীমান্তে বিজিবি’র তিনটি স্পিড বোটের টহল অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে লোকজন অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু নতুন করে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। অন্যদিনের তুলনায় এদিন সীমান্ত শান্ত ছিল।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান লড়াইয়ে প্রাণে বাঁচতে সেনাসহ ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।