শরীর ও মন
শিশুর নিউমোনিয়ার বিপদ চিহ্ন
ডা. সৈয়দা নাফিসা ইসলাম
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবারনিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের এক ধরনের প্রদাহ। ফুসফুসে ছোট ছোট বাতাসভর্তি থলে (অ্যালভিওলাই) থাকে। এই থলে বা অ্যালভিওলাইতে সংক্রমণের ফলেই নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দিয়ে হতে পারে। আবার একেক বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে একেক রকম জীবাণু থেকে নিউমোনিয়া হয়। এছাড়াও ছোট শিশু খাবার গিলতে গিয়ে ফুসফুসে ঢুকেও নিউমোনিয়া হতে পারে। বিভিন্ন কেমিক্যাল বা ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশে বসবাস করলেও নিউমোনিয়া হতে পারে।
বিপজ্জনক হওয়ার লক্ষণসমূহ
জ্বর, কাশি, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টে বুকের দুধ বা অন্য খাবার খেতে না পারা কোনো শিশুর এসব উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে এবং চিকিৎসককে লক্ষণগুলো জানাতে হবে।
দুই মাস বয়সের নিচের শিশুদের বিপদচিহ্ন
১. অচেতন বা অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যাওয়া।
২. খিঁচুনি।
৩. কিছু খেতে না পারা।
৪. বমি।
৫. হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৬. নাক বা জিহ্বা কালো বা নীল বর্ণ ধারণ করা।
৭. যেকোনো ধরনের রক্তপাত।
৮. নবজাতকের ওজন যদি ১ হাজার ৫০০ গ্রামের কম থাকে এবং নিউমোনিয়া হয়।
৯. জ্বর অথবা শিশুর শরীর একেবারে ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া।
১০. শিশুর নড়াচড়া একদম কমে যাওয়া।
দুই মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের বিপদচিহ্ন সমূহ
খিঁচুনি, দুর্বল হয়ে যাওয়া বা নড়াচড়া কমে যাওয়া, খেতে না পারা, বমি। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ডায়রিয়া, কানে ব্যথা থাকলে নিকটস্থ’ হাসপাতালে পাঠাতে হবে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে পাঠাতে ব্যর্থ হলে শিশুর নানা ধরনের জটিলতা যেমন ফুসফুসে পুঁজ বা পানি জমা বা সারা শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই বিপদচিহ্নগুলো খেয়াল রাখুন, শিশুকে রক্ষা করুন।
তবে একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, শিশুকে চিকিৎসক দেখানো বা হাসপাতালে ভর্তি করলেই কিনু্ত রোগ ভালো হবে না। ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে হবে এবং পুরো চিকিৎসা শেষ করতে হবে। অনেক সময় জ্বর ভালো হয়ে যায় বা শিশুকে দেখতে সুস্থ মনে হয় কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞ যদি বলে চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়নি, তাহলে চিকিৎসকের কথা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। কারণভেদে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা ভিন্ন হতে পারে। যেহেতু নিউমোনিয়াতে শিশুর ফুসফুসের ক্ষতি হয় এবং নিউ মোনিয়ার অনেক জটিলতা আছে, তাই এ রোগে আক্রান্ত শিশুকে গুরুত্বের সহিত সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে।
লেখক: কনসালটেন্ট, শিশু বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চেম্বার:
(১) ডা. নাফিসা’স চাইল্ড কেয়ার শাহ্ মখদুম, রাজশাহী।
(২) আমানা হাসপাতাল, ঝাউতলী মোড়, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী।
মোবাইল: ০১৯৮৪-১৪৯০৪৯