বাংলারজমিন
বাবার সঙ্গে সংসারের ঘানি টানছে স্কুলছাত্রী
হাসান পিন্টু, লালমোহন (ভোলা) থেকে
১ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
ভোলার লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. তানজিলা। সংসারে নেই কোনো বড় ভাই। তাই সাত বছর বয়স থেকেই বাবার ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি ও নুডলসের দোকানে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। বাবা অসুস্থ থাকলে তানজিলাকেই সামলাতে হয় সব। গত বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুল শেষে এভাবেই বাবার কাজে সহযোগিতা করছে লালমোহন পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চরছকিনা এলাকার মো. আবুল কালামের মেয়ে তানজিলা। সংসারে তিন বোন এক ভাই’র মধ্যে সে মেজো। তার বাবার ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি ও নুডলসের দোকান লালমোহন সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কের মধ্যে।
শিক্ষার্থী তানজিলা জানান, একটু বড় হওয়ার পর থেকেই বাবার দোকানের কাজে সহযোগিতা করছি। প্রতিদিন সকালে এসে দোকান খুলি। ৯টার দিকে স্কুলে চলে যাই। আবার স্কুল শেষে বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-ধাওয়া শেষে দোকানে এসে পড়ি। এসে বাবাকে সহযোগিতা করি। আবার মাঝে মধ্যে নিজেই ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি ও নুডলস তৈরি করি। ৭ বছর ধরে নিয়মিত পড়ালেখার পাশাপাশি এভাবেই বাবাকে তার কাজে সহযোগিতা করে আসছি। আমার স্বপ্ন, একটু কষ্ট হলেও পড়ালেখা শেষে চাকরি করে পরিবারের পাশে দাঁড়াবো। আবুল কালাম বলেন, ছোট থেকেই দোকানটি চালাতে আমাকে সহযোগিতা করে আসছে তানজিলা। দোকানে কর্মচারী রাখতে পারছি না, তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই দোকানটি চালাচ্ছি। দোকানের আয় দিয়েই পুরো সংসার চলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমি এখন অনেক অসুস্থ। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করাতে পারছি না। যার জন্য মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন তানজিলা একাই দোকানটি চালায়। পার্কে ঘুরতে আসা কয়েকজন দর্শনাথী জানান, পার্কে আসলে তানজিলার দোকানে গিয়ে আমরা ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি ও নুডলস খাই। পড়ালেখার পাশাপশি বাবার কাজে সহযোগিতা করা এটা অনেকের জন্য অনুকরণীয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, ওই শিক্ষার্থীর পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই, প্রতিটি শিক্ষার্থী সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হোক।