শিক্ষাঙ্গন
যবিপ্রবি’র হলে আসন বরাদ্দ দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ
যবিপ্রবি প্রতিনিধি
২৫ নভেম্বর ২০২৩, শনিবারযশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক হলে আসন বরাদ্দের টাকা নিয়ে প্রায় ৬ মাসেও সিট না দেয়ায় অভিযোগ উঠেছে শহীদ মসীয়ূর রহমান (শমর) হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রায় ৬ মাস আগে দেড়শ’র অধিক শিক্ষার্থী ২ হাজার ৪৯০ টাকা করে হলের অ্যাকাউন্টে জমা দিলে কক্ষ বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করে হল প্রশাসন। কিন্তু ৬ মাস পেরোলেও অনেক শিক্ষার্থী হলেই উঠতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের দাবি, শমর হল অফিসের কর্মচারীসহ হল প্রভোস্টের সঙ্গে যোগাযোগের পরও সিটের ব্যবস্থা করা হয়নি। সিট দিতে না পারলে হল প্রশাসন কেন টাকা নিয়েছেন এমন প্রশ্ন তুলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সিটবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ব্যর্থ হল প্রশাসকের কারণেই তারা তাদের সিট বুঝে পাচ্ছেন না। শিক্ষার্থীরা জানান, বড় ভাইদের কক্ষে আমাদের অনেকেরই আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা বরাদ্দকৃত কক্ষ দেখতে গেলে ভেতরে ঢুকতে দেননি তারা। এ অবস্থায় হল প্রশাসনের কাছে বারবার মৌখিকভাবে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়েছেন স্বয়ং প্রভোস্ট। প্রভোস্টের হুমকির কথা অন্যান্য সিটবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে আর অভিযোগ দেয়ার মতো সাহস পায়নি তারা। এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক ফেসবুকে লেখালেখি করলে তাকে হুমকি-ধমকিসহ দেখে নেয়ার কথা বলেন প্রভোস্ট ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ। বরাদ্দকৃত আসনে উঠতে না পেরে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের হলে ওঠার জন্য নিদিষ্ট পরিমাণ টাকা আগে জমা দিতে হয়েছে। বলা হয়েছিল আমাদের পরের মাসে বরাদ্দকৃত সিট দেয়া হবে। আমি সে অনুযায়ী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে হলে সিটের জন্য আবেদন করি এবং মেস ছেড়ে দেই। তারপরের মাসে নোটিশের মাধ্যমে জনতে পারি, আমার নামে সিট বরাদ্দ হয়েছে। জানার পরে আমি আমার নামে বরাদ্দকৃত রুমে যাই কিন্তু গিয়ে দেখি সেখানে আগে থেকে ৫ জন আছেন। আমাকে সেই কক্ষে ঢুকতেই দেয়া হয়নি। দরজা থেকে বের করে দিয়ে আমার মুখের উপর দরজা আটকে দেয়া হয়। এ অবস্থা দেখে হলে ওঠার সাহস পাইনি। আজ প্রায় ছয়-সাত মাস হতে যাচ্ছে এখনো উঠতে পারিনি। হল প্রশাসন কে আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি বহিরাগতের কক্ষ ছাড়ার বিষয়ে। সিট দিতে না পারলে আমাদের থেকে টাকা নিলেন কেন? ৬ মাসেও আমাদের সিটের ব্যবস্থা না করে, টাকা নেয়া হল প্রশাসনের প্রতারণা নাকি সিট বাণিজ্য? আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমরা ৩ বন্ধু বরাদ্দকৃত রুমে ঢুকতে গেলে দেখা যায় সেই রুমে ৪ জন আগেই বরাদ্দকৃত আছে। এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট স্যারকে মৌখিকভাবে জানানো হলে স্যার বলেন দ্রুতই আমাদের রুম দিবেন। এ আশ্বাসে আমরা মেস ছেড়ে হলে চলে আসি। নির্দিষ্ট সিট না পেয়ে সিনিয়র ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সিট শেয়ার করে হলে থাকি। এখন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই কষ্টটা আরও তীব্র হয়েছে। টাকা জমা দিয়েও আমাদের হলে এক ধরনের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। রুম বরাদ্দসহ হলের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা সাংবাদিকদের ওপর মেজাজ হারিয়ে কোনো তথ্য দিবেন না বলে জানান। একপর্যায়ে অশোভন ও অপেশাদার আচরণ করেন।