খেলা
সিলেটে বন্যার্তদের পাশে ক্রিকেট বোর্ড
স্পোর্টস রিপোর্টার
২০ জুন ২০২২, সোমবার
ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সিলেট। বিশেষ করে এই বিভাগের জেলা সুনামগঞ্জের পরিস্থিতি করুণ। বানভাসি মানুষের আজহারিতে ভারী সিলেটের বাতাস। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এবার সেই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। জানা গেছে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও ওষুধ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এ ছাড়াও বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছে, তারা দ্রুতই ত্রাণ পাঠানোর সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সব সময় আমাদের চেষ্টা থাকে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পাশে থাকার জন্য। এবং এটার ব্যতিক্রম হবে না বলে আমি মনে করি। আমাদের বোর্ড সভাপতি মহোদয় ইতিমধ্যে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যে কীভাবে কি কাজ করলে হয়তো বা তাদের পাশে থাকা যাবে, সেভাবে আমাদের দেখতে বলেছেন এবং আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি।’ শুধু সিলেটের বন্যার্ত মানুষই নয় বিভাগটির জাতীয় দলে ও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা ক্রিকেটারদেরও খোঁজ নিতে ও তাদের যেকোনো ধরনের সাহায্য করতে বিসিবি থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সিলেট থেকে দৈনিক মানবজমিনকে বিসিবির কার্যক্রমের কথা জানিয়েছেন নাদেল। তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে সিলেটে আছি। এরইমধ্যে ঢাকায় বিসিবি’র সভাপতি ও সিইও’র সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। তারা দ্রুত এখানে শুকনো খাবার ও ওষুধ পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। যতটা জানি কাল বা পরশুর মধ্যেই বিসিবি’র এই ত্রাণ সিলেটে এসে পৌঁছাবে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে প্রস্তুত আছি।’ এ ছাড়াও বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রয়েছে সিলেট বিভাগের দুই ক্রিকেটার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী। তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি সিলেটে থাকা যেসব ক্রিকেটার বন্যার শিকার তাদেরও খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে নাদেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দল ও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা সিলেটের সব ক্রিকেটারদেরই আমরা খোঁজ নিচ্ছি। কেউ যদি কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বিসিবি থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অন্যদিকে বন্যার্ত মানুষের জন্য আশ্রয় হিসেবে সিলেটে স্টেডিয়ামগুলো ব্যবহার করতে দেয়া হবে বলেও জানা গেছে। তবে সুখবর হচ্ছে সিলেট শহর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। যে কারণে হয়তো আশ্রয় হিসেবে বিসিবির অবকাঠমোগুলো ব্যবহার করা লাগবে না বলেই জানিয়েছেন শফিউল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা বন্যার্তদের আশ্রয় দিতে আমাদের স্টেডিয়াম ও অবকাঠমোগুলো দেয়ার ব্যাপারে ভেবে রেখেছি। তবে সুখবর হলো শহর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। এখন আর এই আশ্রয়কেন্দ্র খুব একটা প্রয়োজন হবে না।’ তবে সিইও জানিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে বিসিবি’র অবকাঠামো ব্যবহারের জন্য এখনো সিলেট থেকে কোনো অনুরোধ আসেনি। যদি আসে তারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের (আশ্রয়কেন্দ্র) অনুরোধ আমাদের কাছে আসেনি। তারা যে সমস্ত স্থাপনাগুলো ব্যবহার করছেন আমরা যতটুক জানি সে সমস্ত জায়গায় খাদ্যসামগ্রী বা কিছু পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে কথা হচ্ছে। এ ধরনের আমাদের কোনো স্থাপনা ব্যবহারের ব্যাপারে আমাদের কাছে এখনো কোনো অনুরোধ আসেনি।’ অন্যদিকে সিলিট বিভাগ থেকে আসা বিসিবি পরিচালক ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম নাদেলের সঙ্গে বিসিবি’র যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাহী। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের যে সংশ্লিষ্ট বোর্ড পরিচালক (সিলেট) আছেন, তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে উনি যোগাযোগ করছেন কীভাবে আমরা কন্ট্রিবিউট করতে পারি বা কীভাবে আমরা পাশে থাকতে পারি সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। খুব শিগগিরই আমরা আশা করছি হয়তো কিছু একটা আপনারা দেখতে পারবেন। সিলেটে আমাদের জাতীয় দলের কিছু খেলোয়াড় আছেন, যারা বর্তমানে দলের সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য আমাদের বলা হয়েছে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। আমাদের সংশ্লিষ্ট বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে।’