শেষের পাতা
ডাউকি ফল্ট নিয়ে দুশ্চিন্তা
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবার
সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিলেটের পাশেই ডাউকি ফল্ট। সেটি ভারতের মেঘালয় ও আশপাশ এলাকায় অবস্থিত। এর পাশে আসাম ফল্ট নামে আরও একটি ভূমিকম্প জোন রয়েছে। তবে; সেটি তেমন ভয়ঙ্কর না হলেও ডাউকি ফল্ট নিয়ে সব দুশ্চিন্তা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ঘন ঘন ভূমিকম্প দুটি বার্তা দেয়। এরমধ্যে একটি হচ্ছে ঝুঁকি কমায় ও অপরটি ঝুঁকি বাড়ায়। কোনটি হচ্ছে বলা মুশকিল। এ কারণে প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ তাদের। সিলেটের ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে গতকাল দুপুরে বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান। এতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ভূমিকম্পের পূর্ভাবাস মিলে না। সুতরাং আগাম সতর্ক বার্তা জানান দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কখন ভূমিকম্প হবে সেটি বলা মুশকিল। যেকোনো সময় হতে পারে। এজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন- ডাউকি ফল্টের পাশেই সিলেট। এজন্য ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোনে অবস্থিত সিলেট অঞ্চল। আমাদের আবহাওয়া বার্তা সব সময় সেটি রেড জোনে রাখা হয়েছে। এদিকে- গতকাল সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও করণীয় শীর্ষ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম। তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ঘন ঘন ভূমিকম্প ঝুঁকি বাড়াতে পারে আবার কমাতেও পারে। ডাউকি ফল্ট ডেঞ্জার জোন। এখানে ভূগর্ভে দুটি প্লেট রয়েছে। এ কারণে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক। বলা হচ্ছে; ফল্টের পূর্ব অংশে সাড়ে ৩০০ বছর পরপর বড় ভূমিকম্প হয়। এ কারণে আমাদের সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের দিকে মনোযোগী হতে হবে। তিনি জানিয়েছেন- চিলি ও হাইতিতে একই সঙ্গে একই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেখানে দেখা বিল্ডিং কোড মানায় চিলিতে ক্ষয়ক্ষতি ছিল হাইতির চেয়ে অনেক কম। যারা বিল্ডিং কোড মেনে চলবেন সেখানে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। এ ছাড়া- ভূমিকম্প হলে প্রচুর খালি জায়গা প্রয়োজন হয়। এজন্য সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ, এমসি কলেজ মাঠ এভাবে আরও যত মাঠ সব মাঠগুলোকে সংরক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; গত ৬-৭ বছরে সিলেট নগরে যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো বিল্ডিং কোড মেনে করা হয়েছে। পূর্বে নির্মাণ করা অনেক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলোর মালিককে বার বার নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো অপসারণ করা হচ্ছে না। অতিমাত্রায় ভূমিকম্প হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেক্ষেত্রে এসব ভবনের প্রাণহানিসহ সম্পদের ক্ষতি হতে পারে।
পাঠকের মতামত
চিলি ও হাইতিতে একই সঙ্গে একই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল / সেখানে দেখা বিল্ডিং কোড মানায় চিলিতে ক্ষয়ক্ষতি ছিল হাইতির চেয়ে অনেক কম / যারা বিল্ডিং কোড মেনে চলবেন সেখানে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে / ঝুঁকিপূর্ণ ভবনই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে / ডাউকি ফল্ট ডেঞ্জার জোন / ফল্টের পূর্ব অংশে সাড়ে ৩০০ বছর পরপর বড় ভূমিকম্প হয় / এ কারণে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের দিকে মনোযোগী হতে হবে।
ঝুকি প্রবণ এলাক গুলোর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তৈরী করে তাদের ভুমকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার প্রশিক্ষন দিতে হবে। আর ঝুকি প্রবন এলাকার নারী শিশৃসহ সকল মানুষদের স্বচেতন করে তুলতে হবে।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন
শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]