প্রথম পাতা
কী হচ্ছে, কী হবে, জরুরি অবস্থাই কি সমাধান?
বিশেষ প্রতিনিধি
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার
রাজনীতি এবং অর্থনীতি। দু’টিই খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে বাংলাদেশে। তবে সামনের দিনগুলো আরও অনেক বেশি উত্তেজনাময় ও শ্বাসরুদ্ধকর। অভাবনীয় এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছি আমরা। কথা হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কি আগে কখনো পড়েনি? উত্তর হচ্ছে ‘হ্যা’ এবং ‘না’। অর্থনৈতিক বিপর্যয়। রাজপথে অস্থিরতা, হাঙ্গামা। পর্দার আড়ালে নানা খেলা। এসব কোনোটাই অভিনব নয় বাংলাদেশে। তবে যেটি একেবারেই নতুন তা হচ্ছে, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্যে অবস্থান ও অ্যাকশন।
অর্থনীতির স্বাস্থ্য এমনিতে ভালো নয়। রিজার্ভ কমছে প্রতিদিনই। বিদেশি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। মূল্যস্ফীতির চাপে জেরবার মানুষের জীবন। মধ্য ও নিম্নবিত্ত যে কতোটা কষ্টে আছে তা অনেকেই অনুধাবন করতে অক্ষম। অর্থনীতি দেখভালের দায়িত্ব যাদের তাদের অবশ্য এসব খুব একটা ছুঁয়ে যাচ্ছে না। তারা আছেন নিজেদের মতো। বেশিরভাগ সময়ই আড়ালে। দ্রব্যমূল্যের কোনো প্রভাব তাদের জীবনে হয়তো নেই।
রাজনীতির জন্য অক্টোবর মাসকে বলা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতে দুই পক্ষই অনড়। নানা আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও সরকার যেকোনো মূল্যে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচন কমিশনও সেভাবেই এগুচ্ছে। তবে এর আগে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘোষণা আসতে পারে এমন আলোচনাও রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমেও সংকটের সমাধান খোঁজা হতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন এটি সাংবিধানিক বিকল্প ব্যবস্থা। যদিও আন্তর্জাতিক সমালোচনার বিষয়টি তখনও সামনে আসতে পারে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো প্রতিদিনই কোনো না কোনো কর্মসূচি পালন করছে। যদিও তারা সরকারের ওপর খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছে এমনটা নয়। সমাবেশ ও রোডমার্চের মতো কর্মসূচিই পালিত হচ্ছে এখনো। বিএনপি’র একাধিক সূত্র বলছে, খুব দ্রুতই বাঁকবদলের মতো কর্মসূচি আসছে। বিশেষ করে ঢাকা অচল করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে বিরোধীরা। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এ ধরনের কর্মসূচি পালিত হতে পারে। বিএনপি যেকোনো মূল্যে আগামী মাসেই তাদের আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়। দলটির নেতারা মনে করেন, আন্তর্জাতিকভাবে সরকার এখন অনেকটাই চাপে রয়েছে। তাছাড়া, কার্যকর আন্দোলনের সময়ও ফুরিয়ে আসছে। যদিও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে দলটিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। গত ৫০ দিনেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরাও এ ব্যাপারে আশার কথা শোনাচ্ছেন না।
এ পরিস্থিতিতে তাকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে তৎপরতা চালাচ্ছে পরিবার। এ ব্যাপারে ইতিবাচক অগ্রগতির আশা করছে তারা। সরকার বিরোধী আন্দোলনে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনের মতো দলগুলোও অক্টোবরে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
রাজনীতির প্রধান দুই পক্ষই যখন অনড় তখন আন্তর্জাতিক চাপের বিষয়টিই প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন এবং রাজনীতি কোন পথে যাবে এটি আসলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিই ঠিক করে দেবে। একজন বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশে ১৯৯০, ৯৬ এবং ২০০৭ সালের পরিবর্তনের পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তি মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির পরিস্থিতি যদিও কিছুটা আলাদা। তবে বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অতীতে কখনো বাংলাদেশ নিয়ে এতটা সিরিয়াস দেখা যায়নি। এর বাইরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বড় পরিসরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টেও বাংলাদেশ ইস্যুটি উত্থাপিত হয়েছে। এরআগে খবর বেরিয়েছিল, বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে নীতি পরিবর্তনে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। তবে আদৌ ভারত এ অনুরোধ জানিয়েছিল কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনুরোধ জানালেও তার যে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি, তা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পদক্ষেপেও বোঝা যায়।
অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক শক্তির শক্ত পদক্ষেপ। সরকার এবং বিরোধীদের অনড় অবস্থান। সব মিলিয়ে অনিশ্চিত এক অধ্যায়েই প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। অনেকে এটাও বলছেন, অক্টোবরেই আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে। সে যাই হোক, শেষ পর্যন্ত জনগণই ভুক্তভোগী হতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাতের ইউটিউব শো’তে এক আলোচিত নাম শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। তিনি একটি সহযোগী দৈনিকে লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সব চাবিকাঠি রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে আমাদের ওপর যে ধসটা নামতে যাচ্ছে তা আমাদের জন্য কঠিন সময় বয়ে আনতে পারে। তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়ার যে সংস্কৃতি সরকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে সেটি অনুবর্তী হয়ে হয়তো আমাদের ওপরই পড়বে। আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ যেভাবে স্যাংশনকে উড়িয়ে দিচ্ছেন সেটি কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। মার্কিন স্যাংশন মারাত্মক প্রভাব ফেলবে আমাদের অর্থনীতিতে, আমাদের সংস্কৃতিতে এবং আমাদের রাজনীতিতে। প্রভাব পড়বে আমাদের নির্বাচনী কাঠামোতেও। মুখে যে যাই বলুক না কেন, ইতিমধ্যেই অনেকে ভড়কে গেছেন। অনেকেই পালাবার চেষ্টা করছেন। অনেকেই তাদের রেটোরিকের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখনই আমরা এই ভিসা নীতির প্রভাব লক্ষ্য করছি।
পাঠকের মতামত
সমস্যা রাজনীতিবিদ দের পাশাপাশি আমাদেরও আছে। আমরা মার্কা দেখে ভোট দেই, যোগ্য প্রার্থী দেখে নয়। ফলে আজো আমাদের ভাগ্য এ ভালো ত্যাগী নেতা জোটেনি। যার কারণে স্বাধীনতার এতো বৎসর পড়েও আমাদের এই অবস্থা।
অর্থনীতির স্বাস্থ্য খারাপ। প্রতিদিন রিজার্ভ কমছে, শুরুতে রিজার্ভচুরি ঢেকে রাখা। বিদেশি ঋণ বাড়ছে। মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষ বিপন্ন। মধ্য ও নিম্নবিত্ত লড়াই করছে। রিজার্ভ লুটকারীসহ সব লুটেরা আছে মহাদন্দে, এসবের কোনো প্রভাব তাদের জীবনে থাকার কথা নয়। তারা সেলফি ফেসবুকে কষ্টকে দাবিয়ে রাখতে ব্যস্ত। দুর্বৃত্ত পক্ষ অনড়। সবদিকে তাদের দুর্বৃত্তায়ন ধরা পড়লেও বাঁচার পথ না পেয়ে ধরা খাওয়া বিড়ালের ভূমিকায় আছে। প্রবল প্রতিরোধে জনতাকে কামড় দিয়ে বাঁচার সমাধান খুঁজছে।
Writer is living in the heaven of full.
@মোঃ সাইফুল ইসলামের মন্তব্য ১০০℅ সত্যি।
একমাত্র কোরআন এবং হাদিস ব্যাতিত এমন কোন লেখনী নেই, যা পরিবর্তন করা যাবেনা? সংবিধান লেখা হয় জনগণ এবং দেশের কল্যাণে। অতএব সংবিধান পরিবর্তন করার দ্বারা দেশ এবং জনগণের যদি ভালো হয়। তাহলে তা পরিবর্তন করার দ্বারা কোন কবিরা, ছগিরা, গুনাহ হবে না।
এসব কাল্পনিক লেখা লিখে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না।
সবাই শুধু সংবিধানের ধোহাই দেয়। সংবিধান কার জন্য। ওটা কি আমার সম্পদ । নাকি কোন রাজনৈতিক দলের সম্পদ।
আসলেই জনগণ এবং দেশের জন্য কারোরই মায়া নেই শুধু গদি নিয়ে টানাটানি
আওয়ামীলীগ কখনও পরমত সহিঞ্চু দল ছিল না।
পৃথিবীর কোনো দেশেই স্বৈরাচার কাম্য নয়; চিরস্থায়ীও নয়।
যে সাধারণ রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সরকার, সুযোগ পেলে সবাই লুটপাট করে সেই দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে?
আওয়ামীলীগ দেশটাকে ধ্বংস করেই ছাড়বে।
রিপোর্ট টি খুবই দুর্বল এবং অসম্পুর্ন
পাটা-পূতার ঘষাঘষিতে মরিচের বারোটা বাজে,তেমনি বড় দলগুলোর ঘষাঘষিতে আমাদের বারো বাজিতেছে।সরকারের উচিত এখান থেকে বের হয়ে এসে জনগনকে উদ্ধার করা, যদি সৎ দেশপ্রেমিক হয়ে থাকেন।
সরকার যদি গায়ের জোরে নির্বাচন করে, তা জাতির জন্য ধ্বংসের কারন হয়ে দাড়াবে।অবশ্যই কেয়ার টেকার সরকার দিতে হবে।
লেখাটি শেষ হয়েও হইলো না শেষ ।
সরকার গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চাইলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশকে বাচাত হলে দেশের সব শ্রেণির মানুষকে পথে নামতে হবে।
কলিমুল্লাহ সাহেব বেগম রোকেয়া থাকে উৎখাত হাওয়ার আগে সুনামে পঞ্চমুখ, সুবিধা না পায়ে উল্টা গান গাইছেন! এসব আঁতেলদের আমেরিকা পাঠানো হবে ইনশাআল্লাহ!
মুখে যে যাই বলুক না কেন, ইতিমধ্যেই অনেকে ভড়কে গেছেন। অনেকেই পালাবার চেষ্টা করছেন। অনেকেই তাদের রেটোরিকের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখনই আমরা এই ভিসা নীতির প্রভাব লক্ষ্য করছি।
খুন খারাপি কাম্য নয়,,,আশা বাদী দেশটা ভালো থাকুক,,,,আমরা জনগণের মূল্য আছে কি???????????
অক্টোবর সরকারের পতন শুরু হয়ে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই
রাজায় রাজায় যুদ্ধ, আমরা উলুখরের প্রাণ যায়। আল্লাহ আমাদের কে রক্ষা করুন। আমিন।
Nazmul Ahsan Kalimullah shaheb to VC chilen. Onek sujog subidha nilen govt theke. Corruption korar karone resign korlen. Ta oni hotath keno dig baji dialen.
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]