কলকাতা কথকতা
চদ্রায়ন-তিনের নেপথ্যের এক কারিগরের দুঃখের বারোমাস্যা
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(১ বছর আগে) ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৪০ অপরাহ্ন
চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান-এর ঘুম আর কোনওদিন ভাঙবে কি-না জানা নেই। কিন্তু চন্দ্রযানের সফল উৎক্ষেপণের এক কারিগর দীপক কুমারের দুঃখের বারোমাস্যা যে এখনই কাটছে না তা হলফ করে বলা যায়। কে এই দীপককুমার, চদ্রযানের উৎক্ষেপণের সঙ্গে তার কী বা সম্পর্ক? এই কথা জানতে গেলে আরম্ভর আরম্ভর-সেই দিনগুলিতে যেতে হবে। দীপকের রাঁচির কোম্পানি হিন্দুস্থান হেভি ইলেকট্রিকাল কর্পোরেশন লিমিটেডের দায়িত্ব ছিল চন্দ্রায়ন এর রকেট লঞ্চচিং প্যাডটি বানানোর। দীপক এই কর্মকাণ্ডে এক যোদ্ধা ছিলেন। মাসে আট হাজার টাকা মাইনে হতে পারে দীপকের। কিন্তু, একজন চতুর্থ শ্রেণির সহায়ক হিসেবে তিনি হাত মেলান রকেট উৎক্ষেপণের মঞ্চ রচনার কাজে। এই লঞ্চচিং প্যাড থেকেই পিএসএলভি রকেট বিক্রম ও প্রজ্ঞানকে নিয়ে উড়ে যায় চাঁদের উদ্দেশ্যে। দীপক ফিরে আসেন তার রাঁচির ছোট্ট ঘরে। জানতেন না তার শেষ মাইনে পাওয়া হয়ে গেছে। অজ্ঞাত কারণে রাঁচির হিন্দুস্তান হেভি ইলেকট্রিকাল কর্পোরেশন লিমিটেডে মাইনে দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমে দীপক দাঁতে দাঁত চেপে লড়েছিলেন। তারপর নিজের যা কিছু সম্বল তাই দিয়ে রাঁচির চক-এ একটি ইডলির দোকান দেন। পুঁজি সব নিঃশেষ হয়ে যায় এই দোকান দিতে গিয়ে। দীপকের স্ত্রী রাত জেগে ইডলি বানান। দীপক তা বিক্রি করেন চক-এ। প্রজ্ঞান-বিক্রম ঘুমিয়ে আছে। ঘুম নেই দীপক আর তার স্ত্রীর চোখে। সকালেই ইডলির পসরা তুলে দিতে হবে। কে বলতে পারে কোনও চন্দ্রাহত কবি হয়তো এই ইডলিতে কামড় বসিয়ে লিখবে- পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি!