প্রথম পাতা
নির্বাচনের পুরনো ছক, টানা কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিরোধীরা
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার
অনড় সরকার। আমলে নেয়া হচ্ছে না কোনো চাপই। পরিস্থিতি যাই দাঁড়াক আগে নির্বাচন হোক, পরে দেখা যাবে কী হয়! বিএনপি না আসলেও কিছু যায় আসে না-শাসক দলের অন্দরমহলে আলোচনা এমনই। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার’র দুই শীর্ষ কর্মকর্তার সাজার রায়ও আগামী দিনের রাজনীতির জন্য ইঙ্গিতবহ। এমনিতে আদালতপাড়া ভীষণ ব্যস্ত। প্রতিদিনই শুনানি হচ্ছে বিরোধী নেতাদের মামলার। সাজার রায় মাথায় নিয়ে দেশ ছেড়েছেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। আমান উল্লাহ আমানের ঠাঁই হয়েছে কারাগারে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী শিবিরের কাছে সময় একেবারেই কম। বিএনপি’র সহযোগী তিন সংগঠনের রোডমার্চ শুরু হয়েছে।
গত কয়েকমাস ধরেই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দুনিয়া। যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এর অগ্রগতি নিয়েও নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সর্বশেষ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার ও নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারকে এ ব্যাপারে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। চীন ও রাশিয়া নির্বাচনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করে। এ নিয়ে দেশ দুটি প্রকাশ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছে। জবাব এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকেও। অধিকার’র শীর্ষ কর্মকর্তা আদিলুর রহমান খান শুভ্র এবং নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে দুই বছরের সাজার রায় পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং পশ্চিমা দুনিয়া এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পুরো বিষয়টি সরকারের অনড় পলিসির ইঙ্গিত দেয়। নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে বলেছে, রাজনৈতিক সংকট রাজনীতিবিদদেরই সমাধান করতে হবে। রাজনীতি যখন সংঘাতমুখোর তখন শাসক দলের নীতিনির্ধারকরা এ নিয়ে কী ভাবছেন? উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র বলছে, সরকারি দলের নেতারা মনে করেন তাদের ওপর দেশীয় বা আন্তর্জাতিক বড় কোনো চাপ নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার নির্বাচন করতে সক্ষম। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। এতে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও তাদের কোনো আপত্তি নেই। শাসক দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, নির্বাচন হয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তখন আমেরিকা বা পশ্চিমা দুনিয়া কোনো ব্যবস্থা নিলেও তা মোকাবিলা করা যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধী নেতাদের মামলা নিষ্পত্তির গতি আরও বাড়তে পারে বলে একাধিক সূত্র দাবি করছে।
অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা মনে করেন, রাজপথে আন্দোলন জোরদার করা গেলে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তারা আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়। এজন্য প্রতিনিয়তই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মতবিনিময়ে কর্মসূচির বিষয়ে নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হচ্ছে এবং তারেক রহমানও তার নিজের মতামত জানাচ্ছেন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান মানবজমিনকে বলেন, একদফা দাবিতে বিএনপি’র আন্দোলন চলমান রয়েছে। এখন সবার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্র্মসূচি ঘোষণা করা হবে। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, রোডমার্চ কর্মসূচি আপাতত দুইদিন হবে। এরপরে পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এক নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির যে সমীকরণ এতে সরকারের পক্ষে এবার একতরফা নির্বাচন করা সম্ভব হবে না বলেই বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেন। ২০১৪ সালের পরিস্থিতি এবং বর্তমান পরিস্থিতি এক নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বিএনপি নেতাদের মূল্যায়ন হচ্ছে, তাদের কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন অ্যাকশনে নামে তখন আর মাঠে বিপুল উপস্থিতি থাকছে না। এবার এ বিষয়েই সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী তিন থেকে সাড়ে তিন মাস প্রতিটি দিনই রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ঘিরে আন্তর্জাতিক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের তৎপরতাও স্পষ্ট। রাজনৈতিক দলগুলো চেষ্টা করছে তাদের অবস্থান থেকে সুবিধা নিতে। এটি বলা যায়, ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত
আগত নির্বাচনে সরকার এবং আওয়ামী লীগ অনড়। নির্বাচনকে ঘিরে যদি সহিংস কিছু হলেও তাতে দলের বড় বড় নেতা মন্ত্রী এমপিদের কিছুই যায় আসেনা, কারণ লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুটে এদের পরিবার বিদেশে আইয়্যাশী করছে সহিংসতার আগুন তাদের গায়ে লাগবেনা। প্রশাসনের ভেতরে বাহিরে যদু মধুর সন্তানেরা ছাত্রলীগ যুবলীগ শ্রমিক লীগ ইত্যাদি ইত্যাদি লীগে জড়িয়ে আছে এরা যদি জীবনবাজী রেখে দলকে ক্ষমতায় আনতে পারে ভালই ভাল আর ব্যর্থ হলে এই যদু মধুর সন্তানেরাই অকাতরে মরবে তাতে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী এমপি এবং দলের বড় বড় নেতা এবং তাদের পরিবার ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকবে। এজন্যই দলের শীর্ষ নেতারা যদু মধুর সন্তানদের উদ্দিশ্য করে বলে বেড়ায় যে তোমারা জীবনবাজী রেখে দলকে যদি ক্ষমতা রাখতে ব্যর্থ হাও পরের দিনেই তোমারা পাঁচ লক্ষাধিক অকাতরে মরবে।
বিশ্বের দেশে দেশে স্বৈর শাসকরা বেশ কিছু দিন টিকে থাকে ঠিকই কিন্তু ওই দেশের বারোটা বাজিয়ে তারপর ছাড়ে। দেশের পতন না ঘটা পর্যন্ত দেশের মানুষও জেগে উঠেনা স্বৈরশাসসকদের পতনও ঘটে না।
গুম, খুন, হামলা, মামলা, গ্রেফতার, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, শেয়ার বাজার লুট, ব্যাংক লুট, বাজারের টাকা গায়েব, সরকারী দলের হোমরা চোমরাদের বেগম পাড়ায় বাড়ি- এর মূল কারণ দেশে গণতন্ত্র নেই, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। সরকার অপকর্ম করতে করতে একটি বন্ধুহীন দলে পরিণত হয়েছে। তাদের অপকর্মের খেসারতে দেশও বন্ধুহীন হতে শুরু করেছে। ক্ষমতার নেশায় পাগল আওয়ামীলীগ আবার 2014 কিংবা 2018 এর মতো পুরনো খেলা খেলতে চায়। তাদের পক্ষে আর সেই পুরোনো গেম জেতা সম্ভব নয়। জনতার বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ। যারা জনতার আন্দোলনের বিজয় চায় না, তারা হতাশার বুলি আওড়ায়, জনগণকে হতাশার তুড়ি দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে চায়, যাতে জনগণ রাজপথের অন্দোলনকে শরীক হতে আগ্রহী না হয়। এরাও মূলত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কারিগড়। হতে পারে সরকারই তার পক্ষে হাইপ তোলা আর বিরোধী দলের আন্দেোলনের বিপক্ষে হাতাশা প্রচারের জন্য নিয়োগ করেছে-
মোল্লা সাহেব সবকিছুর একটা শেষ আছে,ভোট নিয়ে জাতির সাথে আর প্রতারণা চলবে না।
প্রধান শক্তি এবং প্রধান বিরোধিদল হচ্ছে বিএনপি।এই বিএনপি এখনো রোডমার্চ এখনো ঘেরাও এখনো সভা সমাবেশ করবে। বিএনপির এই সভা সমাবেশ মিছিলকে কি ক্ষমতা খেকো আওয়ামীলীগ বিন্দুমাত্র মূল্য দেয়? এক কোটি লোক নিয়েও যদি বিএনপি ঢাকা শহরে সভা করে তাতেও কি আওয়ামীলীগ বিএনপিকে তোয়াক্কা করবে? কারণ জনগণের উপস্থিতিকে আওয়ামীলীগ মূল্যায়ণ করেনা কারণ জনগণের ভোট আওয়ামীলীগের দরকার নাই,তাদের দরকার প্রশাসন পুলিশ র্যাব বিচার বিভাগ সরকারী আমলা পাচাটা সাংবাদিক আর তোষামোদি দালাল কিছু পরজীবি বুদ্ধিজীবি সাংস্কৃতিক বুদ্ধিবিক্রেতা। পদলেহী নির্বাচন কমিশন ত আছেই। তাই আন্দোলন যতই কঠোর আর জন উপস্থিতি সম্পন্ন হোক আওয়ামীলীগ ক্ষমতা ছাড়বে না। তাই যেমন কুকুর তেমন মুগুর নিয়ে বিএনপিকে মাঠে নামতে হবে ডু অর ডাই কর্মসূচি নিয়ে এখনি এই মুহুর্তে। বিএনপি এখনো আন্দোলন সফলে সহযোগী প্রধান শক্তি জামায়াতে ইসলামী নিয়ে এখনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বই বিএনপির ভবিষ্যতকে আরো ঘোলাটে এবং অস্পষ্ট করে তুলছে। আগামী ঈদ আগামী পূজা আগামী তিথি চন্দ্র অমাবশ্যা পূর্ণিমার পর আন্দোলন হবে এই অক্টোপাস বিএনপিকে ছাড়ছে কিনা কে জানে?
ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে পরিচালিত বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী করছেন একদিন খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের একই দাবীকে শিশু ও পাগলের প্রলাপ বলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা প্রশ্ন তুলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ অনির্বাচিত কোন ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা তুলে দেয়া।এটা কি আমেরিকায় সম্ভব? এর পরিনতি যে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার চেয়ে অন্য কেউ ভালো জানে না। ২০০৭খ্রি. তিন মাসের ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার পাক্কা দুই বছর দেশ শাসন করেই খুশি ছিলেন না, খালেদা হাসিনা দুই নেত্রিকেই দেশ থেকেই মাইনাস করতে চেয়েছিলেন। মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট এরুপ অনির্বাচিতদের শাসন বাতির করে দিয়েছেন। বিএনপি নির্বাচণে যাবে না এটা অধিকার, গণতন্ত্র বাধ্য করে না কিন্তু নির্বাচন করতে দেবেন না এটার নাম কি জানেনতো? ২০১৪খ্রি থেকে এটাই করে আসছেন বিএনপি। এবারেও করবেন , পরিনতি আগের মতোই হবে।
এই বিএনপি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে করতে, কোন একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখবে ভোট হয়ে গেছে। এদেশে যথেষ্ট মীর জাফর আছে, যাদেরকে নিয়ে ভোট ঠিকই হয়ে যাবে। বিএনপি'কে আপনারা মাত্র দুটি দল জামায়াত এবং পীর সাহেব চরমোনাই'কে সাথে নিয়ে "সুপার সাইক্লোন"'র গতিতে ঝাপিয়ে পড়ুন। দেখবেন দাবার গুটি পাল্টে গেছে।
ব্যাপক গণ-আন্দোলন ছাড়া এই সরকারকে খমতা থেকে নামানো সম্ভব নয়, কারন ক্ষমতায় থাকা ছাড়া তাদের জন্য আর কোন বিকল্প নেই। অপরদিকে বিরোধীদের জন্য তত্তাবধাযক সরকারের অধিনে নির্বাচন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। দেশ এক কঠিন সময় পার করছে এটা বুঝতে কারো বাঁকি নাই। ধন্যবাদ।