শরীর ও মন
মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ অবহেলা নয়
ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
২৪ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবারমলদ্বার বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে আসা রোগীদের প্রায়ই বিষণ্ন ও হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় দেখা যায়। মূলত রক্ত যাওয়ার কারণেই এমনটি হয়। মনে রাখতে হবে মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাওয়া কোনো একটি নির্দিষ্ট রোগ নয় বরং অন্য কোনো রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ। তাই মলদ্বারে রক্ত গেলে তা গুরুত্বসহকারে নিতে হবে। অনেক সময় রক্ত পড়ার পরও শুধু সময়ক্ষেপণ ও অবহেলার জন্য এটি বেশ জটিল রোগের কারণ হতে পারে ও মারাত্মক ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
কারণসমূহ
পাইল্স: সহজ বাংলায় পাইল্স বা অর্শরোগও বলা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসতে পারে। শুরুতে মলের সঙ্গে রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় বা ফিনকি দিয়ে পড়তে পারে। কিছুদিন পর মলদ্বার দিয়ে মাংসপিণ্ডের মতো বের হতে পারে এবং মলদ্বারে জ্বালা-পোড়াও হতে পারে।
এনাল ফিসার: মলদ্বারে বা পায়ুপথে এনাল ফিসার হলে মলদ্বার ফেটে যায় এবং এক্ষেত্রে সেখান থেকে রক্ত আসতে পারে। এই সমস্যায় রক্ত পড়া ছাড়াও মলত্যাগের সময় ও পরে ব্যথা ও জ্বালা-পোড়া হতে পারে।
রেক্টাল পলিপ: এই সমস্যায় মলদ্বার বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে টাটকা বা তাজা রক্ত যায়। মলদ্বারে গোটার মতো বের হতে পারে।
রেক্টাম ক্যান্সার: রেক্টাম ক্যান্সার মলদ্বারে রক্ত যাওয়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই রোগটিকে অনেকে শুরুতে পাইল্স মনে করে অবহেলা করে জটিল করে ফেলেন।
রেক্টাল ফিস্টুলা: পায়ুপথের ভেতরে অনেকগুলো গ্রন্থি থাকে। অনেক সময় এই গ্রন্থিতে সংক্রমণের কারণে মলদ্বারের পাশে ফোঁড়া হয়। এই ফোঁড়া একসময় ফেটে গিয়ে ফিস্টুলা হয়। এই রোগ হলে মলদ্বার বা পাশের অঞ্চল ফুলে যায়, জ্বালা করে, ব্যথা করে, পুঁজ বা রক্তও বের হতে পারে।
রেক্টাল আলসার: রেক্টামে যদি কোনো কারণে ক্ষত তৈরি হয়- এর কারণেও মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসতে পারে ও জ্বালা-পোড়া করতে পারে।
বেসিলারি ডিসেন্ট্রি: এটি এক প্রকার আমাশয়। যাকে আমরা রক্ত আমাশয় নামেই বেশি চিনি। এই সমস্যায় পেটের যন্ত্রণা এবং পায়খানা করার সময় রক্ত বের হয়ে থাকে।
ক্রনস ডিজিজ: এটা মূলত ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ- আইবিডি এর একটি রূপ। এই রোগে মুখ থেকে শুরু করে পায়ুপথ পর্যন্ত যেকোনো স্থান আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগে কেউ আক্রান্ত মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং জ্বালা- পোড়াও হতে পারে।
আলসারেটিভ কোলাইটিস: ডায়রিয়ার সঙ্গে রক্ত আমাশয় হলো আলসারেটিভ কোলাইটিসের প্রধান লক্ষণ। এ ছাড়াও ডাইভার্টিকুলার ডিজিজ, ইন্টাস সাসসেপশান, আঘাতজনিত কারণসহ আরও বিভিন্ন কারণে মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসতে পারে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ) কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। ই-মেইল: [email protected]/ww w.facebook.com/Dr.Mohammed TanvirJalal ফোন: ০১৭১২৯৬৫০০০৯
মন্তব্য করুন
শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন
শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত
৯৫ ভাগ কিশোরীকে টিকা দেয়ার টার্গেট/ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা পেল ১১ শিক্ষার্থী

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]