ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

সুষ্ঠু নির্বাচন চাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন স্বার্থের খোঁজ কেন?

তারিক চয়ন
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবারmzamin

বাংলাদেশের এমন উন্নয়ন অংশীদার, উন্নত গণতন্ত্রের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সরকার চাইলেও তার জনগণের বিপক্ষে গিয়ে কিছু করতে পারে না। দেশটির প্রেসিডেন্টকে যেমন জনপ্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, তেমনি জনপ্রতিনিধিদেরও নাগরিকদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সুতরাং, যে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র এত এত সাহায্য করছে সেই দেশে যেন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেটি নিশ্চিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং জনপ্রতিনিধিরাও নানা চাপে থাকেন। তাই বলা চলে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আহ্বান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান- এগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের জনগণেরই আহ্বান

৩রা আগস্ট দিবাগত রাত, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সে কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা ফিরছি। আমার ঠিক পাশের সিটে এক প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সুদূর মালয়েশিয়া থেকে তিনি প্রিয় মাতৃভূমি, স্বীয় পরিবার, জন্মের পর একটিবারের জন্য কোলে নিতে না পারা কলিজার টুকরা সন্তানের কাছে ফিরছেন। আমার সঙ্গে তার শুরুতেই সখ্য হয়ে গেলেও যেই না তিনি জানলেন আমি সাংবাদিক অমনি তার আন্তরিকতায় ভাটা পড়লো। বাংলাদেশেও আজকাল সাংবাদিক পরিচয় প্রকাশ হলে অনেকে অন্য দৃষ্টিতে তাকান বলে প্রবাসী ভাইটির আচরণের তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আমাকে বিস্মিত করে নি।
তবে, আনন্দের বিষয় হলো কিছুক্ষণ বাদেই তিনি আমার পত্রিকার নাম জানার পর আমার সঙ্গে এটা সেটা বলতে বলতে এক পর্যায়ে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত গল্প, কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ক্রমাগতভাবে দুর্ব্যবহার পাওয়ার অভিজ্ঞতা পর্যন্ত বর্ণনা করলেন। এরইমধ্যে ঐতিহ্যবাহী মালয়েশিয়ান পোশাক পরিহিত কেবিন ক্রু খাবার নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ফিশ ফ্রাই অর ল্যাম্ব? আমি ল্যাম্ব চাইলেও প্রবাসী ভাইটি হাতের ইশারায় ‘না’ বলে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি কিছুই খাবেন না। আমি অবাক হয়ে বললাম, ভাই আপনি খাবেন না? তিনি বেশ স্বাভাবিকভাবে বললেন, কি করবো ভাই, আমি তো ইংরেজি পারি না।

বিজ্ঞাপন
আমি আরও বেশি অবাক হয়ে বললাম, আপনি মাছ নাকি খাসির মাংস খাবেন? তখন তিনি খুশি হয়ে বললেন, খাসি খাবো ভাই। আমি কেবিন ক্রুকে অনুরোধ করলে তিনি ভাইটিকে হাসিমুখে খাবার দিয়ে গেলেন।

প্রবাসী ভাইটির চোখে-মুখে তখন কৃতজ্ঞতার ছাপ। অবাক হয়ে বললেন- ভাই, আপনি ইংরেজি জানেন! সত্যি করে বলেন তো, বিদেশিরা কী বলে? আমিও অবাক হয়ে বললাম, কোন বিদেশিরা? কী বলবে? তিনি বললেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতেরা, মন্ত্রীরা কী বলে নির্বাচন নিয়ে? ওরা কি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়? আমেরিকা কী চায়? এতক্ষণে আমি ভদ্রলোকের প্রশ্নের মানে বুঝলাম। বললাম, হ্যাঁ চায়, ওরা তো বারবারই বলছে। তখন ভাইটি বললেন, না, অনেকে যে কয়, ওদের অন্য চাওয়া আছে। এইসব মুখের কথা সব ভাঁওতাবাজি।

এরপর তার সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ হলো। বিমানও মাটিতে নেমে আসলো। যে যার বাসায় ফিরে গেলাম। প্রায় ১০ দিন মালয়েশিয়া অবস্থানকালে তন্দ্রা ও নিদ্রায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছিল বলে ঢাকায় ফিরে ব্যাপক ক্লান্তি পেয়ে বসে। অনেকেই ফোন করেছিলেন, মেসেজ পাঠিয়েছিলেন- সেগুলো চেক করা হয় নি। মোবাইল হাতে নিতেই দেখি বরেণ্য এক সাংবাদিকের মেসেজ। তিনি  ‘তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ পাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি, শিগগিরই চুক্তি’ এই শিরোনামের একটি নিউজ লিংক পাঠিয়ে লিখেছেন, আমেরিকা নাকি ম্যানেজ হয়ে যাবে? এমনকি এই লেখাটি যখন লিখছি- তখনো একজন উচ্চ শিক্ষিত, স্বনামধন্য ব্যবসায়ী প্রায় একই শিরোনামের একটি ইউটিউব ভিডিও লিংক পাঠিয়ে লিখেছেন, আমেরিকা কি এইসব কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়?

আমি নিশ্চিত, মুখে না বললেও অনেকের মনেই এই প্রশ্ন রয়েছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মধ্যরাতের পার্টিতেও এই আলোচনা হরহামেশাই হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে পরাক্রমশালী বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র বারবার বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে বলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র নেতাকর্মীরাও এই প্রশ্ন তুলছেন যে, দেশটি কি আসলেই সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে নাকি এর পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য বা স্বার্থ রয়েছে? প্রশ্নটি উঠতেই পারে। তবে, সুষ্ঠু নির্বাচন চান না- এমন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে অন্যদের বিভ্রান্ত করতে প্রশ্নটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন কিনা সে প্রশ্ন উঠাটাও স্বাভাবিক।

এখানে লক্ষণীয় যে, যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু শুধু আসন্ন নির্বাচনই নয়, এই সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত আগের দুটি সংসদ নির্বাচনের আগেও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে ছিল বেজায় সোচ্চার, সারা দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান  মোজেনা তো এ নিয়ে দিল্লিও ছুটে গিয়েছিলেন। অনেকে তখন তাকে ‘কাজের বুয়া মর্জিনা’, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য’ বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় গিয়ে হামলার শিকার পর্যন্ত হয়েছিলেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় আগে (২০২২ সালের জানুয়ারি) এই লেখককে দেয়া নিজের বিদায়ী সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করে যা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়’। বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও বাংলাদেশে আগমনের পর থেকে লাগাতারভাবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। অনেকেই মনে করেন, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের নির্বাচনের সময় যদি ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট না থাকতেন তাহলে নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ ভিন্ন হতো। সে যাই হোক, মার্কিন কোম্পানি যেন তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ পায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে, বিষয়টি নিতান্তই হাস্যকর।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি (যেটি নির্দিষ্ট কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নয়) ঘোষণা করলে হঠাৎ করে বাজারে একটি গুজব ডানা মেলে: সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল মুখের কথা, যুক্তরাষ্ট্র আসলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায়। এ বিষয়ে প্রথম কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাম দলের শীর্ষনেতা রাশেদ খান মেনন। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিকে ‘রেজিম চেঞ্জ’ কৌশলের অংশ উল্লেখ করে (১৪ই জুন) তিনি সংসদে দাবি করেন, ‘তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সব কিছু করছে’। এর জবাবে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস মানবজমিন-কে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। বাংলাদেশের কোনো ভূখণ্ডের ওপরই কোনো দাবি নেই যুক্তরাষ্ট্রের। মেননের ওই বক্তব্যের ঠিক ৫ দিন পর (১৯শে জুন) সংসদে দাঁড়িয়ে ১৪ দলীয় জোটের আরেক শীর্ষ নেতা হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমাদের এখন ভাবার সময় এসেছে আমেরিকার হঠাৎ এই অতি উৎসাহের হেতু কী? গণতন্ত্র নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ’! এর দু’দিন পর (২১শে জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ কাউকে লিজ দিলে ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা নেই’।  প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার মানবজমিনের কাছে নিজ দেশের আগের অবস্থান ধরে রেখে বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি। দেশটির কোনো ভূখণ্ডের ওপর আমরা কোনো দাবি করিনি’। এরপর স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকেও একই ধরনের বক্তব্য আসলে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের চাপ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আসলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায়’ গুজবটি আর ধোপে টেকেনি। ইনু- মেননদের উপরোক্ত বক্তব্যগুলো ধোপে না টেকার আরেক কারণ, মানুষ এটা লক্ষ্য করেছে যে, ওইসব বক্তব্যের মাসখানেক পরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন সফর করে এসে ইনু বলেছেন, ‘চীন আমাদের জানিয়েছে আমেরিকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। কিন্তু সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় চীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে আছে’। ইনুর ভাবখানা এমন, ‘আমেরিকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে’ এমন সার্টিফিকেট দেশের জনগণ নয়, দেবে চীন। তবে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করলে যুক্তরাষ্ট্র শাস্তির ঘোষণা করায় দেশটির এমন পদক্ষেপকে স্বাগত না জানিয়ে উল্টো দেশটির বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোও যে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন?

উল্লেখ্য যে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী স্লোগানই ছিল বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। আর কে না জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের সবকিছু না হলেও প্রথম বা অন্যতম ধাপ। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানকে কতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে তা দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টভাবে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সেজন্য আমরা তো অবশ্যই, সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে’।  তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন যাতে এ অঞ্চল এবং সারাবিশ্বের জন্য একটি জোরালো উদাহরণ তৈরি করতে পারে’।

গত ৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এ ধরনের আরও অনেক সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ প্রদান করেছে। করোনাকালে দুই বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত ও চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ যখন দাম দিয়েও (ব্যাটে-বলে না মেলায় কিংবা বনিবনা না হওয়ায়) টিকা পাচ্ছিল না তখন বাংলাদেশকে করোনামুক্ত করতে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ৮২০ ডোজ টিকা (২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি) বিনামূল্যে দিয়েছে দেশটি। এ ছাড়াও করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে প্রায় ১৪ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্মরণ করা যেতে পারে যে, করোনাকালে অন্ন-বস্ত্রের মতোই জরুরি হয়ে পড়েছিল করোনার টিকা। গত বছর ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে শুনেছিলাম, ‘স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস’। ওদিকে, সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ রেমিট্যান্স সরবরাহকারী দেশেও পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের এমন উন্নয়ন অংশীদার, উন্নত গণতন্ত্রের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সরকার চাইলেও তার জনগণের বিপক্ষে গিয়ে কিছু করতে পারে না। দেশটির প্রেসিডেন্টকে যেমন জনপ্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, তেমনি জনপ্রতিনিধিদেরও নাগরিকদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সুতরাং, যে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র এত এত সাহায্য করছে সেই দেশে যেন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেটি নিশ্চিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং জনপ্রতিনিধিরাও নানা চাপে থাকেন। তাই বলা চলে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আহ্বান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান- এগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের জনগণেরই আহ্বান।

কেবল যুক্তরাষ্ট্র কেন, বিশ্বের যেকোনো রাষ্ট্র এমনকি উত্তর কোরিয়াও যদি বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তাহলে সেই আহ্বানকে স্বাগত জানানো বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী সকল মানুষের কর্তব্য বলে মনে করি। কে, কোন উদ্দেশ্যে চাইলো তারচেয়ে বড় প্রশ্ন- আমি কি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই?

পাঠকের মতামত

Good Writeup, Keep Up Your Good Work

Md Humayun Kabir Mia
১১ আগস্ট ২০২৩, শুক্রবার, ৫:৪৮ অপরাহ্ন

লেখা গুলো যিনি লিখেছেন, তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Noyon
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১০:২৭ অপরাহ্ন

Very well written. Thanks Tarique Choyon

Amin Ur Rashid
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

আপনার লেখাটা ভালো লাগলো দোয়া করি সত্যটা মানুষের মধ্যে তুলে ধরবেন।

আরিফ হোসেন
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণ- মূলক নির্বাচন চাই। আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব!

rafiqul islam
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৪:২৮ পূর্বাহ্ন

আমরা যাহা চাই। ওনারাও তাহাই চায়। সমস্যা শুধু লুটেরাদের ও তাদের সহকারীদের। The USA and all the EU countries are trying to save our country from upcoming economic catastrophe which will lead to famine.

mamun
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৪:১৫ পূর্বাহ্ন

সহমত, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন এর কথা প্রত্যক বিবেকবান মানুষেরই কাম্য। এখানে যে বা যারা কষ্ট পায় সুষ্ঠ নির্বাচন এর ব্যাপারে, তারা স্বার্থপর লোভী প্রতারক গোষ্ঠীর মানুষ এবং দলকানা

S M Mafijul Islam
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১:৩১ পূর্বাহ্ন

সহমত, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন এর কথা প্রত্যক বিবেকবান মানুষেরই কাম্য। এখানে যে বা যারা কষ্ট পায় সুষ্ঠ নির্বাচন এর ব্যাপারে, তারা স্বার্থপর লোভী প্রতারক গোষ্ঠীর মানুষ এবং দলকানা

S M Mafijul Islam
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১:৩০ পূর্বাহ্ন

We want free, fair elections

Asif Rahman
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১:১৭ পূর্বাহ্ন

Good question

Amir Ullah
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১:১৫ পূর্বাহ্ন

Well written. Thank you very much. Keep it up.

Mohammad Salah Uddin
৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ১২:২১ পূর্বাহ্ন

We wholeheartedly support US initiatives and efforts to restore democracy in Bangladesh. The US interest may have more dimension than the democracy and fair election in Bangladesh. However, at this time, our immediate interest lies within the boundary of Bangladesh with no focus on regional and global powers.

Shobuj Chowdhury
৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:২৮ অপরাহ্ন

GOOD. BE HAPPY----

M.SHOYEB
৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:২৬ অপরাহ্ন

খোলাখুলি বলতে হয়, আওয়ামী লীগ যে ১৪ দলের জোট করেছে সেখানে চীনপন্থী কমিউনিস্টের আধিক্য বেশি। আর আওয়ামী লীগ নিজে ভারতের সঙ্গে অনন্য উচ্চতার স্বামী-স্ত্রীর প্রেমলীলায় জড়িত। প্রথমেই দেখতে হবে, চীন কি ধরনের রাষ্ট্র। এক শব্দে স্বৈরাচারী বা কর্তৃত্ববাদী। রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক 'রাজা প্রজার'। যেমন- রাজার মর্জিতে রাজ্য চলে। জনগণের মন খুলে কথা বলার স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার চীনে স্বকৃীত নয়। গনতন্ত্র তো অলীক কল্পনা। নির্বাচন, ভোট জনগণের পছন্দের প্রতিনিধি বেচে নেয়ার বিধান, সুযোগ এবং অধিকার নেই। একদল ও এক ব্যক্তির শাসনে পিষ্ট হওয়া চীনের জনগণের নিয়তি। রাশিয়ার অবস্থাও অনুরূপ। তা আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। স্বাধীনতার পরে আমাদের 'বাকশালি শাসন' এরকমই ছিলো। জনগণ যন্ত্রের মতো শাসকরা যেভাবে চালাবে সেভাবে চলতে বাধ্য। চীনের উড়তি ঋণের আগ্রাসন শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া করেছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্টরা চীনকে ডেকে নিয়ে এসেছে ঋণের অর্থে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠবে বলে। পরে দেখা গেছে ঋণের অর্থের নয়ছয় এমনভাবে হয়েছে উন্নয়নের বদলে লুটপাটের মহাসড়কে উঠে পড়েছি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের এতো বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে কিনা জানা নেই। বাংলাদেশ থেকে গত এক দশকে পাচার হয়েছে কোটি কোটি বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন তলানিতে। চীনের ঋণের ফাঁদে দেশকে আটকে দিয়ে লুটপাটের যে মহোৎসব হয়েছিলো, জনগণের গনতান্ত্রিক ভোটের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি সফল হয়, তাহলে জনগণের সরকারকে দিয়ে চীন ঋণের খেলা খেলতে পারবেনা। তাই, আমেরিকা যখন আমাদের জনগণের গনতান্ত্রিক ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে তখন চীনের কাছে তা 'অভ্যন্তরিণ বিষয়ে নাক গলানো'। আর, বামদের অগনতান্ত্রিক নিশিরাতের ভোটের কারবারি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তারা কোরাস ধরছে, আমেরিকা সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায়। কুয়ার ব্যঙ সাগরের খবর তো না জানবারই কথা। আমেরিকার যে ভূমি এখনো খালি পড়ে আছে তা কয়েকটি দেশের সমান। ভারতের সঙ্গে আমাদের 'রাখি বন্ধন', 'রক্তের', ও 'স্বামী-স্ত্রী'র সম্পর্ক নয় বরং আমাদের জনগণের সাথে ভারতের জনগণের পর্যায়ে আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। কিন্তু, ভারত অর্বাচীনের মতো জনগণের সম্পর্ক একটি দলের মধ্যে পুরে দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের গনতান্ত্রিক ভোটের অধিকার হরণ করার কাজে ভারত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বাংলাদেশের জনগণ ভারতকে বিশ্বাস করতে দুবার চিন্তা করে। এজন্য ভারত দায়ী। ভারত ইচ্ছে করলে বাংলাদেশের জনগণের মনে আবার সেই বিশ্বাস অর্জন করতে পারে, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে।

আবুল কাসেম
৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ৯:৫০ অপরাহ্ন

সুযোগের অপব্যবহার হয় এমন ভয় থেকে কোন খবর বা নিবন্ধের বিপরীতে পাঠক হিসেবে ঢালাও মন্তব্য লিখে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার পক্ষে নই বলে বোধ করি এযাবৎকাল পর্যন্ত কোন মন্তব্য কতৃপক্ষিয় সেনসরে পড়েনি। মাঝে মাঝে প্রিয় রাজনীতি বিশ্লেষক ও নিবন্ধকারের পরবর্তী কোন লেখায় অনেকের মন্তব্যের সাথে স্বীয় মন্তব্য নিয়ে নিবন্ধকার কথা বলেছেন। বুঝতে পেরেছিলাম লিখক পাঠক সম্পর্ক কোন কোন বিষয়ে শতভাগ সমচিন্তার সন্মিলন ঘটলে এমন হতে পারে। প্রিয় নিবন্ধকারের এবারের নিবন্ধটিও একই সমান্তরালে গ্রন্থিত দেখে মনে খানিকটা পুলক জাগলেও বিষয়বস্তুর বর্ননায় যত গভীরে গিয়েছি ততই বেদনাহত হয়েছি এ ভেবে যে আজ যারা শুধুমাত্র সংবিধানে গ্রন্থিত অলংঘনীয় আইন ও আদেশের পরিপালনের দোহাই দিচ্ছেন বস্তুত সংবিধানের অন্তর্নিহিত চেতনা নিরন্তর লংঘন হয়ে যাচ্ছে সে খেয়াল রাখার উপলব্ধি কারো নেই। কারন মার্কিন রাজনীতিকগন তাঁদের সকল কর্মকান্ডে তদের সংবিধানের চেতনাকে যুগপৎভাবে আভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিপালনের তাগিদ নিয়েই নেতৃত্বের শপথ নেয়। আমাদের বেলায় এ ব্যপারটি শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ বলে গনতন্ত্র মানবাধিকার সর্বোপরি ন্যায়বোধ চর্চিত হয়না বলেই আজ আমাদের এমন নাজেহাল অবস্থা । তবে প্রিয় নিবন্ধকারের সুষ্ঠ নির্বাচনের প্রশ্নে আমরাও উচ্চকিত কন্ঠে বলি "সুষ্ঠ নির্বাচন চাই"।

মোহাম্মদ হারুন আল রশ
৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ৯:৩৬ অপরাহ্ন

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status