নির্বাচিত কলাম
চলতি পথে
তাজউদ্দীন আহমদ, কেন তাকে মনে রাখবো...
শুভ কিবরিয়া
২৩ জুলাই ২০২৩, রবিবার
১৯৭২ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা সদর (উত্তর) মহকুমার এসডিও হিসেবে পোস্টিং পান শাহরিয়ার জেড ইকবাল। ঢাকা সদর (উত্তর) মহকুমা গাজীপুরের কাপাসিয়া, নরসিংদীর কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। এই মহকুমার আওতায় তখন বেশ ক’জন ভিআইপি’র বসবাস। বিশেষত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মস্থান কাপাসিয়া। স্বভাবতই তৎকালীন সংস্থাপন (আজকের জনপ্রশাসন) মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বলে দেয়া হয়েছে মহকুমায় যোগদানের আগে যেন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যান তিনি। অর্থমন্ত্রীর এপিএসের শরণাপন্ন হলেন নবনিযুক্ত এসডিও। তাকে জানানো হলো ৪ দিন পরে অর্থমন্ত্রী জানাবেন কবে দেখা করবেন। বিষয়টি একটু ভাবিয়ে তুললে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে জানালেন নবনিযুক্ত এসডিও। তাকে এই চারদিন অপেক্ষা করতে বলা হলো। চারদিন পর অর্থমন্ত্রীর কাছে দেখা করার ডাক এলো।
আলাপের শেষে, এসডিও শাহরিয়ার জেড ইকবালকে অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বললেন, ‘আপনার কাজ শুরু করে দিন। যা নিয়ম হয় সেভাবে কাজ করবেন। আমি ঢাকা সদর (উত্তর) মহকুমার উন্নয়ন কাজের জন্য আগ্রহী। মাঝে মাঝে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেবো। যেকোনো দরকারে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমাকে সব সময় নাও পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ফকির শাহাবুদ্দিন (কাপাসিয়ার অধিবাসী, বাংলাদেশের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল) সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
তাজউদ্দীন আহমদ এরপর তাকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, ‘আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন আমার পরিচয় দিয়ে কোনো কাজে বা তদবিরে যদি আসে, আপনি সেটা আইনসম্মত যদি মনেও করেন তবুও আমাকে ফোন করবেন। আমিই আপনাকে বলে দেবো কাজটি করবেন কি করবেন না? আমার আত্মীয় বলে তাদের কোনো কিছুতেই অগ্রাধিকার দেবেন না।’
এসব তথ্য সংগৃহীত হয়েছে শাহরিয়ার জেড ইকবালের অগ্রন্থিত এক সাক্ষাৎকার থেকে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাজউদ্দীন আহমদের গ্রামের বাড়িটি ছিল পাকিস্তানি আর্মির ক্যাম্প। গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামের এই বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি আর্মিরা তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো গ্রামের সেই পোড়া বাড়িতে গিয়েছেন তিনি। তাকে দেখতে এসেছেন গ্রামের অনেক মানুষ। এদের মধ্যে কয়েকজন তাকে বললেন, আর চিন্তা কি, তাজউদ্দীন ভাইসাবের পোড়া ভিটায় নতুন বাড়ি উঠবে। এই কথার উত্তরে তাজউদ্দীন আহমদ বললেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে না, ততদিন এই ভিটায় বাড়ি উঠবে না। তিনি আরও বললেন, মনে রাখবেন, আমি শুধু এই এলাকার মন্ত্রী না। আমি সমস্ত বাংলাদেশের। এখন আপনাদের দায়িত্ব আগের চাইতে অনেক বেশি। কারণ সমস্ত দেশের মানুষ আপনাদের কাপাসিয়ার এই মন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকবে। আমি স্বার্থপরের মতো আমার এলাকার উন্নয়নের কাজে হাত দিতে পারি না। আমাকে সমস্ত দেশে সবকিছু সমান ভাগ করে দিতে হবে।
এই কথা বলার পরে, তিনি সহজ ভাষায় উদাহরণ টেনে বললেন, বাড়িতে যখন অতিথি-মেহমান আসে তখন আমরা কি করি? তাকে ভালো করে আদর যত্ন করি, তার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করি। তাকে সবচাইতে ভালো জিনিসটা খেতে দেই। তারপর যা থাকে নিজেরা ভাগ করে খাই। আপনারাও সমস্ত বাংলাদেশকে তেমনি ভাবে দেখেন। আসুন আগে আমরা সবাই মিলে দেশ গড়ি, তখন এই এলাকা আর এমনিতেই পিছিয়ে থাকবে না।
উপরের এসব কাহিনী বিভিন্ন সময়ের। তবে, কাহিনীগুলো একজনকে নিয়েই। তিনি বাংলাদেশের যুদ্ধদিনের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ (১৯২৫-১৯৭৫)। পুরোদস্তুর গণতান্ত্রিক, মানবিক, কল্যাণমুখী অর্থনীতির আকাক্সক্ষী, দেশপ্রেমিক, সৎ তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক জীবন কখনই সরল রেখায় চলেনি। মুক্তিযুদ্ধকালে তাকে লড়তে হয়েছিল একদল স্বার্থান্বেষী, সুবিধাবাদী, অগণতান্ত্রিক, অনাদর্শিক মানুষের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বাধীন দেশেও তিনি রেহাই পান নাই। তার নীতিনিষ্ঠ, আদর্শিক রাজনীতির কারণে দেশের অভ্যন্তরের ও আন্তর্জাতিক শত্রুদের বহুবিধ আক্রমণের শিকার হতে হয় তাকে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ১৯৭১ সালে যে দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি নেতৃত্ব দেন, সেই স্বাধীন দেশেই ১৯৭৪ সালে তাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়
এটা এখন অনেকেরই জানা যে, যুদ্ধদিনের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের হস্তাক্ষর ছিল খুবই সুন্দর। ইংরেজি ও বাংলা দু’ভাষাতেই খুব যত্ন সহকারে পরিপাটিভাবে লিখতেন তিনি। দাপ্তরিক ফাইলেও তার অসাধারণ সুন্দর হস্তাক্ষরের দেখা মিলতো। খুব যত্ন সহকারে ফাইল পড়তেন, দেখতেন, মন্তব্য লিখতেন। ফাইল কখনো ফেলে রাখতেন না।
স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন অফিসে নানারকম লোকজনের ভিড় থাকতো। ফলে লোকজনের ভিড় এড়িয়ে দাপ্তরিক ফাইলে মনোযোগ দিতে কখনো কখনো তিনি নিজের অফিস ছেড়ে সংসদ ভবনে তার জন্য সংরক্ষিত অফিসে চলে যেতেন। সেখানেই মনোযোগ সহকারে, নির্বিঘ্নে দাপ্তরিক ফাইলের কাজ করতেন। কখনো ছুটির দিনে, কখনো অফিস সময়ের পরেও ফাইলের কাজ করতেন। অসম্ভব পরিশ্রম করতেন এই মানুষটি।
অর্থমন্ত্রণলায়ে তার রুমে বিনা অনুমতিতে হঠাৎ করে কেউ ঢুকতে পারতেন না। একসঙ্গে দু’জন মানুষকে উনি কখনো রুমে ডাকতেন না।

একবার তিনি সচিবালয়ে তার দপ্তরে মগ্ন হয়ে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বের কাজ করছেন। অফিসাররা প্রশ্নের উত্তরগুলো তাকে দেখিয়ে অ্যাপ্রুভ করে নিচ্ছেন। হঠাৎ করে রুমের আলগানো দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়লেন তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান। উনি রুমে ঢুকেই বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম তাজউদ্দীন ভাই।’ ফাইলে মগ্ন তাজউদ্দীন আহমদের কাজে ব্যাঘাত ঘটলো। হাতের ফাইলটা পাশে ছুড়ে দিয়ে তিনি চিৎকার করে উঠলেন, ‘দিলেন তো আমার অ্যাটেনশনটা ডাইভার্ট করে। আপনি জানেন ফাইন্যান্স মিনিস্টারদের কতো চাপের মধ্যে থাকতে হয়।’
কাজে ব্যাঘাত ঘটলে মন্ত্রীদের মুখের ওপরও সরাসরি কথা বলতে দ্বিধা করতেন না তাজউদ্দীন আহমদ। তার ব্যক্তিগত অফিসারদের বলা ছিল, যদি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া অফিস আওয়ারে আমার রুমে কেউ ঢুকতে চায়, তাকে কখনই ঢুকতে দেবেন না।
এসব তথ্য সংগৃহীত হয়েছে অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তাজউদ্দীন আহমদের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মাযহারুল হকের অগ্রন্থিত এক সাক্ষাৎকার থেকে।
‘বাই নেচার হি ওয়াজ অ্যা জেন্টলম্যান, বাই নেচার হি ওয়াজ অ্যা ডেমোক্র্যাট। বঙ্গবন্ধুকে (তখনো বঙ্গবন্ধু হননি) ১৯৬৮ সালের ১৮ই জানুয়ারি আর্মিরা রাতে জেলগেট হতে ধরে নিয়ে গেল। ক’দিন পরে আমাকে পূর্ববর্তী ১০ সেলের ৭নং রুমে আনা হয়। তখন থেকেই তাজউদ্দীন আমি-সার্বক্ষণিক সঙ্গী, অন্যরাও ছিলেন। উনি খুব লেখাপড়া করতেন। খুব ডিসিপ্লিনড লোক ছিলেন। হাসির গল্প বলি, আমাদের সামনে একটা লন ছিল। লনে রশি ঝুলানো থাকতো। গোসল করে লুঙ্গি গামছা আমরা এতে শুকাতে দিতাম। আমি এমনি এতে কাপড় নেড়ে দিতাম। তাজউদ্দীন প্রত্যেকদিন গোসলের পর লুঙ্গি গামছা দড়িতে এমনভাবে নেড়ে দিতেন যাতে চারমাথা সমান হয় এবং শুকানোর পরে ইস্ত্রি করার মতো দেখায়। উনি আমারটাও ওইভাবে ঠিক করে দিতেন। শেষে আমি এমনি দড়িতে ভেজা গামছা লুঙ্গি রেখে আসতাম আর উনি অভ্যাসমতো প্রতিদিনই আমারটাও ঠিক করে উনার মতো করে নেড়ে দিতেন।’
রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল মমিনের তাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে এই স্মৃতিচারণের কথা আছে ‘তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং তারপর’ বইয়ে। বইটির লেখক কামাল হোসেন, প্রকাশক অঙ্কুর প্রকাশনী।
এক সকালে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (তাজউদ্দীন আহমদ) ভীষণ অপ্রসন্ন মেজাজে দেখলাম। মনে হলো, সারা রাত ভালোভাবে ঘুমাতে পারেননি। এমনিতে তিনি অনেক রাত পর্যন্ত জেগে কাজ করেন। তবে এদিন মনে হচ্ছিল, কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে। সাহস করে আমি জানতে চাইলাম, কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা। ‘সমস্যা’, তিনি তীক্ষè স্বরে পাল্টা প্রশ্ন করলেন। ‘আপনি কি কিছু জানেন না?’ ‘না, স্যার’, আমি ভীত স্বরে জবাব দিলাম। আমার ধারণা হয়েছিল, পাকিস্তানি বাহিনী কোনো জায়গায় ভারী বোমাবর্ষণ করেছে অথবা এমন কোনো গুরুতর ঘটনা ঘটেছে, যা আমার জানা নেই। ‘মনে হচ্ছে আশেপাশে কী হচ্ছে, সে সম্পর্কে আপনি একেবারেই কোনো খবর রাখেন না।’ বললেন প্রধানমন্ত্রী। একটু থেমে আরও বললেন, ‘রফিক চৌধুরী সাহেবের মেয়েকে তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছে ক্যাপ্টেন ডালিম। আর মেয়ের বাবাকে আমার বোঝাতে হয়েছে এই বিয়ে মেনে নেয়ার জন্য। প্রায় সারারাত আমি রফিক ভাইকে বুঝিয়েছি যে তিনি যেন নবদম্পতিকে দোয়া করেন। এখন আপনি বলুন, আমি কি যুদ্ধ করতে এসেছি, না বিয়ের ঘটকালি?’
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আবেগ ও সমস্যার এই কথা লিখেছেন তার সে সময়ের একান্ত সচিব ফারুক আজিজ খান, ‘বসন্ত ১৯৭১’ নামের বইয়ে।
উপরের এসব কাহিনী বিভিন্ন সময়ের। তবে, কাহিনীগুলো একজনকে নিয়েই। তিনি বাংলাদেশের যুদ্ধদিনের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ (১৯২৫-১৯৭৫)। পুরোদস্তুর গণতান্ত্রিক, মানবিক, কল্যাণমুখী অর্থনীতির আকাক্সক্ষী, দেশপ্রেমিক, সৎ তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক জীবন কখনই সরল রেখায় চলেনি। মুক্তিযুদ্ধকালে তাকে লড়তে হয়েছিল একদল স্বার্থান্বেষী, সুবিধাবাদী, অগণতান্ত্রিক, অনাদর্শিক মানুষের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বাধীন দেশেও তিনি রেহাই পান নাই। তার নীতিনিষ্ঠ, আদর্শিক রাজনীতির কারণে দেশের অভ্যন্তরের ও আন্তর্জাতিক শত্রুদের বহুবিধ আক্রমণের শিকার হতে হয় তাকে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ১৯৭১ সালে যে দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি নেতৃত্ব দেন, সেই স্বাধীন দেশেই ১৯৭৪ সালে তাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ৩রা নভেম্বর ১৯৭৫ জেলখানায় অন্য তিনজন রাজনৈতিক সহকর্মীর সঙ্গে তাকেও খুন করা হয়। মাত্র ৫০ বছরের স্বল্পায়ু জীবনেও তাজউদ্দীন আহমদ এক আদর্শিক, নীতিবান, সাফল্যগাঁথা, অনুকরণীয় জীবন রেখে যান।
২৩শে জুলাই জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে সে কারণেই এই রাষ্ট্রনৈতিক, নীতিবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাজউদ্দীন আহমদকে আমাদের মনে রাখতে হবে। স্মরণ করতে হবে গভীরতর ভালোবাসায়।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
পাঠকের মতামত
জনাব তাজউদ্দীন আহমদ সঠিক মূল্যায়ন করতে গেলে শেখ সাহেবের নামে চালিয়ে দেওয়া অনেক ইতিহাস নতুন ভাবে লিখতে হবে। শেখ সাহেব কোন ছোট হয়ে যাবে কিনা এই ভয়ে আঃলীগ কখনো তাজউদ্দীন সাহেবের ভূমিকার সঠিক করেনি।
এই মহান ব্যক্তি যে সময়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লিখা থাকবে।তিনি এক জাতির বিপর্যস্ত মহুর্তে নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।বংগ বন্ধুর অবর্তমানে নানা মত, নানা পথের মানুষকে একই ছাতার নিছে সংগঠিত করে মুক্তি যুদ্ব করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।স্বাধীনতার পুর্বে বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে বৃহত শক্তি রাশিয়া,ভারত ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে বুঝাপাড়া করে মুক্তি যুদ্বকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হন।আমরা এই বীর শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
শুভ কিবরিয়া মহোদয়ের এই নিবন্ধটি আরো শুভতাৎপর্যে বিকোশিত হতো যদি তিনি প্রয়াত এই রাষ্ট্রনীতিকের উপর তাঁর কন্যা সিমিন হোসেন সম্পাদিত "আলোকের অনন্তধারা"থেকে দু'চারটি ঘটনার উধৃতি দিতেন। নিবন্ধটি রাজনীতিক বনে যাওয়া বনিক সপ্রদায়ের নিকট অলীক কল্প কাহিনী হলেও তরুন ও উদীয়মান রাজনীতিকদের জন্য চিন্তার খোরাক জোগাবে।
আমাদের দুর্ভাগ্য আওয়ামী লীগের ১৪ বছরের টানা শাসনেও তাজউদ্দিন সাহেবের কোন মূল্যায়ন হলো না। তিনি রয়ে গেলেন অবগ্গা এবং অবহেলার শিকার। স্বাধীনতার সব কৃতিত্ব চলে গেল একজনের দিকে । বঙ্গবন্ধু ২৫শে মার্চ রাতে আটক হবার আগে মুক্তিযুদ্ধ কিভাবে এবং কার নেতৃত্বে পরিচালিত হবে সেরকম কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়ে যান নি। তাজউদ্দিন সাহেব স্বপ্রনোদিত হয়েই সেদিন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব নিজের হাতে নিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের এবং ছাত্রলীগের একাংশের তার বিরোধী অবস্থান এবং তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে তিনি আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস বর্তমান ইতিহাস বিকৃতি থেকে আমরা একদিন উদ্ধার পাবো এবং তাজউদ্দিন সাহেবের সঠিক মূল্যায়ন এদেশে একদিন হবেই । তার জন্মদিনে তাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
মন্তব্য করুন
নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন
নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত
বেহুদা প্যাঁচাল/ অর্থমন্ত্রীর এত বুদ্ধি!
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ বাংলাদেশের অর্থ পাচার, ভারতের আনন্দবাজার, ইউরোপের কালো তালিকা
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ নির্বাচন ঘিরে একই প্রশ্ন, আমেরিকা কি ম্যানেজ হয়ে যাবে?
আন্তর্জাতিক/ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এবং পশ্চিমাদের অবস্থান
সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ/ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, সরকারের নীরবতা, অ্যাকশনে অন্যরাও?

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]