ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

সফলতায় অটিজম কোনো বাধা নয়

ডা. এমএ হক, পিএইচডি
৯ জুলাই ২০২৩, রবিবার
mzamin

বিশেষজ্ঞদের মতে, “অটিজম হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশজনিত সমস্যা। শিশুর জন্মের প্রথম ৩ বছরের মধ্যে অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পায়। অটিজম এমন একটি বিকাশজনিত সমস্যা, আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য মানুষ বা বিষয়ের প্রতি কোনো আগ্রহ থাকে না বললেই চলে। অটিস্টিক শিশু মানে বোকা বা অমেধাবী নয়। অটিস্টিক শিশুরা স্কুল-কলেজ এমনকি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে সফলতা অর্জন করার যোগ্যতা রাখে। বিখ্যাত সংগীতশিল্পী লেডি হাক এবং ডারিল হান্না, কার্টুন ছবির আবিষ্কারক সাতসি তাহেরিসহ বহু বিখ্যাত ব্যক্তি অটিস্টিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ছিলেন। তাদের সফলতায় অটিজম কোনো বাধা হতে পারেনি।” (সূত্র- অটিজম: সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা; রওশন হাসান; নাগরিক সংবাদ; ১২ই জানুয়ারি-২০১৮)

উপরোক্ত তথ্যের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখি প্রবন্ধক বলেছেন, “বহু বিখ্যাত ব্যক্তি অটিস্টিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ছিলেন। তাদের সফলতায় অটিজম কোনো বাধা হতে পারেনি।” তাহলে আমরা কেন ভাবছি যে, শিশু অটিজম হলে সব শেষ হয়ে যায়। শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে পারলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ঘটতে শুরু করে। তখন শিশু অটিজম থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। আমরা উপরোক্ত তথ্য সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, অটিজম শিশুও জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারে। আমিও আমার প্র্যাকটিস জীবনে এর সত্যতা পেয়েছি এবং পাচ্ছি। অনেক শিশু স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরেছে। ফলে, তাদের পরিবার এর সুফল ভোগ করছে।

এমন অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা শুনেছেন যে, অটিজম ভালো হয় না। এজন্য তারা কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করেন না। ভালো শব্দটি আপেক্ষিক। আমরা প্রতিনিয়ত যাদের  সঙ্গে চলাফেরা, সমাজ-সামাজিকতা করছি তারা সকলেই কি এক রকম? নিশ্চয় নয়। প্রতিটি মানুষেরই নিজেস্ব স্বকীয়তা রয়েছে। আমি একথা বলছি না যে এরা রকেট বিজ্ঞানী বা পাইলট হবে এবং এটা অভিভাবকেরা আশাও করেন না। আমি একথা বলছি যে, তারা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করার মতো উপযোগী হবে। আমি অনেককেই দেখেছি তারা স্বাভাবিক স্কুলে লেখাপড়া করছে, তাদেরকে দেখলে অল্প সময়ে কেউ বুঝতে পারে না  যে, সে কোনো এক সময় অটিজম শিশু ছিল। তবে, অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে শিশুর বয়স যত বৃদ্ধি পাবে তার উন্নতি তত ধীরে ঘটবে। এজন্য অযথা সময়ক্ষেপণ না করে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।

সবশেষে, আমাদের অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, অটিস্টিক শিশু মানে বোকা বা অমেধাবী নয়। অভিভাবকদের সচেতনতায় এই পৃথিবীতে অনেক অটিজম ব্যক্তি জীবনে সফলতা পেয়েছেন। তাদের সফলতায় অটিজম কোনো বাধা হতে পারেনি। আমাদের সন্তানদের সফলতায়ও অটিজম যেন বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে-এ বিষয়ে প্রতিটি অভিভাবকেই সচেতন থাকতে হবে।
লেখক: ডা. এমএ হক, পিএইচডি; এমফিল; ডিএইচএমএস। চিকিৎসক ও গবেষক (ক্রনিক ডিজিজ অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার)।

চেম্বার: ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর ১৪৪ গ্রিন রোড, পান্থপথ, ঢাকা। মোবাইল: ০১৭১২-৪৫০৩১০

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status