ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

চার্জার ফ্যান, বাতির জন্য ছুটছে সবাই

স্টাফ রিপোর্টার
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। সঙ্গে যোগ হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক ঘণ্টা করে থাকছে না বিদ্যুৎ। গরমে কষ্ট হচ্ছে দিনে রাতে। এমন পরিস্থিতিতে একটু স্বস্তি পেতে অনেকে ছুটছেন চার্জার ফ্যান, বাতির দোকানে। কিন্তু ফ্যানের চাহিদামাফিক সরবরাহ করতে পারছেন না বিক্রেতারা। এমনকি অগ্রিম অর্ডার দিয়েও মিলছে না ফ্যান। চার্জার ফ্যানের মতো চাহিদা বেড়েছে চার্জার লাইটেরও। বিক্রেতারা বলছেন, গত এক সপ্তাহে দুই থেকে তিনগুণ বেশি বিক্রি হচ্ছে ফ্যান-লাইট। ফার্মগেটের তৃতীয়  তলায় ইলেকট্রনিক পণ্যের মার্কেট।

বিজ্ঞাপন
সেখানে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। সরজমিন দেখা যায়, বাজারে মিলছে হরেক রকমের ফ্যান। এমনকি এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকাতেও মিলছে চার্জার ফ্যান। কিন্তু এসবে আস্থা রাখতে পারছেন না ক্রেতারা। এসব ফ্যানে বাতাস মিলছে খুবই কম। মজবুতও নয় ফ্যানের বডি। নেই ওয়ারেন্টি। মধ্য দুপুরে স্ত্রীসহ চার্জার ফ্যান খুঁজছিলেন কুশল মজুমদার। তিনি বলেন, গরমে অতিষ্ঠ। বেতন হলো তাই ভাবলাম একটা ফ্যান নিই। অনেক কম দামেরও ফ্যান আছে। আমি যে ব্র্যান্ডের ফ্যান নিতে চাচ্ছিলাম সেটার শোরুম প্রাইস ৪ হাজার ৩শ’ টাকা। এখানে ৪ হাজার টাকা রাখবে বললো। কিন্তু ফ্যান আজ দিতে পারবে না। ৩ দিন পর নিতে বলেছে। 

সিফাত ইলেকট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিলো তার সঙ্গে। দোকানদার বরকত উল্লাহ বলেন, ব্র্যান্ডের ফ্যানগুলো চাহিদামতো পাচ্ছি না আমরা। ২৪টা ফ্যানের অর্ডার দিয়েছিলাম গত বৃহস্পতিবার। শনিবার আমাকে দিয়ে গেল ১২টা। এরপর সেদিনই বিক্রি হয়েছে ৮টা ফ্যান। আর রোববার সকালে সব বিক্রি শেষ।

একই অবস্থা দেখা যায় অন্য দোকানগুলোতেও। সাদেক স্মার্ট ইলেকট্রনিক্সে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক ক্রেতা দেখছিলেন চার্জার ফ্যান। কবির হোসেন নামের একজন বলেন, তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে ফ্যান কিনতে আসলাম। কিন্তু দামে যেগুলো তুলনামূলক কম সেগুলো কিনতে আগ্রহ পাচ্ছি না। ব্র্যান্ডের যেগুলো ফ্যান এগুলো কিনতে গুনতে হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। যেটা কেনা একটু কষ্টসাধ্য। এই দোকানের ম্যানেজার বলেন, দাম বেশি হলেও সবাই ব্র্যা-ের পণ্য খুঁজছে। কিন্তু আমরা প্রয়োজনমাফিক সরবরাহ করতে পারছি না। তিনি একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে আমার দোকানে ৫০টি ফ্যান থাকলে আমার বিশ্বাস সবই বিক্রি হয়ে যাবে। কিন্তু আমি ডিস্ট্রিবিউটরকে ফোন দিয়ে তিন সেট (এক সেটে থাকে ১২টি ফ্যান) ফ্যানের কথা বলি। তারা আমাকে আজ এক সেট ফ্যান দিয়ে যায়। আমরা সাধারণত বাকিতে ফ্যান নিয়ে আসি। কিন্তু এখন নগদ অর্থে ফ্যান নিতে চাইলেও তারা দিতে পারেনি।

দেশীয় ব্র্যান্ডের পান্থপথ শো-রুমে গিয়ে তাদের চার্জার ফ্যান চাইলে জানান, বর্তমানে তাদের সংগ্রহে নেই। নাম ও ফোন নম্বর লিখে দিয়ে যেতে বলেন এবং ২/৩ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়া হবে বলে জানান। পরের দিন সেই দোকানে গেলে দেখা যায়, দুটি ফ্যান ডিসপ্লেতে আছে। কিন্তু জানানো হয়, এগুলো বিক্রি হয়ে গেছে, ফ্যান চাইলে নাম এন্ট্রি করতে হবে। 
ফার্মগেটে অবস্থিত আরেকটি শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, নেই কোনো চার্জার ফ্যান। যারাই আসছেন তাদের বলা হয়েছে, চাইলে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে দিয়ে গেলে ফোন করে জানানো হবে।

রাজধানীর কাওরান বাজারেও দেখা যায় একই চিত্র। ১ থেকে দেড় হাজার টাকায় মিলছে বিভিন্ন ফ্যান। সেখানেও মিলছে না ব্র্যান্ডের ফ্যান। মিরপুর-১ এর মুক্তবাংলা মার্কেটের নোয়াখালী ইলেক্ট্রনিক্সের কর্ণধার মিজানুর রহমান বলেন, ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান সেভাবে পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি পাইকারি কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এজন্যই দাম বাড়তি রাখতে হচ্ছে। কোন ফ্যানগুলোর দাম বেশি জানতে চাইলে তিনি বললেন, বিদেশ থেকে যেগুলো আসছে সেগুলো দাম বাড়তি। গত দু’দিনের ব্যবধানে কোনো কোনো চার্জার ফ্যানের দাম বেড়েছে আড়াই থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। নবাবপুর, গুলিস্তান থেকে পাইকারি নিয়ে আসি। সেখানেও চাহিদামাফিক পাচ্ছি না। ৫০ পিস চার্জার ফ্যান কিনতে গিয়ে পাচ্ছি ৫ পিস।

শহিদুল ইসলামের মতো আরও কয়েকজন এসেছেন চার্জার ফ্যান কিনতে। মুক্তবাংলার বেশ কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানেও একই চিত্র দেখা গেল। এসএস ইলেকট্রনিক্সের বিক্রেতা সজিব জানালেন, অনেকেই এসে ঘুরে যাচ্ছেন। চার্জার ফ্যান দিতে পারছি না। গত এক সপ্তাহ ধরে চার্জার ফ্যানের ক্রেতা বেড়ে গেছে। কাওরান বাজারে পাইকারি ইলেকট্রনিক্সের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চার্জার লাইট কিনছেন অনেকেই। কয়েক ধরনের লাইট বিক্রি হচ্ছে। সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে হারিকেন বাতি। এগুলো ৮০/৯০ টাকায় কিনে দোকানদাররা বিক্রি করছেন। এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চার্জার লাইট। সর্বাধিক বিক্রি হওয়া লাইটের মূল্য ১৫০/১৮০ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের লাইটগুলো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। আর আরেক ধরনের লাইটও ক্রেতারা কিনছেন, এগুলোকে বলা হচ্ছে অটো রিচার্জএবল লাইট। এগুলো ৩ ধরনের মানের আছে। যেগুলো বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা, ৫০০-৫৫০ টাকা ও ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, এই কয়েকদিনে লোডশেডিং শুরু হবার পর থেকে চার্জার লাইটের চাহিদা বেড়েছে। এমনকি গত এক সপ্তাহে দুই থেকে তিনগুণ বেশি বিক্রি হয়েছে।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status