প্রথম পাতা
আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত হচ্ছে
মো. আল-আমিন
১২ মে ২০২৫, সোমবার
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের দাবির মুখে শনিবার এই সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত হতে পারে। এমন ইঙ্গিত দিয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ গতকাল মানবজমিনকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এক্ষেত্রে আমি যেটা মনে করি যে, দলটিকে সাময়িকভাবে ব্যান (নিষিদ্ধ) করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত মত হলো-যেহেতু সাময়িকভাবে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেহেতু সরকারের পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে (নিবন্ধন) সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা যেতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে সরকারি আদেশ হাতে পাওয়ার পর এই রাজনৈতিক দলটির নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। গতকাল তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত যখন আমরা অফিসিয়ালি পাবো, গেজেট হোক বা সার্কুলার হোক, যেভাবেই হোক পাবো তো। ওইটা পাওয়ার পরে কালকে (সোমবার) বসে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিবো। সোমবার নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, আমি তো এককভাবে সিদ্ধান্ত নেই না। আমরা সবাই একত্রে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিবো। কালকে (আজ) যদি এসেও হয়ে যায়, তো কালকেই আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবো।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল বা নিষিদ্ধ কোন আইনে: নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ ১৯৭২-এর ৯০এইচ (১) (বি) ধারার বিধান অনুযায়ী, নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে সেই দলের নিবন্ধন বাতিল করা যাবে। অন্যদিকে পলিটিক্যাল পার্টি অধ্যাদেশ- ১৯৭৮ এর বিধান অনুযায়ী, রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকাণ্ড যদি বাতিল করতে হয়, তাহলে হাইকোর্টের কাছে রেফারেন্স আকারে পাঠাতে হয়-যা হাইকোর্ট মামলার মতো করে দুই পক্ষের শুনানি করেন। বিধিমালা অনুযায়ী, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ব্যত্যয়, সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার মতো কতগুলো নির্দিষ্ট বিষয়ে যদি সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলেই হাইকোর্টে রেফারেন্স আকারে পাঠানো যায়। এরপর শুনানি করে যে সিদ্ধান্ত দেন, সেটিই চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করে পরবর্তীতে সরকার তা প্রচার করে।