ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না- প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
৪ জুন ২০২৩, রবিবার
mzamin

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নিজের পায়ে চলবো। কারো মুখাপেক্ষি হয়ে না। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে ও নিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নাই। ২০ ঘণ্টা প্লেন জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না  না। গতকাল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে অনেক মহাসাগর আছে, মহাদেশ আছে। সেই মহাদেশে আমরা যাতায়াত করবো, বন্ধুত্ব করবো। আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে। আরও উন্নত হবে। আরও চাঙ্গা হবে। যারা ভোট চুরি করে, ভোট নিয়ে যারা খেলছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলছে, কানাডার হাইকোর্ট যাদের সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন
আমি তাদের (আমেরিকা) বলবো যে, তাদের দিকে যেন নজর দেয়। দুর্নীতির দায়ে এই আমেরিকাই তারেক জিয়াকে ভিসা দেয়নি। আর তারাই এখন আমেরিকার কাছে ধরনা দেয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ কোথায় সেটা কিন্তু আমরা ভালো করে জানি। আর সেটা মাথায় রেখে কাজ করেই আজকে দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রয়েছে বলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। স্থিতিশীলতা না থাকলে আওয়ামী লীগ সরকার না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। এটা বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, জনগণের প্রতি আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তারা জানে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়। তারা নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নত জীবন পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল দেশ পেয়েছে। নৌকায় ভোট দেয়ায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সবকিছুর উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে সকলের কাজ করে। আওয়ামী লীগ ভোগে বিশ্বাস করে না, ত্যাগ করতে এসেছে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে সেভাবে কাজ করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারে কান দেবেন না। 

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারবো বলেই আমরা এই বাজেট দিয়েছি। অথচ কিছু জ্ঞানী-গুণী টকশোতে ফাটায়ে ফেলছে- আমরা নাকি এটি বাস্তবায়ন করতে পারবো না। প্রতিবারই বাজেটের পর তারা এর বিরোধিতা করে। এবারও সেটা করছে। কিন্তু আমরা মানুষের উন্নয়নে আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। আমরা এর মধ্যেও দেশের অর্থনীতি ঠিক রেখেছি। যার কারণে করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরও বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। এটা কঠিন কাজ ছিল। কারণ করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনের কারণে সারা বিশ্বে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। এমনকি লন্ডনসহ ইউরোপ-আমেরিকায় হিটার ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়েছে একটা সময়। ৬টার বেশি ডিম কেনা যায়নি। ৩টার বেশি টমেটো কেনা যায়নি। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বই হিমশিম খাচ্ছে। তার মধ্যেও আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রেখেছি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। ভর্তুকি দিয়েছি। 

তিনি বলেন, গ্রামকে অর্থনৈতিকভাবে ঠিক রাখা আমাদের লক্ষ্য। যার কারণে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে দারিদ্র্যতার হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। হতদরিদ্রের হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি। ৭ লাখ মানুষকে ঘর দিয়েছি। সাক্ষরতার হার বেড়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছি। এরপরও বৈশ্বিকভাবে তেল, গ্যাস, কয়লার দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এখন কয়লাই পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদেরও পেতে সমস্যা হচ্ছে। আগে যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করেছে এখন তারাও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতে নজর দিয়েছে। আমি জানি গরমে অনেকের কষ্ট হচ্ছে। আমরা তো লোডশেডিং দূরই করে দিয়েছিলাম। করোনা আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে এ সমস্যা হতো না। আমরা ইতিমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে চুক্তি করেছি। যেন বিদ্যুতের কারণে মানুষের কষ্ট লাঘব করতে পারি। কারণ তারা ইতিমধ্যে সারাক্ষণ বিদ্যুতের মধ্যে থেকে অভ্যস্থ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনেক খরচ হয়। এতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। যাতে সাধারণ মানুষ থেকে বড় লোকেরা সুবিধাভোগী বেশি হচ্ছে। তাই আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ওপর বারবার আঘাত, হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ-খালেদা জিয়াও চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগকে কীভাবে ধ্বংস করা যায়। আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, পারবেও না। 

প্রতিকূল অবস্থায় চলতে চলতে আওয়ামী লীগ আজ সরকার গঠন করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয়, আওয়ামী লীগ ইনস্টিটিউটের মতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশের উন্নতি হয়, এটাই বাস্তব।

তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবস্থিত  জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয়টি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সমন্বয় কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার হবে বলে ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status