শেষের পাতা
নারী সদস্যের ব্যাগে বিষের বোতল
অপকর্ম অস্বীকার চেয়ারম্যান সেকান্দরের
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
১ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার
নারী ইউপি সদস্যের সর্বনাশের দায় অস্বীকার করছেন চেয়ারম্যান সোলাইমান সেকান্দর। অন্যদিকে বিষের বোতল ভ্যানিটি ব্যাগে নিয়ে ঘুরছেন ওই সদস্য। বিয়ে না করলে করবেন আত্মহত্যা। চেয়ারম্যানের বিয়ের আশ্বাসে স্বামীকেও তালাক দিয়েছেন নারী সদস্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের এই অপকীর্তির আলোচনা হচ্ছে উপজেলাজুড়ে। যদিও ৬ লাখ টাকায় ঘটনার রফাদফার খবর চাউর হয়েছে।
গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপি’র ইউনিয়ন কমিটির নেতা সোলাইমান সেকান্দর। চেয়ারম্যান হওয়ার পর বছর খানেক আগে নারী সদস্যের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দু’জনে দু’জনার হয়ে ঘুরে বেড়ান সর্বত্র। অভিসারে ঢাকায় গিয়ে হোটেলে রাতযাপন করেন।
তবে নারী সদস্য জানান, চেয়ারম্যান অনেকদিন ধরেই তার সঙ্গে অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেকে সেভ করে রাখছিলেন। গত ১৯শে মে দুপুরে চেয়ারম্যানের কাছে জন্ম নিবন্ধনের স্বাক্ষর আনতে গেলে চেয়ারম্যান তার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তাকে জাপটে ধরেন। এরপর বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ঘটনা কাউকে না জানাতে বলেন। পরদিন চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে ঘটনা বলেন। এসময় চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করার অঙ্গীকার করেছে বলেও চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে জানান। এ কথা শুনে চেয়ারম্যানের স্ত্রী ৫ বছর পর বিয়ে হবে বলে এগ্রিমেন্ট করতে বলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান পরে টাকা দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে ফেলেন। নারী সদস্য গত ২৭শে মে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য। ২৯শে মে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয় তাকে।
ওইদিনই আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী সফিউল্লাহ মিয়া বিষয়টি রফাদফা করার জন্য নারী সদস্যকে তার এখানে ডেকে পাঠান। সেখানে চেয়ারম্যানের লোকজন আসেন। তবে বিয়েতে সম্মত না হওয়ায় সালিশ ভেঙে যায়। পরে ওইদিন রাতে আবার মৈশারে আরেক নারী ইউপি সদস্যের বাড়িতে বসে ৬ লাখ টাকায় চেয়ারম্যানের অপকর্মের রফাদফা করা হয়। ইউপি সদস্য সাবিনার বাড়িতে হওয়া এ সালিশ সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন জয়, তালশহর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রশিদ মিয়া এবং অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. সোলাইমান সেকান্দর। এতে ছয় লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি জোরপূর্বক আপস মীমাংসা করা হয়। তবে এর আগে ওই নারী সদস্য চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান। ব্যাগ থেকে বিষের বোতল বের করে দেখান। এদিকে এ ঘটনায় গত ২৬শে মে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ওই নারী সদস্যের।
তালশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলাইমান সেকান্দর সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে বলছেন, ইউনিয়নের বরাদ্দ নিয়ে মেম্বারদের সঙ্গে অনেক সময় ঝামেলা হয়। কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে এমন কথা বলেছে। এসব কথা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]