শিক্ষাঙ্গন
ভবনের লিফট কিনতে তুরস্কে যাচ্ছেন পাবিপ্রবির প্রতিনিধিদল
রাজিউর রহমান রুমী, পাবনা থেকে
(৩ মাস আগে) ৩১ মে ২০২৩, বুধবার, ১:৩৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের লিফট কিনতে তুরস্ক যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির ছয় কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তুরস্ক সফরকে ঘিরে পাবনায় বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তবে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সফরের আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় হতে প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্মকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ওই চিঠিতে ‘পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের বিভিন্ন স্থাপনার লিফট সংগ্রহের প্রাক জাহাজীকরণে ছয় সদস্যের একটি পরিদর্শক দলের তুরস্ক ভ্রমণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৯ই মে তুরস্ক সফরের কথা থাকলেও পরবর্তীতে এই সময় সূচি পিছিয়ে পুনরায় আগামী ৬ই জুন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একাডেমিক ভবন, ছাত্র ছাত্রীদের আবাসিক হলসহ মোট পাঁচটি আধুনিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর জন্য কেনা হবে প্রায় ২৫টি লিফট। আর সেই লিফট কেনাকাটা ও তদারকির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল যাচ্ছে তুরস্ক।
এই দলের দলনেতা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খানকে। উপদলনেতা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিনকে। এছাড়াও সদস্য হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদ আহমেদ, উপ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী (ইইই) মো. রিপন আলী, উপ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী জহির মোহা. জিয়াউল আবেদীন। সদস্য সচিব হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জি এম আজিজুর রহমান।
জনগণের অর্থ অপচয় করে এ ধরনের সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন বিদেশ সফরকে জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ বাবু বলেন, বর্তমান সময়ে গুগলে সার্চ দিলেই সব ধরনের লিফটের ডিজাইন পাওয়া যায়। সারাদেশে বিশাল বিশাল বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০ তলা ভবনের লিফটের জন্যও তুরস্ক, জার্মানি, চায়না বা রাশিয়ায় প্রতিনিধিদল যেতে হয়নি। তাহলে পাবিপ্রবির সামান্য কয়েকটি লিফট কেনার জন্য কেন অর্থ অপচয় করে বিলাসবহুল সফর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বিশাল বিশাল ভবনের জন্যও লিফট কিনতে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। ঠিকাদার কেন ২০ লাখ টাকা খরচ করে শিক্ষকদের লিফট কেনার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। তাহলে নিশ্চয় যত খারাপ লিফট নিম্নমানের লিফট রয়েছে সেগুলো কিনে আনা হবে। শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে চিন্তা না করে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছে। এজন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে প্রথম হলেও সেই শিক্ষার্থীকে তাকে চাকরি দেওয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের জন্য সকল অরাজকতা শুরু হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক পাবনার সভাপতি আব্দুল মতিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনের লিফট কেনার জন্য শিক্ষকদের বিদেশ ভ্রমন মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়। এটা স্পষ্ট অপচয়। ঠিকাদারের খরচে গেলেও এটা অপচয় বলব। ঠিকাদারের তো লিফট বুঝিয়ে দিতেই হবে। তাহলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানো বাদ দিয়ে শিক্ষকদের লিফটের কারখানা দেখতে যেতে হব?।
পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন বলেন, মাত্র কয়েকটি লিফট কেনার জন্য বিদেশে ৬ জন কর্মকর্তা যেতে হবে এমন অপচয় আমি সমর্থন করি না। সামান্য কয়েকটি লিফট দেশে থেকেই ক্রয় করা যায়। এসব কর্মকর্তাদের ১২ দিন থাকা খাওয়া ব্যয়বহুল হবে। টাকা এসব অযথা ব্যয় না করে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে খরচ করা উচিত।
তবে নিয়মের মধ্যে থেকেই এ সফরের আয়োজন করা হয়ছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জি এম আজিজুর রহমান বলেন, ছয় জনের যে প্রতিনিধি দল তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন তার জন্য সরকারি কোন অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হচ্ছেনা। সফরের এই অর্থ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বহন করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, সফরের বিষয়টা অনেক আগে থেকেই অনুমোদন করা আছে। এ সফরে আরো আগে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে সম্মান করেই এত বিলম্ব করেছি।
পাঠকের মতামত
লিফট শিক্ষিত কী-না তা দেখতে হবে। সেজন্য এ আয়োজন! আমরা একটা অসভ্য জাতিতে পরিণত হয়েছি!
SMART Bangladesh !?!
বাহ বাহ বেশ , টাকা দেবে গৌরিসেন সমস্যা কোথায় । এই জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দালালি করেন ।
লিফট চলে বিদ্যুতে । সরকার কয়লা ও জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে । পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গণ একজন দুইজন নয় দল বেধে পাঁচ জন যাচ্ছেন তুরস্ক বেড়াতে । হাস্যকর । আইনজীবী ঠিকই বলেছেন গুগলে সার্চ দিলে শত শত কোম্পানির লিফটের বর্ণনা ও মূল্য তালিকা মিলে । সরকার কবে এই সংস্কৃতি বন্ধ করবে ?
I am curious to know the answer of following question as to find the justification of this trip 1. why is this overseas trip needed? what result will this 6 member delegate achieve through this trip? 2. is that result not possible to achieve without overseas trip? 3. Can't the lift supplier deduct the amount (sponsor cost for overseas trip) from the lift price? 4. Quality of the lift can be ensured at installation and post selling service which can be mentioned in the written agreement. Thnaks
good
Govt. money destroyed by the officer's