ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

ব্যাংকিংয়ে ‘অ্যালেন স্বপন’, মানিলন্ডারিং অপতৎপরতা

মহিউদ্দিন আহমেদ
১৪ মে ২০২৩, রবিবার
mzamin

আলোচিত ওয়েব সিরিজটির একাংশে অভিনেতা নাসিরউদ্দিন ওরফে ‘অ্যালেন স্বপন’ ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলছিলেন, “হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেইদিকে খেয়াল নাই আর আমি ব্যাংকে টাকা রাখতে চাচ্ছি এত কথা কেন?” প্রতি উত্তরে ব্যাংক কর্মকর্তা বলেছিলেন, “স্যার বিদেশে টাকা পাচার সহজ, দেশে রাখাই কঠিন; বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, দুদক, ট্যাক্স!”। অর্থাৎ অবৈধ অর্থের জবাবদিহিতা এড়াতেই টাকা পাচার করা হয় বেশি।


ওটিটি প্ল্যাটফরম চরকিতে মুক্তি পাওয়া পরিচালক শিহাব শাহীন নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ ইতিমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই সিরিজের নির্মাণগুণ, গল্পগাঁথা, অভিনয় দক্ষতা, গান- এইসবের বাইরে  আজকের প্রসঙ্গ হচ্ছে এই সিরিজের প্রধান চরিত্র ‘অ্যালেন স্বপন’ ওরফে ‘শামসুর রহমান’, যিনি অবৈধ মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত শত শত কোটি ‘কালো’ টাকা ব্যাংকিং মাধ্যমে ‘সাদা’ করার প্রয়াস চালিয়েছেন অর্থাৎ মানিলন্ডারিংয়ের আশ্রয় নিয়েছেন। এই সিরিজের গল্পের সঙ্গেই আমরা বাকি আলোচনা এগিয়ে নেবো। 

মানিলন্ডারিং বা অর্থশোধন শব্দটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত, যার মূল উদ্দেশ্য হলো অপরাধ থেকে অর্জিত সম্পদের উৎস গোপনকরণ। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে মানিলন্ডারিং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে চিহ্নিত। সাধারণত ৩টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়ে থাকে। 

১ম ধাপ: সংযোজন বা প্লেসমেন্ট-যখন কোনো অপরাধমূলক কর্মকা- যেমন চুরি, ছিনতাই, ঘুষ, দুর্নীতি ইত্যাদি থেকে উপার্জিত অর্থ প্রথমবারের মতো অর্থ-ব্যবস্থায় যেমন: ব্যাংক হিসাবে প্রবেশ করানো হয়, ২য় ধাপ হলো স্তরীকরণ বা লেয়ারিং- অর্থাৎ সংযোজনকৃত/প্লেসমেন্টকৃত অর্থ পর্যায়ক্রমে জটিল লেনদেনের মাধ্যমে অর্থের উৎস লুকানোর জন্য বিভিন্ন স্তরে সরানো হয়। যেমন একটি ব্যাংক হিসাব থেকে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর, বিদেশে অর্থ প্রেরণ, একটি ব্যাংক হিসাব থেকে অন্যান্য শাখায় বিভিন্ন নামে অর্থের স্থানান্তর বা জমা দেয়া। লেয়ারিং বা স্তরীকরণ সফলভাবে সম্পন্ন হলে পরবর্তী ধাপে অবৈধ অর্থ এমনভাবে ব্যবহৃত হয় যাতে করে মনে হয় এটি বৈধপন্থায় উপার্জিত এবং এভাবেই লন্ডারিংকৃত অর্থ অর্থনীতিতে পুনর্বহাল হয়-এই ধাপকে বলা হয় ইন্টিগ্রেশন বা পুনর্বহাল। যেমন: অবৈধ অর্থে ক্রয়কৃত সম্পত্তির  বিক্রয়, ঘন ঘন পরিবর্তন ইত্যাদি। 

সিরিজের ‘অ্যালেন স্বপন’ কক্সবাজারের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক কারবারি থেকে অর্জিত বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ব্যাংকে জমা করতে চাইলে ব্যাংক কর্মকর্তা আয়ের উৎস জানতে চান, কারণ একটি ছোট বীমা কোম্পানির আয়ের সঙ্গে এত টাকা জমা প্রদান অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।

বিজ্ঞাপন
আয়ের উৎসের ব্যাপারে জমাকারী বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রদান করতে থাকেন, যেমন কখনো বলেছেন টাকা রাস্তার পাশে কুড়িয়ে পেয়েছেন, আবার পরক্ষণে বলেছেন জমি বিক্রি করে পেয়েছেন, কিন্তু জমি বিক্রি সংক্রান্ত কোনো দলিল তার কাছে ছিল না।  একপর্যায়ে তিনি ‘১০ লাখ টাকা দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলে বিভিন্ন লোক দিয়ে সপ্তাহে কয়েকবার ছোট ছোট পরিমাণে টাকা জমা করানোর পরামর্শ’ স্বস্তিচিত্তে গ্রহণ করে ব্যাংকিং মাধ্যমে প্রবেশ করেন, অর্থাৎ মানিলন্ডারিং-এর প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ অতিক্রম করার ছক করেন। 

মাদক ব্যবসায়ী ‘অ্যালেন স্বপন’ পরবর্তীতে সেলিম চৌধুরী নামের একজন মুদ্রা পাচারকারীর (যিনি ছবিতে নিজেকে মানি এক্সচেঞ্জার হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন) সান্নিধ্যে আসেন এবং কালো টাকা সাদা করার ব্যপারে কিছু পরামর্শ পান, যেমন: ‘মাছের খামার ব্যবসা,  যার জন্য প্রয়োজন হবে শুধু বড় একটি পুকুর আর সেখান থেকেই আসবে লাভের টাকা তাও ট্যাক্সবিহীন’, কিংবা ওভার ইনভয়েসিং করে দেশের বাইরে টাকা পাঠিয়ে ফ্যামিলি রেমিট্যান্স দেখিয়ে আবার ফিরিয়ে আনা’। ছবির পরের কোনো দৃশ্যে ‘অ্যালেন স্বপন’ ‘রহমান ব্রাদার্স অ্যান্ড সন্স’ নামে এক ‘বৈধ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ মাছের ব্যবসা বা আমদানি-রপ্তানির মতো স্বীকৃত কোনো ব্যবসায়িক পরিচয়কে সামনে আনার পরিকল্পনা করেন, যেন মনে হয় সব অর্থ বৈধপন্থায় অর্জিত।  

বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং অপরাধের প্রচলিত কিছু ধরন:  কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারি শুল্ক রেয়াত সুবিধা গ্রহণ করে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলা হলো, কিন্তু পরিবর্তে এলো ইট-বালু, আর ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি মূল্য বাবদ ১ কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে গেল, এখানে শুল্ক ফাঁকি এবং মুদ্রাপাচারের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং সংঘটিত হয়। 

কোনো রপ্তানিকারক শিপিং বিলের মাধ্যমে তার তৈরি করা পণ্য বিদেশে রপ্তানি দেখিয়ে তার স্থানীয় ব্যাংককে এসব শিপিং বিল সরবরাহ ও বিক্রি করে তথাকথিত ‘রপ্তানিমূল্য’ তুলে নিলো। যেসব বিল ব্যাংক কর্তৃক ক্রয় করা হয়েছিল, সেগুলোর বিপরীতে পরবর্তীতে ব্যাংক বিদেশ থেকে কোনো ডলার পেলো না। অধিকন্তু এই দেখানো রপ্তানির বিপরীতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নগদ সহায়তা নিয়ে নিলো। এই প্রক্রিয়ায় ক্রিসেন্ট গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে, যা ২০১৯ সালে দুদকের তদন্তে উঠে আসে। 

আবার কখনো জালিয়াতি করে ভুয়া ক্রয়াদেশ দিয়ে লোকাল এলসি খুলে পণ্য কেনার নামে ব্যাংক থেকে টাকা বের করে এনেও মানিলন্ডারিংয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে হলমার্ক গ্রুপসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি। সুতা কেনার ছুতোয় কয়েকটি স্পিনিং মিলের নামে সোনালী ব্যাংকের রুপসী বাংলা শাখার মাধ্যমে এই কোম্পানিগুলো এলসি খুলে, পরে স্পিনিং মিলগুলো ভুয়া রপ্তানি বিল জমা দিলে সোনালী ব্যাংকের উক্ত শাখা থেকে বিল এক্সেপ্টেন্স (মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা) গ্রহণ করে এবং তার বিপরীতে বিল ভ্যালুর ৯০% পর্যন্ত টাকা উঠিয়ে নেয়। প্রকৃতপক্ষে স্পিনিং মিল এবং হলমার্ক যোগসাজশ করে এই লেনদেন সংঘটিত করে, যেখানে পণ্যের আদৌ কোনো আদান-প্রদান (মুভমেন্ট) হয় নাই। এভাবে ৪২টি শেল প্রতিষ্ঠানের (অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান) মাধ্যমে ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে ৩৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করে দেয় হলমার্ক গ্রুপসহ অন্যান্য কিছু কোম্পানি, যা তদন্তকারী সংস্থাগুলোর তদন্তে জানা যায়। 

কখনো এমনটি হয়, বিদেশ থেকে জুতার এলসি খোলা হলো, চালান বা ইনভয়েসে প্রতি জোড়ার মূল্য ১০ ডলার দেখানো হলো, কিন্তু প্রকৃত দাম ১৬ ডলার। বাকি ৬ ডলার হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে পাঠানো হলো, এলসি ভ্যালু কমিয়ে (আন্ডার ইনভয়েসিং) বহিঃশুল্ক বা কাস্টমস ডিউটি ফাঁকি দেয়ার প্রয়াস চালানো হলো। আবার অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বাড়িয়ে চালান বা ইনভয়েস করা হয় (ওভার ইনভয়েসিং), এই ক্ষেত্রে লক্ষ্য থাকে আমদানি মূল্য বেশি পাঠানোর মাধ্যমে টাকা পাচার। একইভাবে রপ্তানি মূল্য কম দেখিয়েও (আন্ডার ইনভয়েসিং) টাকা পাচার করা হয়ে থাকে। 

২০১৯ সালে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা প্রকাশ্যে আসার পর আরেক ধরনের মানিলন্ডারিং নমুনা নতুন করে সামনে আসে, তাহলো ক্যাসিনোর কালো টাকা সাদা করার জন্য দেশের সিনেমাগুলোতে প্রযোজক হিসেবে বিনিয়োগ করা। সংশ্লিষ্টদের অভিজ্ঞতায় জানা যায়, কোনো সিনেমা থেকে ৩ কোটি টাকা লাভ হলে তা অতিমূল্যায়িত করে ১০ কোটি টাকা দেখানো যেতে পারে আবার ছবিকে ফ্লপ ঘোষণা করে লোকসান দেখানো যেতে পারে। 
মানিলন্ডারিংয়ের আওতাভুক্ত অন্যান্য অপরাধসমূহের মধ্যে আছে- দুর্নীতি ও ঘুষ, মুদ্রা জালকরণ, চোরাচালানি, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, অবৈধ মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা, অপহরণ, চোরাকারবারি, নারী ও শিশু পাচার, মানব পাচার, ভেজাল পণ্য উৎপাদন, যৌতুক, চুরি/ডাকাতি, যৌন নিপীড়ন, কর ফাঁকি (বৈধ অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উপার্জন করা অর্থের ওপর প্রদেয় আয়কর ফাঁকি দিলেও) ইত্যাদি। 

টাকা পাচারকারীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ‘হুন্ডি’। কয়েকটি ধাপে হুন্ডি প্রক্রিয়া সম্পাদিত হয়, প্রথমে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে, তারপর মাদক, স্বর্ণ ব্যবসায়ী বা যারা কালো টাকা বিদেশে পাচার করে তাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে, এই টাকা বিভিন্ন অসাধু মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের মাধ্যমে প্রবাসীদের দেশে থাকা নিকটাত্মীয়দের কাছে পাঠায় এবং পরে প্রবাসীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা বিদেশি মুদ্রা পাচারকারীদের কাছে তুলে দেয়। এ প্রক্রিয়াতে সংঘবদ্ধ চক্রটি উচ্চহারে কমিশন পেয়ে থাকেন। ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে সিআইডি’র  তথ্য মতে, গত এক বছরে হুন্ডিতে ৭.৫ বিলিয়ন টাকা দেশের বাইরে চলে গেছে, যার ব্যাংকিং চ্যানেলে আসলে রিজার্ভ সমৃদ্ধ হতো, ডলার সংকট এতটা প্রকট হতো না। 

টাকা কেন পাচার হয়: 
আলোচিত ওয়েব সিরিজটির একাংশে অভিনেতা নাসিরউদ্দিন ওরফে ‘অ্যালেন স্বপন’ ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলছিলেন, “হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, সেইদিকে খেয়াল নাই আর আমি ব্যাংকে টাকা রাখতে চাচ্ছি এত কথা কেন?” প্রতি উত্তরে ব্যাংক কর্মকর্তা বলেছিলেন, “স্যার বিদেশে টাকা পাচার সহজ, দেশে রাখাই কঠিন; বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, দুদক, ট্যাক্স!”। অর্থাৎ অবৈধ অর্থের জবাবদিহিতা এড়াতেই টাকা পাচার করা হয় বেশি। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-উন্নত বিশ্বে বিলাসবহুল জীবনের লোভ, ট্যাক্স-ফ্রি ব্যবসার সুযোগ ইত্যাদি।  

হিসাব খোলার সময় বা ব্যাংকিং-এর বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সরবরাহে অনীহা/গড়িমসি, ভুল তথ্য/ঠিকানা প্রদান, প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে সুবিধা গ্রহণে আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি গ্রাহককে ব্যাংকের কাছে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ গ্রাহক হিসাবে ধারণা দেয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিত অধিকতর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে। অধিকাংশ গ্রাহকগণই ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত আছেন ও অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন এবং বিরক্ত না হয়ে সহযোগিতা করে থাকেন। 

১৯৯৭ সালে প্রচারিত জনপ্রিয় ‘দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চার্স অফ রবিন হুড’ মুভিতে কিংবা ২০১০ সালের রাসেল ক্রো অভিনীত ‘রবিন হুড’ ছবিতে হুড পরিহিত ধনীর ধন চুরি করে গরিবের মাঝে বিলিয়ে দেয়া যেই রবিন হুড নায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, তিনি হয়তো ৭শ’ বছর পর এই সময়ে মানিলন্ডারিং অপরাধের দায়ে অপরাধী সাব্যস্ত হতেন, আবার অবৈধভাবে উপার্জিত আয় বা কালো টাকা বৈধকরণের সুযোগও সরকারের তরফ থেকে হয়তো পেতে পারতেন। এ সুযোগের নৈতিকতা নিয়ে সুশীল সমাজে অনেক প্রশ্ন আছে। এটিও একপ্রকার মানিলন্ডারিং বা অর্থশোধন যার নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বিতর্কিত। তবে এ সুযোগের উদ্দেশ্য হলো গোপনে উপার্জিত ও সংরক্ষিত কালো টাকাকে মূল অর্থনৈতিক প্রবাহে সংযুক্ত করা। সাধারণত, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জরিমানা বা কর প্রদান করলে এরূপ আয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় না এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই অর্থ বৈধ আয় হিসেবে নির্ভয়ে ব্যবহার (ব্যয়/বিনিয়োগ) করতে পারেন।  এটা নিয়ে বিতর্ক থাকবে, ভিন্ন মত থাকবে, তবে বাস্তবতা হচ্ছে যেভাবেই  হোক মোট আগত রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রায় অর্ধেক এখনো অবৈধ মাধ্যমে আসে, যাকে অর্থনীতির মূলপ্রবাহে ফিরিয়ে আনাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।  

পরিশেষে, যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্যই কালো দাগ/ক্ষত মানিলন্ডারিংয়ের মতো একটি বিষয়কে শিল্প মাধ্যমে শৈল্পিকভাবে তুলে আনার জন্য পরিচালক শিহাব শাহীন সাধুবাদ প্রাপ্য। তিনি অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকারের শূন্য-সহনশীলতা (জিরো-টলারেন্স) নীতিকে জানান দিয়েছেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এদের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে সচেতনতার বার্তা দিয়েছেন এবং দেখিয়েছেন-এই অপরাধীরা মৃত্যু পর্যন্ত শুধু ছুটে চলে, এদের কোনো পরিবার নেই, কোনো ঠিকানা নেই। 

লেখক: ব্যাংকার ও কলামিস্ট
[email protected]

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status