ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

রা জ নী তি তে কমেডি, কৌশল

শামীমুল হক
১ জুন ২০২২, বুধবার
mzamin

রাজনীতিতে কমেডি। রাজনীতিতে কৌশল। বরাবরই ছিল। আছে। না হয়, নির্বাচনের সময় হবে। সকল দল উৎসাহে এতে অংশ নিবে। ভোটের দিন সাধারণ ভোটাররা দলবেঁধে কেন্দ্রে যাবে। ভোট দিয়ে হাসি মুখে বেরিয়ে আসবে। রাতভর ফলাফল ঘোষিত হবে টিভিতে। রাত জেগে জনতা অপেক্ষায় থাকবে কারা কত আসন পেলো।

বিজ্ঞাপন
কারা ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে। এমন নির্বাচনী যজ্ঞ দেখতে মানুষ দিনের পর দিন অপেক্ষায়। কিন্তু দেশে এমন যজ্ঞ হারিয়ে গেছে বহুদিন। গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ যজ্ঞকে মলিন করে দিয়েছে। নির্বাচনের আগেই মানুষ জেনে গেছে ফল। তাদের আর ভোটকেন্দ্রে যেতে হয়নি। এ ভাবে মানুষ হারিয়ে ফেলেছে নির্বাচনী আমেজ। কেন্দ্রে যাওয়ার ইচ্ছা। আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বাকযুদ্ধ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর এসে এখনো নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে রাজপথ কাঁপাচ্ছে দলগুলো। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। তবে কেন হচ্ছে? একেক জনে একেকভাবে ব্যাখ্যা করবেন। কারণ দেশটা আজ দুই ভাগে বিভক্ত। প্রত্যেকেই নিজের মতো করে ভাবেন। নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন। আর জনতা এটাকে বলছেন কমেডি। কৌশল। নির্বাচনকে সামনে রেখে কখনো কখনো নেতাদের বাকযুদ্ধ কমেডিকেও হার মানায়। আমজনতা সবই বুঝে। তারা মুচকি হাসে। 

 

কোনো সিইসিকে যেন বলতে না হয়- আর রাতের ভোট হবে না। আমরা দিনের ভোট দিনেই করবো। গণতন্ত্রকে মাটি চাপা দেয়ার আগে অন্তত রাজনীতিকদের দেশটাকে নিয়ে ভাববার সময় এখনই। প্লিজ আর কোনো নয়া কমেডির দিকে হাঁটবেন না কেউ। এতে ক্ষতি ছাড়া লাভের কিছু নেই

 

রাজনীতি আসলে সাদা-কালোর দাবার ঘুঁটি। হাতি, ঘোড়া আর রাজা-রানী। দরকার চাল, কৌশল ও মারপ্যাঁচ। এই দাবার চালই হলো রাজনীতির নিয়ন্ত্রক। কৌশলী চালে কখন কে কুপোকাৎ হয় বলা মুশকিল। আবার নিজের চালে নিজেই ধরা খাওয়ার নজিরও রয়েছে ভূরি ভূরি। যুগের পর যুগ দাবার ঘুঁটির হাতি-ঘোড়াই রাজা-রানীকে আটকে দিয়েছে। আবার এগিয়ে নিয়েছে শীর্ষে। ভবিষ্যৎ রাজনীতিও বন্দি দাবার ঘুঁটির কাছে। শুধু চাল যুৎসই হলে পক্ষে যাবে। অন্যথায় বিপদ। রাজা-বাদশার আমল, জমিদারি আমল, উপনিবেশ আমল আর গণতন্ত্রের আমল ঘুরেফিরে একই। কে জানতো এক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ওপর ভর করে বৃটিশরা এ উপমহাদেশকে নিজের কব্জায় নেবে? চতুর ও সাহসী নবাব সিরাজউদ্দৌলা বৃটিশদের চালে ধরা খাবেন? আর বৃটেনে বসে হাজার মাইল দূর থেকে রানী এলিজাবেথ ভারতবর্ষ শাসন করবেন? এক যুগ কিংবা দুই যুগ নয়। দীর্ঘ প্রায় দুইশ’ বছর। 

এ সময়ে চলেছে নানা খেলা। দাবার খেলায় শেষ পর্যন্ত হেরে যায় বৃটিশরা। ভারতবর্ষ ছেড়ে পালাতে হয় তাদের। এরপর ভারতবর্ষ স্বাধীন। এখানেও চলতে থাকে দাবার চাল, কৌশল আর মারপ্যাঁচ। দ্বিজাতি তত্ত্বকে সামনে রেখে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে যায়। যার একদিকে পাকিস্তান, অপরদিকে ভারত। এরপরও কি রাজনীতির দাবার চাল থেমে ছিল? না! বরং আরও বেড়ে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানের কাছে পূর্ব পাকিস্তান যেন দাস হয়ে পড়ে। ক’বছর যেতে না যেতেই ভাষার ওপর আঘাত হানে। শুধু তা-ই নয়, অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করে তারা হয়ে ওঠে যেন জমিদার আর পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দারা তাদের প্রজা। পাকিস্তানের দু’চোখা নীতির চালে পিষ্ট হওয়া পূর্ব পাকিস্তানিরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপর ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার নানা কৌশল আর চালের খেলায় মেতে ওঠে জেনারেল ইয়াহিয়া। সংখ্যালঘু দলের নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো হাত মেলায় ইয়াহিয়ার সঙ্গে। তারা দুজনে আঁটে নতুন আরেক চাল। শেষ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানকে দমিয়ে রাখতে কামান নিয়ে নামে রাজপথে। কিন্তু তাদের এ চালে নিজেরাই ধরা খায়। আর ওই চাল যে ভুল ছিল তারই প্রমাণ আজকের বাংলাদেশ। দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পেরিয়েছে। দেশ এগিয়েছে অনেক। 

খাদ্যে অর্জন করেছে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। উন্নয়নও হয়েছে ব্যাপক। অজপাড়াগাঁয়েও রাতের আকাশে ঝিলিক দেয় বিদ্যুতের আলো। এনালগ থেকে পা দিয়েছে ডিজিটাল যুগে। কিন্তু রাজনীতি? রাজনীতিতে দাবার চাল কি বন্ধ হয়েছে আজও? নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার হটিয়ে দেশ গণতন্ত্রের পথে হাঁটা শুরু করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে এমনটাই আঁচ করা যাচ্ছিল। কিন্তু না! সবাইকে অবাক করে দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিএনপি। সরকার গঠন করে তারা। দেশ এগুতে থাকে। কিন্তু উপনির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে জাতির সামনে। সর্বশেষ উপনির্বাচনে কারচুপি সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। সামনে আসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি। এ দাবিতে আন্দোলন তুঙ্গে। দু’পক্ষ থেকেই চলতে থাকে দাবার ঘুঁটি চালা। আওয়ামী লীগসহ সকল বিরোধী দল তখন রাজপথে। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগ জনতার মঞ্চ স্থাপন করে। এর আদলে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনতার মঞ্চ স্থাপন হয়। গোটা দেশ হয়ে পড়ে অচল। 

এরই মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করা হয়। মাত্র কয়েকদিনের সংসদে তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস করে ক্ষমতা ছাড়ে বিএনপি। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। নতুন নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতার মসনদে বসে আওয়ামী লীগ। আবারো পাঁচ বছর আন্দোলন সংগ্রাম। 

বিভিন্ন উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন। এভাবেই চলে যায় পাঁচ বছর। ২০০১ সালে বিএনপি করে জোটবদ্ধ নির্বাচন। এ চালে জয়ী হয় বিএনপি। সরকার গঠন করে। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে বিএনপি দাবার চাল চালতে থাকে। আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সামনে রেখে বিচারপতিদের বয়স বাড়ানো হয়। এতে ক্ষেপে যায় আওয়ামী লীগ। তারা সময়মতো রাজপথে নামে। দাবার চাল চলতে থাকে দু’পক্ষে। শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্টের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ক্ষমতা ছাড়েন। কিন্তু এ চাল যুৎসই ছিল না তা টের পাওয়া যায় ক’দিন পরই। প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কয়েক উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন। ঘোলাটে হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। এ সুযোগে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। তিন মাসের জন্য এসে তারা দুই বছর ক্ষমতায় থাকে। 

তারাও দাবার চাল কম চালেনি। রাজনীতিকে ধ্বংস করার নানা প্রয়াস চালায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রধানকে গ্রেপ্তার করে। আরও অনেক রাজনীতিককে করা হয় রাজবন্দি। শেষ পর্যন্ত তারা টিকতে পারেননি। নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা হন প্রধানমন্ত্রী। এবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দাবার চাল উল্টো চালেন। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনে এত হরতাল, এত আন্দোলন সবই ভুলে যায়।  আদালতের নির্দেশনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার উঠিয়ে দেন। এর স্থলে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন পরিচালনার আইন করেন। বিএনপি’র তীব্র বিরোধিতাও এক্ষেত্রে কাজে আসেনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দাবার চালে থমকে যায় বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচন বিরোধী রাজনীতিকদের হতভম্ব করে দেয়। তারা ভাবে এ কোন দাবার চাল এটি। বোকা বনে যান বিরোধীরা। যা হয়েছে তা তারা কল্পনাও করতে পারেন নি। আগামী নির্বাচন নিয়ে দাবার ঘুঁটি হাতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আগামী দিনে কে কীভাবে চাল দেন এটাই দেখার বিষয়। এ নিয়েই চলছে কৌশল। সরকার আর মাঠের বিরোধীরা নানা কৌশল আঁটছেন। ইতিমধ্যে কৌশল হিসেবে নতুন জোট গঠনের ঘোষণাও এসেছে সাতটি দলের সমন্বয়ে। এসেছে গণ মঞ্চ করার সিদ্ধান্তও। বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে কখনোই যাবে না তারা। আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর আওয়ামী লীগের কথা- সংবিধান অনুযায়ীই হবে আগামী নির্বাচন। যে সংবিধানের সংশোধনী অবশ্য আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তারা শক্তিশালী বিরোধী দল চান। এ জন্য যা করতে হয় তারা তা করবেন। 

তার এ মন্তব্য কিসের ইঙ্গিত? এ নিয়েও দেশজুড়ে আলোচনা। যাক গে সেসব কথা। বর্তমানে বিপরীতমুখী অবস্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। শুধু বিএনপিই বলি কীভাবে? মাঠের বিরোধীরা কেউই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মাঠ গরম করছেন। বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন। তবে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি এখনো সরকারি জোটের অংশ। তারা সংসদে সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টি আর আগের মতো নেই। তারপরও মাঝে মধ্যে জাতীয় পার্টি প্রধান জি এম কাদের নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে সরকারের নানা অনিয়মের কথা বলেন। নির্বাচন নিয়েও ইতিমধ্যে কথা বলেছেন। যা সরকারের পক্ষে নয়। তারা আবার কোন দাবার ঘুঁটি নিয়ে বসে আছেন এটাও দেখার বিষয়।   

রাজনীতিকরা তাদের সকল কাণ্ড-অকাণ্ডকে কৌশলই বলেন। তাদের কথা-রাজনীতি করতে গেলে কৌশলকে সঙ্গী করেই এগুতে হয়। কে, কাকে, কীভাবে ঘায়েল করবে এ কৌশল এখন ওপেন। কথার কৌশল, বলার কৌশল চলছে সবখানে, সব জায়গায়। শুধু কি তাই? না, নির্বাচনে জয়ের কৌশল। সরকারে টিকে থাকার কৌশল। আবার সরকারে যাওয়ার কৌশল। রাজপথে আন্দোলনের কৌশল। গত সপ্তাহে ছাত্রলীগের চাপাতি কৌশল দেখেছে জাতি। ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেয়ার এ কৌশল দেশজুড়ে এখন আলোচনায়। দাবার ঘুঁটি বলি আর কৌশল বলি, আগামী নির্বাচন আবার নয়া কোন কমেডি উপহার দেয় সেটাই দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। মাঠেঘাটে আলোচনা পরপর দু’টি নির্বাচন হয়েছে দু’টি পদ্ধতিতে। আগামী নির্বাচন করতে সরকার কোন নয়া পদ্ধতি আবিষ্কার করে? আবার কেউ কেউ বলছেন, আর কোনো লাভ হবে না। সরকার এখন রয়েছে দেশ-বিদেশের চাপে। 

তাদের কৌশল বদল করতেই হবে। আসলে ভবিষ্যৎই বলে দেবে কী হবে। তবে এ মুহূর্তে বাড়িওয়ালা আর ভাড়াটিয়ার কৌশলের কথা মনে পড়ছে খুব করে। এক লোক বাড়ি ভাড়া খুঁজতে বেরিয়েছে। সঙ্গে তার স্ত্রী আর তিন সন্তান। বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে এক বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখে টু-লেট লেখা। বাড়ির ভেতরে ঢুকলো ওই ব্যক্তি। কলিং বেল টিপতেই বাড়িওয়ালা দরজা খুলে দিলেন। কি ব্যাপার? আমরা বাড়ি ভাড়া নিতে এসেছি। ও আচ্ছা। তাহলে আসুন। ভেতরে গিয়ে বসলেন তারা। কথাবার্তার একপর্যায়ে বাড়িওয়ালা বললেন, এ তিনজনই বুঝি আপনার সন্তান। ভাড়াটিয়া বললেন, না ৩ জন নয়, ৭ জন। বাড়িওয়ালা বললেন, তাহলে বাকি ৪ জন কোথায়? ভাড়াটিয়া বললেন, ওরা গোরস্থানে। বাড়িওয়ালা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। কারণ, ঢাকার বাড়িওয়ালাদের বেশির ভাগই কম লোক দেখে বাড়ি ভাড়া দেন। তাদের কৌশল হলো- কম লোক হলে পানি খরচ হবে কম। আরও অনেক সুবিধা আছে। যাক, দু’জনে কথা বলে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে গেলেন। কিছু টাকা অ্যাডভান্সও করে গেলেন। আগামী ১ তারিখ এসে উঠবেন বাড়িতে। ৪ দিন পরই ১ তারিখ। যথারীতি ভাড়াটিয়া তার মালপত্র নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠেছেন। ১-২ দিন পর বাড়িওয়ালা এসেছেন নতুন ভাড়াটিয়ার ঘরে। উদ্দেশ্য কৌশলে জেনে নেয়া তারা কেমন? কি অবস্থায় উঠেছেন? ঘরে গিয়ে তো বাড়িওয়ালার চোখ মাথায়। ৭ জন ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ঘরে হইচই করছে। একি! 

ডাকলেন ভাড়াটিয়াকে। ওরা কারা? ভাড়াটিয়া বললেন, কেন আমার সন্তান। রেগে মেগে বাড়িওয়ালা বললেন, আপনি না সেদিন বলেছিলেন, আপনার ৩ সন্তান। ভাড়াটিয়া বললেন, আপনি মিথ্যা বলছেন। আমি তা বলিনি। আমি ৭ জনের কথাই বলেছি। এবার বাড়িওয়ালা বলেন, আপনি বলেছেন, বাকি ৪ জন গোরস্থানে। ভাড়াটিয়া বললেন, তা তো বলেছিই। সেদিন ওদের স্কুলের এক শিক্ষক মারা যান। তাকে দাফন করতে গোরস্থানে গিয়েছিল ওরা। বাড়িওয়ালা তো অবাক। বাড়িওয়ালা ভেবেছিলেন, ভাড়াটিয়ার ৪ সন্তান মারা গেছে। তাদের গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ কৌশলে কে জিতলো কে হারলো, সেটা বিষয় নয়। বিষয় হলো- নানা কৌশল কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা। এমনিতেই বিশ্বজুড়ে চলছে অস্থিরতা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের দেশে দেশে। শ্রীলঙ্কার মতো দেশ হয়ে পড়েছে দেউলিয়া। জনতার রুদ্ররোষে কেঁপে উঠেছে মসনদ। বাংলাদেশও রয়েছে নানা চাপে। আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ভাবনার বিষয়। মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উচ্চকণ্ঠ মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এ অবস্থায় দেশের রাজনীতিও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। যে যত কৌশলই করুক না কেন আসল কৌশল হলো সমঝোতা। 

এ ব্যাপারে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে খোলা মন নিয়ে। বিরোধীদলগুলোকে সমঝোতার পথে হাঁটতে হবে। আগামী নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনের মতো। যেন কোনো সিইসিকে বলতে না হয়- আর রাতের ভোট হবে না। আমরা দিনের ভোট দিনেই করবো। গণতন্ত্রকে মাটি চাপা দেয়ার আগে অন্তত রাজনীতিকদের দেশটাকে নিয়ে ভাববার সময় এখনই। প্লিজ আর কোনো নয়া কমেডির দিকে হাঁটবেন না কেউ। এতে ক্ষতি ছাড়া লাভের কিছু নেই। 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status