কলকাতা কথকতা
পুলিশ লকআপে যেভাবে কাটছে পি কে হালদারের দিন
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(৩ বছর আগে) ২৮ মে ২০২২, শনিবার, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৩৭ অপরাহ্ন

প্রশান্ত হালদার ওরফে পি কে হালদার- কেয়ার অফ বিধাননগর পুলিশ স্টেশন লকআপ। বাংলাদেশের হাজার কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত, উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোক নগরে ভুয়া পরিচয় নিয়ে বসবাস করা পি কে হালদার এর ঠিকানা এখন বিধাননগর থানার পুলিশ লকআপ। ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ই ডি তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সুবিধার জন্যে পিকে হালদারকে বিধাননগরে রেখেছে। ই ডির সদর দপ্তর সি জি ও কমপ্লেক্স এখান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। প্রায়ই কালো প্রিজন ভ্যানে পি কে হালদারকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সি জি ও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। কখনও একা আবার কখনও একই সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া স্বপন কিংবা উত্তম মিস্ত্রি বা ইমন হালদারদের সঙ্গে। তবে, ই ডির জেরাকারীরা প্রশান্ত হালদার ওরফে পি কে হালদারকে বেশিরভাগ সময়েই একা জেরা করেছেন।
যদিও ই ডির তদন্তকারীরা এই জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ, তাও যে খবর চুইয়ে এসেছে তাতে জানা যাচ্ছে পি কে হালদার তাঁর বাংলাদেশের সম্পত্তি নিয়ে বিশেষ মুখ খোলেননি। কি ভাবে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন সেই ব্যাপারেও নীরবতাকে হিরণ্ময় বলে মনে করে চুপ করে আছেন পি কে। ইডির জেরাকারীরা একটি ব্যাপারে নিশ্চিত যে, উত্তর চব্বিশ পরগনার কোনও প্রভাবশালীর হাত পি কের মাথার ওপর আছে। সেই প্রভাবশালীর নাম খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে ইডি। এক রাতে তারা পি কে হালদারকে নিয়ে অশোকনগর গিয়েছিল বলেও খবর। সম্পত্তি সনাক্ত করেছেন পি কে- এমনটাই সূত্র মারফত জানা গেছে। মঙ্গলবার পি কে হালদার ও তার সঙ্গীদের আদালতে তোলার সম্ভাবনা। পি কের আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করবেন।
জামিনের আবেদন করা ছাড়া অন্য কোনও গত্যন্তর নেই। কারণ, রাজকীয় বাড়িতে বাতানুকূল জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত পিকেকে থাকতে হচ্ছে একই লকআপে যেখানে অন্য গুন্ডা বদমাশরা আছে। সকালে বরাদ্দ চা আর বিস্কুট। দুপুরে সবজি ভাত। রাতে ডাল রুটি। ফ্যান একটা আছে তাও চলে ধীর গতিতে। রাতে শোয়ার জন্যে মেঝে আর একটি কম্বল বিছানোর জন্য। দাড়ি কমিয়ে যায় এক নাপিত সপ্তাহে একদিন। এজমালি স্নানাগার, প্রায় নরক সমান। কোথায় দুগ্ধফেননিভ বিছানা, কোথায় জামবাটির মাংস কিংবা ইলিশ ভাপা! টাকার কুমির পি কে হালদার এখন অর্থ লুন্ঠনকারী দাগি ক্রিমিনাল। বিচারের অপেক্ষায়।