ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ব এখনও জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাব এড়াতে পারে : IPCC

মানবজমিন ডিজিটাল

(১ বছর আগে) ২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৬:৪১ অপরাহ্ন

mzamin

''জলবায়ু বিপর্যয়ের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব এখনো এড়ানো সম্ভব এবং এটি করার জন্য একাধিক কার্যকর বিকল্প  রয়েছে''। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেল (Intergovernmental Panel on Climate Change বা IPCC) একথা বলেছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সদস্য হোয়েসুং লি স্পষ্ট করেছেন যে – ''চরম আবহাওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও এবং বিপর্যয়কর পরিবর্তনের হুমকি সত্ত্বেও – এখনো এই বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব ''। আইপিসিসি রিপোর্টে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে যে ''মানুষের জ্ঞান এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানব-প্ররোচিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করা যায়। তবে শুধু এটুকু করলেই চলবে না। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে হবে ''। IPCC- এর মতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা প্রজন্মের জন্য একটি কঠিন, জটিল এবং স্থায়ী চ্যালেঞ্জ। বাস্তবকে অগ্রাহ্য করা কঠিন হলেও বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় বৈশ্বিক রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের মাধ্যমে আশার সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করেছেন

হোয়েসুং লি - এর মতে এর জন্য প্রয়োজন অর্থ। কারণ কার্বন ত্যাগ করে সবুজ বিনিয়োগে তহবিলের পরিমাণ তিন থেকে ছয় গুণ বাড়তে পারে। আইপিসিসি বলেছে, সঙ্কটের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ যারা হয়েছে তাঁরা হলেন দরিদ্র শ্রেণী অথচ সমস্যার পেছনে এদের অবদান সবথেকে কম ।

বিজ্ঞাপন
IPCC  প্রতিবেদনের এক লেখক অদিতি মুখার্জি বলেছেন: "বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা এমন অঞ্চলে বাস করে যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। গত এক দশকে বন্যা, খরা এবং ঝড়ের কারণে মৃতের সংখ্যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে ১৫ গুণ বেশি ছিল।” তবে বৈশ্বিক উত্তাপকে প্রাক-ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্তরের উপরে ১.৫ ডিগ্রি  পর্যন্ত সীমিত করার সম্ভাবনা খুব কম, এই প্রান্তসীমা অতিক্রম করলে সংকটের দিন আসন্ন ।রিপোর্টের মূল দলের  সদস্য মেট অফিস হ্যাডলি সেন্টারের ক্রিস জোনস উল্লেখ করেছেন যে  -''কোভিড -১৯ লকডাউনের কারণে ২০২০ সালে কার্বন নির্গমন ৬% কমেছে এবং পরবর্তী দশকে প্রতি বছর একই রকম পতনের প্রয়োজন। যদি আমরা বর্তমান হারে কার্বন নির্গমন অব্যাহত রাখি  তবে ১.৫ সেন্টিগ্রেডের  জন্য কার্বন বাজেট ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।" 

IPCC AR6 রিপোর্ট, যা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছিল, আগস্ট ২০২১ থেকে এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত তিনটি প্রধান বিভাগে প্রকাশিত হয়েছিল।প্রথম তিনটি বিভাগ জলবায়ু ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত বিজ্ঞান, জলবায়ু বিপর্যয়ের  প্রভাব এবং সমস্যা মোকাবেলা বা হ্রাস করার উপায়গুলিকে কভার করেছে। আইপিসিসি বিজ্ঞানীরা এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছিলেন যে এই দশকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ এখন নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি শত শত এবং সম্ভবত হাজার হাজার বছরের জন্য গ্রহের ভবিষ্যতকে নির্ধারণ করবে। জাতিসংঘের শীর্ষ জলবায়ু কর্মকর্তা সাইমন স্টিয়েল বলেছেন: “আমরা জলবায়ু প্রভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ দশকে আছি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে  সীমাবদ্ধ করার প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনের জন্য এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ সেন্টিগ্রেডে সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টা অনুসরণ করার জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন প্রায় ৪৩% কমাতে হবে। সংশ্লেষণ প্রতিবেদনটি হাইলাইট করে যে আমরা লক্ষ্য থেকে কতটা দূরে আছি।"হতাশার পরিবর্তে পদক্ষেপের বার্তাটি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গ্রহণ করেছেন। তিনি বিশ্বের উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য  আহ্বান জানান। গুতেরেস বলেছেন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২০৪০ সালের মধ্যে  উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে হবে। এর আগে চীন ২০৬০ এবং ভারত ২০৭০ এর মধ্যে এই  লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলো। গুতেরেস উন্নত দেশগুলিকে ২০৩০ সালের মধ্যে  এবং ২০৪০ সালের মধ্যে অন্য সকলকে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তেল ও গ্যাস প্রকল্পের নতুন লাইসেন্স বা তহবিল না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সেক্রেটারি এড মিলিব্যান্ড বলেছেন: “আন্তোনিও গুতেরেস সঠিক বলেছেন যে আমাদের জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গতি দ্রুত বাড়াতে হবে। ব্রিটেনের  রক্ষণশীল সরকার এটিকে বেআইনি ঘোষণা করেছে । ট্র্যাজেডির বিষয় হলো যে রক্ষণশীলরা আমাদের গ্রিন ট্রানজিশনের সুবিধাগুলি ব্যবহার করতে  বাধা দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের  বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য এটি বিশেষ প্রয়োজন।'' এদিকে লেবাররা জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ব্রিটেনকে একটি ক্লিন এনার্জি সুপার পাওয়ার বানানোর পরিকল্পনার রয়েছে তাদের। যা জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বৃটেনকে বিশ্বনেতা করে তুলবে।

সূত্র : দা গার্ডিয়ান
 

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status