ঢাকা, ২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাবান ১৪৪৪ হিঃ

প্রথম পাতা

সাংবাদিক, আইনজীবীদের পুলিশের বেধড়ক পিটুনি, একতরফা ভোট

সুপ্রিম কোর্ট বারে তুলকালাম

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবারmzamin

আগের দিন থেকেই উত্তেজনা। বুধবার সকালে তা রূপ নেয় সংঘাত-সংঘর্ষে। দিনভর তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। পুলিশ সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে তাদের হেনস্তা ও মারধর করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া ভোট প্রথমদিন বিকাল পাঁচটায় শেষ হয়। ভোটে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা অংশ নিচ্ছেন না। তারা বলছেন, অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট হতে পারে না। এক তরফা নির্বাচন তারা হতে দেবেন না বলেও ঘোষণা দেন। তাদের অভিযোগ আগের রাতেই ভোট কেটে রাখেন আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা। 

তবে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি’র আইনজীবীরা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।

বিজ্ঞাপন
তারা সুপ্রিম কোর্টে হামলা ভাঙচুর করেছেন। 

সোমবার সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মনসুরুল হক পদত্যাগ করলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। পাল্টাপাল্টি ইসি কমিটি গঠন করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এর জের ধরে বুধবার ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। 

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিক ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগপন্থি আইজীবীদের গঠন করা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুপুরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগপন্থি নেতাদের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরীর অধীনে নির্বাচন, অন্যথায় আলোচনা সাপেক্ষ নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানান। 
সরজমিন দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকেই সুপ্রিম কোর্টের সব গেট, বার ভবনের সামনে ও ভিতরে বিপুলসংখ্যক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। বার প্রাঙ্গণে তাঁবু দিয়ে ঘেরা নির্বাচনী বুথের সামনে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা জড়ো হতে থাকেন। মাঝে-মধ্যে তাদের প্যানেলের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে  দেখা যায়। সকাল ১০টায় সাদা প্যানেলের আইনজীবীরা ভোট দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ান। এর আগে বিএনপিপন্থিদের গঠিত নির্বাচন কমিশন বার অডিটরিয়ামে অবস্থান করে। আওয়ামী লীগপন্থিদের নির্বাচন কমিশনের প্রধান মনিরুজ্জামন ভোটগ্রহণ শুরু করার কথা বললে বিএনপিপন্থিরা বাধা দেন। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক, ধাক্কাধাক্কি। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ চলে হট্টগোল। আওয়ামী লীগপন্থি নির্বাচন কমিশন ভোট শুরু করতে পুলিশের সহায়তা চান। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকশ’ পুলিশ বার অডিটরিয়ামে যান। এ সময় অডিটরিয়ামের ভিতরে থাকা নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন পুলিশের উপস্থিতির কারণ জানতে চান। এ সময় তারা তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা কি জন্য এসেছেন। এখানে আইনজীবীদের আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় আপনাদের বিশাল বাহিনী কেন? আমাদেরকে কি এরেস্ট করবেন? এ সময় তিনি তার দু’হাত পুলিশের সামনে বাড়িয়ে দেন। এ দফায় পুলিশ চলে যায়। তবে সাদা ও নীল উভয় প্যানেলের আইনজীবীরা অবস্থান করতে থাকেন। স্লোগান-পাল্টা স্লোগান চলে। সকাল ১১টার দিকে সদা দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনকে ভোট শুরু করতে বলেন। ভোট শুরু করতে গেলে বাধা দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল হট্টগোল চলে। ভোট শুরু করতে ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয় দফা পুলিশকে ডাকা হয়। তৎক্ষণাৎ কয়েকশ’ পুলিশ অডিটরিয়ামের ভিতরে প্রবেশ করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ওপরে লাঠিচার্জ করেন। এ সময় বিএনপিপন্থি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও  সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে লাঞ্ছিত করা হয়। আহত হন বেশ কয়েকজন আইনজীবী। 

সাংবাদিকদের ওপরে পুলিশের হামলা: পুলিশের উপস্থিতিতেই আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ সময় সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে ছুটে গেলে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। গণমাধ্যম কর্মীদের পরিচয়পত্র এবং মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও হামলার হাত থেকে কেউ রেহাই পাননি। পুলিশ সাংবাদিকদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেয়। হামলায় সাংবাদিকরা আহত হয়ে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে গেলেও দু’জন ক্যামেরাপারসনকে আটকে রাখে পুলিশ। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশের নির্যাতনে এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার জাবেদ আখতার, জাগো নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ফজলুল হক মৃধা, আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার এসএম নূর মোহাম্মদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি’র সিনিয়র রিপোর্টার জান্নাতুল ফেরদাউস তানভী, বৈশাখী টিভি’র ক্যামেরাপারসন ইব্রাহীম, মানবজমিন-এর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপারসন হুমায়ুন কবির, সময় টিভি’র ক্যামেরাপারসন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসি’র ক্যামেরাপার্সন মেহেদী হাসান মীমসহ  ১০ থেকে ১২ জন গণমাধ্যমকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে এটিএন নিউজের জাবেদ আখতার গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমার হাতে বুম ছিল। গলায় আইডি কার্ডও ঝুলানো ছিল। পরিচয় দিয়েছি। আমি তাকে এও বলেছি আমার পায়ে সমস্যা। তার পরেও আমাকে ওই পুলিশ পা দিয়ে বুকে, পিঠে এলোপাতাড়ি লাথি মেরেছে। আমি তার কাছে মাফ চেয়েছি, এরপরেও মেরেছে।  বৈশাখী টিভি’র ক্যামেরা পারসন বলেন, ভিডিও করায় পুলিশ আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরেছে। মারতে মারতে আমার টি-শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছে। এ ঘটনার বিচার ও জড়িত পুলিশের শাস্তির দাবিতে ল’রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দের নেতেৃত্বে প্রধান বিচারপতির কাছে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি জানানো হয়। প্রধান বিচারপতি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। ন্যক্কার জনক এই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ল’রিপোর্টার্স ফোরাম, দুর্নীতি দমন কমিশন সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক)। 

বিএফইউজে’র বিবৃতিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ ও মারধর করেছে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলাকারী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানানো হয়েছে। ডিআরইউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এ ধরনের হামলা স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় অন্তরায়। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানায় ডিআরইউ। হামলার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে বিভাগীয় শাস্ত্তি নিশ্চিত ও সাংবাদিকদের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।  র‌্যাক’র বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন র‌্যাক। পাশাপাশি হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ওপর ভয়াবহ হুমকিস্বরূপ। দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; তাই অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

নতুন নির্বাচন কমিশন চেয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সংবাদ সম্মেলন: আওয়ামী লীগপন্থি নেতাদের গঠিত ইসি প্রধান মুনসুরুল হক চৌধুরীর অধীনে অন্যথায় আলোচনা সাপেক্ষে নতুন কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা এক তরফা নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অবৈধ দাবি করে ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা ও আইনজীবীদের ওপর হামলা, পুরুষ ও নারী আইনজীবীদের লাঞ্ছিতে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। বিকাল ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এ দাবি জানান। ব্যারিস্টার খোকন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সমিতির একজন নিয়মিত সিনিয়র সদস্য বিচারপতি (অব) মুনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার কমিশনের প্রধানকে পদত্যাগে বাধ্য করেন তারা। কোনো আলোচনা ছাড়াই এডভোকেট মনিরুজ্জামানকে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়। এটি গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ। যে অবৈধ নির্বাচন চলছে সেই নির্বাচনের ব্যালট পেপারে আগের নির্বাচন কমিশনার মুনসুরুল হক চৌধুরীর স্বাক্ষর রয়েছে। এ কমিশন বৈধ নয়। অবৈধ কমিশনের মাধ্যমে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এ কমিশন বাদ দিয়ে নতুন কমিশন গঠন ও ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি না মানলে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যাকে প্রধান করে নতুন কমিশন গঠন করা হয়েছে, সেই কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। পুলিশের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মতো জায়গায় পুলিশ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সেইসঙ্গে হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। এটা বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্কজনক। কোন সাহসে সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকলো। কার নির্দেশে পুলিশ এসে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করলো। প্রধান বিচারপতিকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আপনার অনুমতি ছাড়া কখনোই পুলিশ আসতে পারে না। তিনি বলেন, যারা আমাদের আইনজীবী ও সাংবাদিক ভাইদের রক্ত ঝরিয়েছে মাননীয় প্রধান বিচারপতি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের বিচার করতে হবে। এটা আমাদের দাবি। নির্বাচন বর্জনের প্রশ্নে খোকন বলেন, যেখানে কোনো নির্বাচনই হচ্ছে না। সেখানে বর্জনের প্রশ্ন আসে কীভাবে? সুপ্রিম কোর্টে কোনো ভোট ও নির্বাচন হচ্ছে না। এ সময় খোকন বলেন, যেহেতু প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। তাই সবার মতামত নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে তারপর ভোটগ্রহণ শুরু করতে হবে। কোনো বানানো ও পাতানো কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমাদের দাবি দুটি। এক নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে ভোটগ্রহণ, আরেকটা হলো  আইনজীবী ও সাংবাদিকদের যারা মারধর করে আহত করেছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এই দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। খোকন বলেন, প্রধান বিচারপতির কাছে ৪ বার গিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। 

বিকালে পুলিশ-আইনজীবীদের সংঘর্ষ: বিকালে বিএনপিপন্থি নীল প্যানেলের প্রার্র্থীরা ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ-আইনজীবীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্জে এ সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার ওসমান, এডভোকেট আয়েশা আক্তার, শামীমা আক্তার বানু, ইউনুস আলী রবি, ব্যারিস্টার রবিউল আলম সৈকত, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, নুসরাত সুমাইয়া, মারজিয়া হিরা, আলো বেগম, জামিলা মমতাজ সিমিন, রফিকুল ইসলাম মন্টু, জহিরুল ইসলাম সুমন, মাকসুদুল্লাহ, প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং রুহুল কুদ্দুস কাজল আহত হন। বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয় তাদের এসব নেতাকর্মী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ওপরে অতর্কিত হামলা করেছে। এ সময় উত্তেজিত বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বুথ কেন্দ্র ভাঙচুর করে। ভোট কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। 

গত সোমবার রাতে হঠাৎ করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। এতে দেখা দেয় নতুন জটিলতা। যথাসময়ে ভোটগ্রহণ শুরু করতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’পক্ষই নতুন দু’জনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন। আওয়ামী লীগপন্থিদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন। আওয়ামী লীগের আইনজীবীদের অভিযোগ, ব্যারিস্টার খোকন ও কাজলের নেতৃত্বে ব্যালট পেপার ছিনতাই করা হয়েছে। বিএনপি’র আইনজীবীদের অভিযোগ, এক তরফা নির্বাচনেও তারা রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মারে। 

সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদের প্রার্থী এডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হামলা করে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছে। বারের অনেক ক্ষতি করেছে। কিন্তু তারা নির্বাচন বানচাল করতে পারেনি। এ ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য প্রায় ৯০০০ জন, এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০০০জন ভোট দিতে আসবেন দুই দিনে অর্থাৎ একদিনে ৩০০০জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। এজন্য পুলিশ নিয়োগ দিয়েছে ৫০০জন। অর্থাৎ প্রতি ৬ ছয়জন ভোটারের জন্য পুলিশ মোতায়েন করেছে ১জন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে জাতীয় নির্বাচন করতে চায় তাহলে সারা দেশে তাদের পক্ষে ভোট কাস্ট করতে কত পুলিশ দরকার? আমি যদি ধরি সারাদেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি । ধরেন অর্ধেক(৫০%) ভোট দিতে যাবে, অর্থাৎ ৬ কোটি জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তাহলে ১ কোটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দরকার। বাংলাদেশে সব বাহিনী মিলে ৫ লক্ষ সদস্য আছে বলে মনে হয় না। আবার বাহিনীর সবাই তো আকাম করবে না, অনেক ভালো মানুষ আছে তারা চুপচাপ বসে থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে যদি নির্বাচন করে তাহলে গৃহ যুদ্ধ লাগবে, গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এই আশংকায় করছেন। কারণ বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা আছে, তাদের পীট দেওয়ালে ঠেকে গেছে পক্ষান্তরে সরকার দলীয় লোকজন যেভাবে বেহেশত আছে তাঁরাও ক্ষমতা ছাড়তে চাইবে না। আমার মনে হয় দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। তাই আমি মনে করি দেশকে বাঁচাতে দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া আবশ্যক।

Adv. Md. Abdus Salik
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৯:৫১ অপরাহ্ন

রাতে সিল মারা নেশায় পেয়েছে।

আবুল কাসেম
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৮:১৭ অপরাহ্ন

ODE TO THE 'MOST HONOURABLE' INSPECTOR GENERAL OF POLICE Dear Sir, You are the pride of the country -- the most deserving candidate for getting the "Most Efficient Leadership" prize for your brilliant innovative ideas and actions in turning "The Smart State of Bangladesh", almost into the "Most Innovative Thug State"! What a brilliant performance of your forces at the Bangladesh Supreme Court yesterday in "sizing" those 'stupid' journalists 'bigger than their shoes' and lawyers! You seem to have even outshined your predecessor Benazir Ahmed. No one should ever have the temerity to doubt that you are the best person to ensure a "free and fair" in Bangladesh. Someone should inform the UN Secretary General that you are the best person to lead any UN Peace Keeping Force in the 'savage' African continent.

Unnamed User
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৭:১১ অপরাহ্ন

যারা পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনে পরাজয়ের ঝুঁকি নিতে পারে না, তারা জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের ঝুঁকি নিবে না এটাই তো স্বাভাবিক। পক্ষগুলোর ঐক্যমতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি প্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে কেন? একতরফা কমিটি দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা কেন? ওবায়দুল কাদের খেলতে চেয়েছিলেন কিন্তু এখন দেখছি নিজে না খেলে পুলিশ দিয়ে খেলাচ্ছেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের সবাই কি তাদের দলের মাফিয়া সর্দারদের কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজেদের বিসর্জন দিয়েছেন?

Foyez
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৬:৫৪ অপরাহ্ন

সরকার যদি নিরপেক্ষ নির্বচন দিতে চায় এই বাহিনী তা হতে দেবে না। এর কারণগুলো দেশবাসি জানে। তাছাড়া নেতাদের নির্দেশে, কমিশন ভোটগ্রহণ শুরু করে। ধজভংগ নির্বচন কমিশন। ছি!

Mohiuddin molla
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৬:৩৫ অপরাহ্ন

Bravo!!! Welcome to glorifying spectacles of "[email protected] cum "smart"! Could be the ideal heading of an illuminating reading of contemporary Bangladesh in 2023 for the future generation: THREATS, THUGS IN BLACKCOATS, AND ORGANISED BEATING-- along with "Police shudhu korche porokh kar kotota chormo puru" (thanks to Kobi Nazrul

Unnamed User
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৬:০৫ অপরাহ্ন

In most history books, the most self-consciously visual of all political forms, fascism presented itself t in some vivid primary images, such as: chauvinist demagogue/s haranguing ecstatic supporters; ranks of militants beating perceived opponents including journalists-- deem as “not supportive enough” ; colored-shirted militants beating up members of some demonized opponents; surprise invasions at dawn; and fit soldiers parading through “a captured city”, and so on. There have already been early signs of fascism in Bangladesh over the last few years: such as “unauthorised killings’ by law-enforcement forces, enforced disappearances of political opponents, states' law enforcement authorities becoming part of 'regime's forces', total control of the regime and the ruling party apparatchiks over governing the composition and organisation of the nation’s courts, the nation’s world of intelligentsia and media are increasingly dominated by a servile of self-seeking flatterers (exemplified, for example, in media by Mozammel Babu)—all these are not too different from the characteristics highlighted, for example, by Robert O. Paxton in his article “The Five Statges of Fascism” in The Journal of Modern History, Vol. 70, No. 1, 1998, pp.1-23. What happened during the Bangladesh Supreme Court Lawyer’s Association elections yesterday, is that illustration of one of these stages

Unnamed User
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৫:৫৬ অপরাহ্ন

লজ্জা জনক কলঙ্ক জনক সুপ্রিম কোর্ট বারে ভোট জালিয়াতির বড়ই হতাশা জনক এই দেশে র হয়তো গণতন্ত্র ফিরবেনা।

Engr Tariqul Islam
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৫:১০ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। এটাই তার প্রমাণ।

Digital
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৪:৪২ অপরাহ্ন

পুলিশ এখন বাংলাদেশের সব খমতার অধিকারী। ওরা বন্দুকের জুরে সরকারের মদদে যা ইচ্ছে তাই করছে। ডাকাতি চিন্তাই ঘোম হত্যা অপহরণ সবই এই পুলিশের কান্ড। পুলিশ যেন শিয়ালের মত বনের রাজা হয়ে গেছে। এই পুলিশের হাত থেকে খমতা না গেলে দেশে গনতন্ত্র আসবে না।

Khan
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ২:২৯ অপরাহ্ন

কুলাঙ্গার ভোট চোর ও তাঁদের দোসরদের পক্ষেই এইসব ঘৃণিত ঘটনা ঘটানো সম্ভব। সুপ্রিম কোট ও এদের কালো থাবা থেকে রেহাই পায়নি। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দানবদের প্রতিহত করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই সময়ের দাবি।

AA
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ২:২৪ অপরাহ্ন

এত কিছুর পরও আমরা কিভাবে আশা করি শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। উনারা বাংলাদেশ কে কোথাঁয় নিঁয়ে যাচ্ছে?

শেলী
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১:৪১ অপরাহ্ন

গৃহীত নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে , নতুন নির্বাচন দিতে হবে।সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আইনজীবীদের নির্বাচনটি সম্পন্ন করা যেতে পারে।

আজিজ
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১২:২৭ অপরাহ্ন

'বিজয়ী' দেখাতেই হবে, তা যেকোনো পন্থায় হোক! আর সাংবাদিক পেটানো? এটাতো এখন মামুলি ব্যাপার! তাতে কার কি আসে যায়!!

Nayeem
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১২:১০ অপরাহ্ন

এই ভোটই যদি ঠিক থাক মারামারি পিটা পিটি হয় তাহলে ওই গ্রামগঞ্জের সাধারণ নির্বাচনে কুদ্দুসের মত লোকদের কি অবস্থা হবে ??

khokon
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

এটিএন নিউজের জাবেদ আখতার বলেন " আমি মাফ চেয়েছি, তারপরও মেরেছে" ‌‌‌‌‌ মুহুর্তেই ঐ সাংবাদিকের জন্য সব সহানুভূতি মুছে গিয়ে আমাদের তীব্র ঘৃণা জন্ম নিল। পুলিশের কাছে সাংবাদিক মাফ চায়!! লজ্জা লজ্জা! দুদিন আগে এই সাংবাদিকদের ওস্তাদরা ফ্যাসিবাদের সামনে হাত কচলে দাত বের করে আ কুকুরের মত আনুগত্য দেখিয়ে এসেছেন। পুলিশের বুটের লাথি সাংবাদিক নামক প্রাণীদের প্রাপ্য। ।

Nasym
১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status