ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কলকাতা কথকতা

মুসলিম ভোট মমতার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে, কিন্তু কেন?

জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা

(১ বছর আগে) ১৩ মার্চ ২০২৩, সোমবার, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৪ পূর্বাহ্ন

mzamin

সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। ২০২৪-এ লোকসভা ভোট। ’২৬-এ  বিধানসভা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট।  এমনই সেই ভাঁজ যে, ফুরফুরা শরীফের উন্নয়ন পর্ষদ থেকে একান্ত অনুগত ফিরহাদ হাকিমকে সরিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তপন দাসগুপ্তকে দায়িত্ব দিতে হলো। যদিও তপন ফিরহাদকে সঙ্গে নিয়ে ফুরফুরা ঘুরে এসে বলেছেন, সাগরদীঘির বিষয়টি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র। মুসলিম ভোট তৃণমূলের সঙ্গেই আছে, কিন্তু তাতেও নিশ্চিত হতে পারেননি মমতা। শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ডেকেছেন মমতা-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্য পুরো বিষয়টির পর্যালোচনা করা। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান সাগরদীঘিকে মডেল হিসেবে নিয়ে আশাবাদী।

বিজ্ঞাপন
তিনি বলেছেন, বাম-আইএসএফ জোট নিয়ে আমি অনুকূল মত দিয়েছিলাম। আবার দিচ্ছি, বাম-কংগ্রেস জোট হলে তৃণমূল মুসলিম ভোট আরও হারাবে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম মনে করছেন, সাগরদীঘি থেকে যে বাতাস এসেছে তাতে বসন্ত এসেই গেছে। তৃণমূলের ভোট ব্যাংক ভাঙছেই।

এই অবস্থায় মমতার কপালে কেন চিন্তার ভাঁজ তার দিকে একটু তাকানো যাক। পশ্চিমবঙ্গে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মুসলিম ভোটার আছে ৪৯টি কেন্দ্রে। ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ মুসলিম ভোট ৭৭টি কেন্দ্রে। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মুসলিম ভোট ১১৫ কেন্দ্রে। স্বাভাবিকভাবেই মমতার কপালে চিন্তার ভাঁজ। সাগরদীঘিতে তৃণমূল ২০২১-এ  বিধানসভা ভোটে ৫০ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০২৩-এর উপ-নির্বাচনে তা দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশে।  যদিও সাগরদীঘি একটি উপ-নির্বাচন মাত্র, কিন্তু মমতা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন তার মুসলিম ভোটব্যাংক ভাঙানোর খেলা শুরু হয়ে গেছে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম প্রধান অঞ্চল মালদহের সুজাপুর। এখানে ৯১ শতাংশই মুসলিম ভোটার। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এখানে ভোট পেয়েছিল ৭৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এবার এই ভোটব্যাংক কি অটুট থাকবে? সাগরদীঘি উপ-নির্বাচনে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস হয়তো ঠিকই বলেছেন। তৃণমূলের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি মুসলিম ভোটারদের টিএমসি’র কাছ থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। আরও একটি বিষয় আছে। সংখ্যালঘু সাধারণ মুসলিমদের বক্তব্য, ভোট এলেই তৃণমূল মুসলিমদের ভালো করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভোট চলে গেলেই সব ঠাণ্ডা। তাছাড়া বিধানসভায় মুসলিম বিধায়কের সংখ্যার স্বল্পতাও একটা বড় কারণ মুসলিম ভোটারদের অনাগ্রহের। ২০০৬ সালে মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা ছিল ৪৬। ২০১১ সালে যেবার মমতা ক্ষমতায় এলেন সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫৯। ২০১৬ তে ৫৬। এবার অর্থাৎ ২০২১-এ সবথেকে কম- ৩৬। এরপর মমতার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়বে না তো কার পড়বে!

কলকাতা কথকতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

কলকাতা কথকতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status