খেলা
‘৩০০ উইকেট’
বিসিবির সম্মাননা ফিরিয়ে দিলেন সাকিব
ইশতিয়াক পারভেজ, চট্টগ্রাম থেকে
(২ সপ্তাহ আগে) ৬ মার্চ ২০২৩, সোমবার, ১১:১৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল বিতর্ক নিয়ে শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। তার রেশ না কাটতেই সাকিব জড়ালেন আরেক বিতর্কে। দেশের প্রথম বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে। শুধু তাই নয়, ব্যাট হাতে ৭৫ রান ও ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জেতানোর নায়কও তিনি। সিরিজ শুরুর আগে থেকেই তার এই মাইলফলকের অপেক্ষায় ছিলো টাইগার ক্রিকেটের ভক্তরা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিও তার এই অর্জনে সম্মান জানাতে আগে থেকেই ক্রেস্ট বানিয়ে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন সাকিব। পুরস্কার মঞ্চে তার নামও ঘোষণা করতে নিষেধ করেন তিনি। সেই সময় তাকে বেশ রাগান্বিতও দেখা যায়।
মানবজমিন পরবর্তীতে বিসিবির বেশ কয়েকটি সূত্র থেকে এই ঘটনাটি নিশ্চিত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ‘ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাকিব স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই সম্মাননা নিবেন না।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সাকিব ও তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত কারণে একে অপরের সঙ্গে কথা বলেন না। তাদের এই বৈরী সম্পর্কের কারণে নষ্ট হচ্ছে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ। তবে দ্বন্দের কথা স্বীকার করে নিলেও ড্রেসিংরুমে কোনো প্রভাব পড়ছে না বলে দাবি করেন তামিম। তিনি বলেন, দেশের জন্য যখন দু’জন মাঠে নামেন তখন কোনো কিছুই ম্যাটার করে না।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দু’জনকে তেমন কোনো কথা বলতে না দেখলেও দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক দেখা যায়। চট্টগ্রামে তৃতীয় ম্যাচের আগে তারা দু’জন কথা বলেছেন উইকেট নিয়েও। শেষ ম্যাচে দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেন সাকিব। মাঠে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফরম্যান্সও করেন। এই ম্যাচে তিনি স্পর্শ করেন দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক। কিন্তু এরপরই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন ভিন্নরুপে। ম্যাচ সেরা হওয়ার পুরস্কার নিলেও মাইলফলক ছোঁয়ার যে সম্মাননা দিতে চাওয়া হয়েছিল তা তিনি নেননি। পরে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সম্মাননা ক্রেস্টটি তাকে হয়তো পরে দেয়া হবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে- যা তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নেননি তা তিনি পরে নিবেন কি-না! এ বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে স্বস্তির জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর সেই জয়ে আরও একবার নায়ক সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচেই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব। সেই সাথে ওয়ানডে ইতিহাসের মাত্র ১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ চট্টগ্রামে মাঠে নামার আগে ওয়ানডেতে সাকিব আল হাসানের উইকেট সংখ্যা ছিল ২৯৬ টি। নবম ওভারের শেষ বলে ফিলিপ সল্টকে ফেরানোর পর পরের ওভারের প্রথম বলেই আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জেসন রয়কেও ফেরান তিনি।
দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে'র প্রথম ওভারে বল করতে এসেই ইংলিশদের নবম উইকেট তুলে নেন সাকিব, রেহান আহমেদকে মেহেদী মিরাজের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। সেই সাথে সাকিব উঠে যান ইতিহাসের পাতায়। বিশ্বের ১৪তম বোলার, ৬ষ্ঠ স্পিনার আর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৩০০ ওয়ানডে উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন তিনি। যা ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম, মাত্র ২২৭ ইনিংসে। এছাড়াও ওয়ানডে ইতিহাসের মাত্র ৩য় ক্রিকেটার হিসেবে ৬০০০ রান ও ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব। এর আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি। জয়সুরিয়ার চেয়ে ১৭০ ম্যাচ কম খেলে ও আফ্রিদির চেয়ে ৮৭ ম্যাচ কম খেলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব। শুধু তাই নয়, এক ওয়ানডেতে ৫০ রান ও ৪-উইকেটের মাইলফলক সর্বোচ্চ বার ছোঁয়া শহীদ আফ্রিদির রেকর্ডে ভাগও বসিয়েছেন সাকিব। তবে, এত অর্জনের পর বিসিবি’র সম্মানা না নেয়া সাকিবকে ফেলছে আরো একবার বিতর্কের মুখে।
পাঠকের মতামত
Man of the Match ta thik e nilo, karon oita J $1000. ak lak taka. Crest dekhe e o nai nai. O holo TAKAR Pagol
সাকিবের এটা উচিত হয়নি।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ৩০০ উইকেট শিকারীকে কি প্রধানমন্ত্রী গন সম্বর্ধনা দিয়েছেন নাকি?
বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তারদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করা উচিত। এবং ভোটে খেলোয়াড়দেরও অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত, তাতে তারা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে বিসিবির নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। একজন এক জায়গায় অনেক বছর থাকলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। যা খেলোয়াড়সহ অনেকেই বলতেও পারেন না আবার মেনেও নিতে পারেন না। আবার যিনি থাকেন তার মাঝেও তার বিকল্প নাই মনে করার ভাব আসতে পারে।
ব্যাপারটা নিয়ে একান্তে সাকিব আল হাসানের সাথে কথা বলা উচিৎ বিসিবি কর্মকর্তাদের। সাকিব সাড়া বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সন্মানের স্হানে পৌঁছে দিয়েছেন। তার অবদানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সাকিব, সাকিবই। সাকিবের যথাযথ সন্মান রক্ষা করা কর্তৃপক্ষের দায়ীত্ব।
BCB officials should know what they should talk and what they should not.
As BCB President Papan talks too much and pokes into unnecessary issues. He’s supposed to be reserved so that none is compelled to make comment about him - HE lacks personality.
জানিনা কি মনঃপীড়া ক্রিয়শীল ছিল। তবে বিগত কোন সন্মানহানিকর ঘটনা স্বরনে বা পুরস্কার কারো বদান্যতায় দক্ষিনার মত এলে কেন নেবেন । বিশ্বসেরার জন্য যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে আগ্রহের ঘাটতি থাকলে তা বর্জন করাই ভব্যতা।