কলকাতা কথকতা
রাজভবন-নবান্ন’র দূরত্ব আরো বাড়লো কেন?
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(১ মাস আগে) ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৩১ অপরাহ্ন

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয় কোচবিহারের দিনহাটায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত তীব্র হলো। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রোববার রাতে রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়ে এই বিষয়ে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। অভিযোগ, গত শনিবার নিশীথ বাবুর কনভয় দিনহাটায় আক্রান্ত হয় তৃণমূলের সমর্থকদের দ্বারা। রাজ্যপাল আনন্দ বোস চিঠিতে লিখেছেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত, পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিবিরোধী। এই ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এইরকম ঘটনা ঘটতে থাকলে রাজভবন চুপ করে বসে থাকতে পারে না। সোমবার নবান্ন এই চিঠিটি নিয়ে বিবেচনার পর উত্তর দেবে। তবে, তারা চিঠিটিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। শুভেন্দু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠিও দিয়েছেন রাজ্যে ৩৫৫ কিংবা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি জানিয়ে। ৩৫৫ ধারার অর্থ-রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নিয়ে যাওয়া।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, দুটোই হাস্যকর দাবি। নবান্ন রাজ্যপালের সচিব পদের জন্য নন্দিনী চক্রবর্তীর জায়গায় অত্রি ভট্টাচাৰ্য, বরুণ রায় এবং অজিত রঞ্জন বর্ধনের নাম পাঠিয়েছিল। কিন্তু, রাজভবন সূত্রের খবর যে, এই তিনটি নামের কোনোটাই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না। এনিয়ে নতুন সংঘাত হতে পারে। কারণ সচিব হিসেবে রাজভবনের পছন্দ সুব্রত গুপ্তের নাম।
জগদীপ ধনখরের জায়গায় সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হয়ে আসার পর মনে করা হয়েছিল, রাজভবন-নবান্ন সংঘাত কমবে। রাজ্যপালের বাংলা শেখার জন্য রাজভবনে হাতেখড়ি উৎসব অথবা সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ডি.লিট প্রাপ্তিতে রাজ্যপালের মমতাস্তুতি দেখে মনে হয়েছিল ক্ষমতার দুই ভরকেন্দ্র রাজভবন-নবান্ন’র সংঘাত বোধহয় কমলো। বিজেপি নেতারা বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেন নি। এরপরই সিভি আনন্দ বোস দিল্লি যান। জগদীপ ধনখরের সঙ্গে দেখা করেন। ফিরে এসেই ভোল পাল্টায় রাজ্যপাল। সেই আনন্দ বোস যেন ফিরে আসেন যিনি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ৬০ পাতারও বেশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন। সোমবার রাজ্য সরকার আনন্দ বোসের চিঠির জবাবটি কী দেয় তা নিয়েই কৌতূহল রাজনৈতিক মহলে।