ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ

বাজিগর হিরো আলম এবং নির্বাচনের পর নিরাপদ আলোচনা

তারিক চয়ন
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

স্মরণ করা যেতে পারে কাদেরের উক্ত বক্তব্যের জবাবে হিরো আলম বেশ  যৌক্তিকভাবে বলেছিলেন, “ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন,  হিরো আলম পার্লামেন্টে গেলে নাকি পার্লামেন্ট ছোট হবে। আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্ট  ছোট করা হয় তবে যখন মনোনয়ন কিনছি, তখন কিন্তু আপনাদের বলা উচিত ছিল, হিরো আলমের কাছে  যেন মনোনয়ন বিক্রি করা না হয়। আপনারাই বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ, সবাই নির্বাচন করতে পারবে। সবার যদি নির্বাচন করার কথা আইনে থাকে, তাহলে আমি  ভোটে দাঁড়ালে সংসদ ছোট হবে কেন?” হিরো আলমের এমন বক্তব্যকে প্রায় সবাই স্বাগত জানিয়েছেন। তাছাড়া হিরো আলমকে কটাক্ষ করে  কেউ প্রশ্ন করলে দমে না গিয়ে প্রশ্নকর্তাকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে  দেয়াটাও মানুষ বেশ উপভোগ করছে

 

আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল বলিউড মুভি বাজিগর। আব্বাস মাস্তান পরিচালিত ওই হিন্দি মুভিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন শাহরুখ খান। এর আগের বছর (১৯৯২) দিওয়ানা মুভি দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু হলেও মূলত বাজিগর মুভিতে খল চরিত্রে অভিনয় করেই নিজেকে সবার কাছে মেলে ধরেছিলেন কিং খান। এর পরের ইতিহাস তো সবারই জানা। ৫৮ বছর বয়সী বলিউড বাদশাহ’র অভিনীত পাঠানজ্বরে এই মুহূর্তেও  ছেলে-বুড়ো সবাই কাঁপছে।  সেই বাজিগর মুভিতে শাহরুখের একটি সংলাপ আজও লোকের মুখে মুখে।

বিজ্ঞাপন
হিন্দিতে বলা ওই সংলাপের বাংলা করলে দাঁড়ায়: অনেকসময় জেতার জন্য কিছু হারাতেও হয়। আর, হেরেও  যে জিতে যায়, তাকে ‘বাজিগর’ বলে। সম্প্রতি, বগুড়ার দু’টি আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাওয়া বহুল আলোচিত-সমালোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম সেই অর্থে  যে বাজিগরে পরিণত হয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ কি আছে?

 

 

প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক সারফুদ্দিন আহমেদ ‘হিরো আলম কি আসলেই  হেরেছেন’ শীর্ষক কলামে লিখেছেন, “অস্তগামী সূর্যকে  যেমন কেউ প্রণাম জানায় না,  তেমনি ভোটে হেরে যাওয়া  লোকের দিকে আগ্রহভরে মাইক্রোফোন এগিয়ে দেয়া হয় না। কিন্তু হিরো আলমের  ক্ষেত্রে উল্টোটা ঘটলো।  দেখা যাচ্ছে, হিরো আলমের যে প্রতিদ্বন্দ্বীরা জিতেছেন, তাদের নিয়ে সাধারণ লোকের বা সংবাদমাধ্যমের কোনো আগ্রহ  নেই। অনেকে বিজয়ী প্রার্থীর নামও জানেন না, জানার আগ্রহও তাদের নেই। তাদের সব আগ্রহ ‘হারু প্রার্থী’ হিরো আলমকে নিয়ে।”

সত্যিই তো! দেশের বিভিন্ন অঙনের বিভিন্ন তারকা-মহাতারকাদের ভিড়ে এই মূহূর্তে যাকে নিয়ে মাঠে-ঘাটে, হাটে-বাজারে, চায়ের  দোকানে, টিভি টকশো কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তিনি হিরো আলম। দেশের সবচেয়ে বড় দু’দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুই নেতা থেকে শুরু করে তাদের এবং অন্যান্য দলের সর্বস্তরের কর্মী-সমর্থকরাও যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন তিনিও হিরো আলম। অবশ্য তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর চর্চার খবর নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন সূত্র  থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে: হিরো আলমের ইউটিউবে আপলোড করা সংগীত ভিডিও নিয়ে ২০১৬ সালের দিকে সামাজিক    যোগাযোগের মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা ট্রল এবং মিম  তৈরি শুরু করলে দ্রুতই তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এ সময় মুশফিকুর রহিমসহ আরও  বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি তারকা (ক্রিকেটার) আশরাফুল আলমের সঙ্গে  সেলফি তুলে সামাজিক  যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। এরপর বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি,  ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডেসহ ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ফলে তিনি ভারতীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মাঝে আলোচিত হন।  ইয়াহু ইন্ডিয়ার এক জরিপ অনুসারে সে সময় ভারতীয় অভিনেতা সালমান খানের  চেয়ে হিরো আলমকে বেশিবার গুগলে অনুসন্ধান করা হয়েছে। ২০১৭ সালে তার অভিনীত প্রথম ছবি মার ছক্কা মুক্তি পায়। ২০১৮ সালে তিনি বিজু দ্য হিরো নামে একটি বলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ ছাড়া, বেশকিছু বিজ্ঞানপন চিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আবারো আলোচনায় আসেন। একই বছর গুগল অনুসন্ধানের প্রবণতায় বাংলাদেশে দশম অবস্থানে থাকেন। তার জীবনী অবলম্বনে মহেশ রূপরাও ঘোদেশ্বর কর্তৃক নির্মিত ও পরিচালিত হিরো আলম শিরোনামের হাস্যরসাত্মক মঞ্চ নাটক ২০১৯ সালের ৬ই জানয়ারি আহমেদাবাদে মঞ্চস্থ হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত মঞ্চ নাটকটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। ২০১৯ সালের মে মাসে  সেটি মুম্বাইতে মঞ্চস্থ হয়। এরপর তিনি বেশকিছু গান ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়েন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কয়েকটি রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুলগীতি। তার বিরুদ্ধে এগুলো বিকৃত করে গাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালের ২৭শে জুলাই, বাংলাদেশে পুলিশের  গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হিরো আলমকে তাদের কার্যালয়ে  ডেকে নিয়ে যায়। পরে কখনো অনুমতি ছাড়া পুলিশের  পোশাক পরবেন না, বিকৃত করে রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত গাইবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। ছাড়া  পেয়ে হিরো আলম পুলিশের বিরুদ্ধে তার প্রতি মানসিক নির্যাতন ও অশোভন আচরণ করার অভিযোগ আনেন। হিরো আলমের উক্তি অনুসারে পুলিশ তাকে বলে যে,  “তোর  চেহারা কি হিরোর মতো? আয়নায় একবার নিজের  চেহারা দেখেছিস? হিরোদের  চেহারা  কেমন হয় সিনেমায়  দেখিস না? তোর হিরো আলম নাম পরিবর্তন করবি।” হিরো আলমকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের গান গাইতে নিষেধ করায় গোয়েন্দা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়। এছাড়া নাম থেকে ‘হিরো’ শব্দটি বাদ দেয়া ও চেহারা নিয়ে তাচ্ছিল্য করার বিষয়টিকে অনেকে বর্ণবাদী আচরণ বলে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি বিবিসি, এএফপিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও প্রকাশিত হয়।

সুতরাং, একবাক্যে বলা চলে, হিরো আলম সবসবময়ই আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন। তার জন্য এসব নতুন কিছু নয়। এই বিবেচনায় বলা যায়, আলোচনায় আসার জন্য তিনি নির্বাচন করেননি। নির্বাচনের একেবারে শুরু  থেকে এখন পর্যন্ত তার সব কার্যক্রমও একই বার্তা দিচ্ছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর একটি বেসরকারি টিভির টকশোতে অংশ নিয়েও বেশ দৃপ্তকণ্ঠে তিনি সেটি উচ্চারণ করেছেন। ‘জনাব হিরো আলম, আপনি কি মনে করেন না, এই ধরনের বাকবিতণ্ডা-বিতর্ক সৃষ্টি হওয়াতে আপনার নির্বাচনী মাঠে বেশ লাভ-ই হচ্ছে?’ উপস্থাপিকার এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কী কারণে, কীভাবে লাভ হলো?’ উপস্থাপিকা তখন বলেন, ‘এই যে আপনি সবসময় আলোচনায় থাকছেন। গুরুত্বপূর্ণ লোকেরা আপনাকে নিয়ে কথা বলছে...।’ জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘আমি তো মিডিয়ার ব্যক্তি। আমি তো অভিনয় করে, বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে সেই হিসেবে আলোচনায় থাকি। রাজনীতি করে কেন আমাকে আলোচনায় থাকতে হবে?’ তাছাড়া, নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদে গিয়ে অন্যদের আলোচনায় থাকার বিষয়টি নিয়েও তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

স্বীকার করেন বা নাই করেন এটা লক্ষণীয় যে এই মুহূর্তে হিরো আলম ব্যাপক আলোচনায়, ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। তবে, সেইসঙ্গে এটাও  বেশ স্পষ্টভাবে লক্ষণীয়  যে, অতীতে হিরো আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম  থেকে শুরু করে সর্বত্র উপহাসের পাত্র হলেও এবার  সেই তিনি-ই ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। হিরো আলম যা-ই বলছেন, মানুষ তা-ই গিলছে। এক্ষেত্রেও হিরো আলম ‘বাজিগর’ হওয়ার প্রমাণ রাখছেন। স্যার ডাকতে হবে বলে কিছু শিক্ষিত মানুষ তাকে হারিয়ে দিয়েছে-হিরো আলমের এমন অভিযোগের বিষয়ে সারফুদ্দিন আহমেদ যথার্থই লিখেছেন, “এ অভিযোগকে কতোজন লোক সত্য বলে মনে করেন, তা নিয়ে কোনো জরিপ হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত যতজন লোকের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের  কেউই অভিযোগটিকে ফালতু বলে উড়িয়ে দেননি। অর্থাৎ পাবলিক পারসেপশন হলো, হিরো আলম একটি সুবিধাবঞ্চিত সমাজ থেকে উঠে আসার কারণে তার প্রতি অবমাননা করা হলো। নির্বাচনী গণতন্ত্রে পাবলিক পারসেপশন বা জনধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রাহ্য বিষয়।” বোঝাই যাচ্ছে, পাবলিক পারসেপশন বা জনধারণা এখন আর কারও নয়, ‘বাজিগর’ হিরো আলমেরই পক্ষে। তার বক্তব্য যদি মিথ্যাও হয়, অর্থাৎ যদি নির্বাচনে কোনোরূপ কারচুপি নাও হয়ে থাকে তাহলেও কি জয়ী নন হিরো আলম? রাজনীতির সম্পূর্ণ বাইরে  থেকে আসা একজন মানুষ  কোনো ধরনের দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করে মাত্র ৮৩৪  ভোটে হেরেছেন। অন্যান্য, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর যেখানে গণমাধ্যমে বিজয়ী প্রার্থীর খবর দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়, সেখানে হিরো আলমই সাম্প্রতিককালে একমাত্র ব্যক্তি যার পরাজয়ের খবর নিয়েই সবার আগ্রহ! প্রথম আলো’র মতো পত্রিকা প্রথম পাতায় হিরো আলমের ছবি দিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘৮৩৪ ভোটে হার হিরো আলমের’। মানবজমিনসহ  দেশের অন্যান্য প্রধান প্রধান গণমাধ্যমও হিরো আলমের পরাজয় নিয়ে আলাদা করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এমনকি ভিনদেশী পত্রিকা ‘এই সময়’ ভক্ত পরিবেষ্টিত হিরো আলমের ছবি দিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘জয়ের আশা অপূর্ণ‌ই, ৮৩৪ ভোটে হার হিরো আলমের’।

২০২০ সালে হিরো আলমের দ্বিতীয় সিনেমা ‘সাহসী হিরো আলম’ মুক্তি পেয়েছিল। নির্বাচনী মাঠে প্রবল পরাক্রমশালী প্রতিপক্ষের সামনে একটানা দাঁড়িয়ে থেকে হিরো আলম যে তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করা বিরোধী দলগুলোর অনেক  নেতাকর্মীকেই সাহসের শিক্ষা দিয়েছেন সেকথা বলাবাহুল্য। গত বছর ডিবি পুলিশ কর্তৃক তাকে ডেকে নেয়ার ঘটনার স্মৃতিচারণ করে সামাজিক  যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন,“ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ফিরে এসে সর্বশেষ কাকে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলতে দেখেছেন? আমার স্মরণে এই মুহূর্তে একমাত্র হিরো আলম ছাড়া অন্য কারও নামই আসছে না।” এই সেদিনও হিরো আলমকে নিয়ে ইতিবাচক  কোনো পোস্ট যেখানে চোখে পড়তো না, সেখানে তাকে নিয়ে স্তুতিবাক্যের রচনা এখন ভুঁড়িভুঁড়ি। সংসদের সব আসন ছাড়ার পর বিএনপি সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছিল ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে একজন লিখেছেন, “হিরো আলম তো চুরিও করে না, ডাকাতিও করে না। সে খুব সচেতনভাবে সমালোচিত হয়ে তার ভিউয়ার্স ও ফলোয়ার্স বাড়ায়। বিনিময়ে সে ইউটিউব  থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করে। চোর-গুণ্ডা-বদমায়েশ-মাদক ব্যবসায়ীরা সংসদে গেলে সংসদ ছোট হয় না? ছোট হয় হিরো আলম গেলে?”

স্মরণ করা যেতে পারে কাদেরের উক্ত বক্তব্যের জবাবে হিরো আলম বেশ  যৌক্তিকভাবে বলেছিলেন, “ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন,  হিরো আলম পার্লামেন্টে গেলে নাকি পার্লামেন্ট ছোট হবে। আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্ট  ছোট করা হয় তবে যখন মনোনয়ন কিনছি, তখন কিন্তু আপনাদের বলা উচিত ছিল, হিরো আলমের কাছে  যেন মনোনয়ন বিক্রি করা না হয়। আপনারাই বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ, সবাই নির্বাচন করতে পারবে। সবার যদি নির্বাচন করার কথা আইনে থাকে, তাহলে আমি  ভোটে দাঁড়ালে সংসদ ছোট হবে কেন?” হিরো আলমের এমন বক্তব্যকে প্রায় সবাই স্বাগত জানিয়েছেন। তাছাড়া হিরো আলমকে কটাক্ষ করে  কেউ প্রশ্ন করলে দমে না গিয়ে প্রশ্নকর্তাকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে  দেয়াটাও মানুষ বেশ উপভোগ করছে। উদাহরণস্বরূপ: আপনার নির্বাচন করার মতো কী  যোগ্যতা আছে? জনৈক সাংবাদিকের এ ধরনের এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেছেন, “নায়িকা মাহিয়া মাহি চেষ্টা করলো, ক্রিকেটার মাশরাফি নির্বাচন করলো, মমতাজ নির্বাচন করলো, তাদেরকে কখনো এই প্রশ্ন করেছেন? তাদের কী যোগ্যতা আছে এমপি ইলেকশন করার? তারা তো ক্রিকেট খেলেছে, কেউ অভিনয় করেছে, কেউ গান গাইছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ এ বিষয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, “হিরো আলম ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থী হলে তার বিজয়  ঠেকানোর শক্তি কারও ছিল না। তিনি কী বলেন, কীভাবে বলেন, কোন সামাজিক অবস্থানের- কিছুই বিবেচ্য হতো না।”  সেইসঙ্গে হিরো আলমকে নিয়ে নিরাপদ আলোচনায় মত্ত (সম্ভবত) সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে তিনি এটাও লিখেছেন, বিশেষ কাউকে নিয়ে নিরাপদ আলোচনার পরিণাম হবে আপনি ‘নির্বাচনের’ পরে আলোচনা করতে পারবেন,  ভোটের দিন ভোট দিতে যেতে পারবেন না, অথবা যাবেন না -ফলাফল আগেই জানেন বলে। ক্ষমতাসীনরা সেটাই চায় বললে বাড়িয়ে বলা হবে? আপনি ভোট দিলেন কি দিলেন না তাতে ক্ষমতাসীনদের কিছুই যায় আসে না।

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status