ঢাকা, ৮ মে ২০২৪, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

৩৯ হাজার আসন ফাঁকা রেখেও শিথিল হচ্ছে না ভর্তি যোগ্যতা

পিয়াস সরকার
২২ মে ২০২২, রবিবার
mzamin

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত কলেজসমূহে স্নাতক প্রথম বর্ষে ফাঁকা রয়েছে ৩৯ হাজার আসন। ফের শুরু হচ্ছে ২০২২ সালে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে মোট আসন ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার। এর মধ্যে প্রথমবর্ষে ভর্তি হয়েছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার শিক্ষার্থী। ব্যাপক পরিমাণ আসন ফাঁকা থাকার পরও ভর্তি   যোগ্যতা শিথিল না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক ভর্তি প্রত্যাশী।  ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদনের যোগ্যতা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এতে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রে চাওয়া হয়েছে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫। আর মানবিক বিভাগের জন্য এসএসসি’তে ৩.৫ ও এইচএসসি’তে ৩.০। কিন্তু এই যোগ্যতা পূরণ না করতে পারায় অনেক শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারছেন না। পূর্বে অনার্সে আবেদনের জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি মিলিয়ে সর্বনিম্ন্ন ৫ (২.৫০+২.৫০) পয়েন্ট চাওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন
ব্যবসায় শাখা ও বিজ্ঞান শাখার জন্য এসএসসিতে সর্বনিম্ন্ন ৩.০০ চাওয়া হয়েছিল।

তাহসেন বেন আলম নামে এক শিক্ষার্থী এসএসসি’তে পেয়েছেন ৩.৪৪ ও এইচএসসি’তে ৪.৬৭। তিনি বলেন, আমার স্বপ্নপূরণ হবে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও বড় হয়ে গেছে। রেহানা আক্তার এসএসসি’তে মানবিক বিভাগ থেকে পেয়েছেন এসএসসি’তে ৩.৪০ এবং এইচএসসি’তে একই বিভাগ থেকে ৩.৭০। তিনি বলেন, ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমাদের আবেদন করতে দেয়া হোক। সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে আমাদের সুযোগ এলে আমরা ভর্তি হবো। কিন্তু আমরা যদি আবেদনই করতে না পারি তাহলে শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে যাবে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরাতো অন্যের সিট চাইছি না। আমরা চাই ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে ভর্তি করানো হোক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি আমরা না পড়তে পারি তবে আমাদের শিক্ষাজীবনের এখানেই ইতি ঘটবে। কারণ আমাদের সকলের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ নেই। তারা আরও বলেন, শিগগিরই আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর আবেদন জানাবো।

করোনার কারণে ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালে ফল প্রকাশ হয়। এই ফলে দেখা যায়, এই পরীক্ষার ফলে রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন জিপিএ-৫ পান। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলে সার্বিক পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন।
এই ফল অনুযায়ী দেখা যায়, সব বিভাগ ও বোর্ড মিলিয়ে ৩.৫ থেকে ৩.০০ পেয়েছেন ৪ লাখ ৯৮৪ জন শিক্ষার্থী। ৩.০০ এর কম ফল পেয়েছেন ৫ লাখ ১ হাজার ৬৯১ জন। ২২.৩৯ শতাংশ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিবেচনায় নেই। সেইসঙ্গে ৩.০০ থেকে ৩.৫০ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও বড় একটি অংশ যোগ্য বলে বিবেচনায় আসবে না। সব মিলিয়ে সাড়ে ছয় থেকে সাত লাখ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
এখন প্রশ্ন উঠছে বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থীর আসন ফাঁকা রেখে ভর্তি যোগ্যতা শিথিল না করে লাভটা কি? ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আসন ফাঁকা রেখেই শেষ হয়েছিল ভর্তি প্রক্রিয়া। সে সময় একাধিকবার শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও ফাঁকাই রাখা হয় আসন।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মো. মশিউর রহমান বলেন, অনার্সে আমাদের কোনো কোনো সরকারি কলেজে ধরেন ২০০ বা ২৫০ সিট দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেসরকারিতে একই পরিমাণ সিট দিলে শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। কিন্তু সরকারিতে ৪০০ থেকে ৫০০ জন আবেদন করেন। এই কারণে সিট ফাঁকা থাকে। বেসরকারি কলেজের সিট টেনে বেসরকারি কলেজে দেয়া যাবে না। এছাড়াও অনেক সময় শিক্ষার্থী চলে যায়। আমরা রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাই। তৃতীয় মেধা তালিকা দিয়ে আসন পূরণ করা সম্ভব কিন্তু ততদিনে অনেক ক্লাস হয়ে যায়। দুই মাস আগে ভর্তি করিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হলে ঘাটতি রয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন আসে। যার কারণে আমরা যোগ্যতা সামান্য বাড়িয়েছি। আমরা হিসাব করে দেখেছি কম ফল নিয়ে মাত্র দুই থেকে তিন হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বাকিরা ভালো ফল নিয়েই ভর্তি হয়। সে কারণে এতোসংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করবে। যদিও ২৫০ টাকা বেশি হয় কিন্তু অকারণে কেন দেবে টাকাটা। আর তাদের শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তারা চাইলে ডিগ্রি কিংবা প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status