শেষের পাতা
ইউরোপের বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪২ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৯ জানুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবারইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৪১.৭৬ শতাংশ। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তথ্য অনুসারে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সারাবিশ্ব থেকে ৮৬.৭৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। ২০২১ সালের ওই সময়ের তুলনায় যা ২৪.৪১ শতাংশ বেশি। সংস্থাটির হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন বেশি।
এ সময়ে বাংলাদেশ থেকে ১৯.৪০ বিলিয়ন বা এক হাজার ৯৪০ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে ইইউ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৩.৬৯ বিলিয়ন বা এক হাজার ৩৬৯ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। সেই হিসাবে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ পোশাক আমদানি বাড়িয়েছে ৪১.৭৬ শতাংশ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাক রপ্তানিতে প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। এরপরেই দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বর্তমানে চীন ২৯.৩৯ শতাংশ রপ্তানি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে বড় পোশাক সরবরাহকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি বছরওয়ারি ২২.৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ২৫.৪৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে তুরস্ক থেকে আমদানিও বছরওয়ারি ১২.৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এ ডাটা গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। সেই হিসেবে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ ভালো করছে। তবে, এই সময়ের পর ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে। তিনি বলেন, যুদ্ধ ও অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পোশাক রপ্তানি কমছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পোশাক আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। তবে অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো করছে। বাংলাদেশের পোশাকের মান ও সবুজ কারখানা গড়ে তোলা তথা অবকাঠামোগত উন্নতির কারণে বাংলাদেশের পোশাকের প্রতি ঝোঁক তাদের আগের মতোই আছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১৬.৬১ শতাংশ বেড়ে ১১.৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে জার্মানিতে রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.৫৪ শতাংশ বেড়ে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে স্পেন এবং ফ্রান্সে আমাদের রপ্তানি যথাক্রমে ১৭.৬২ শতাংশ এবং ৩৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়ে ১.৭০ বিলিয়ন ডলার এবং ১.৪১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে তৈরি পোশাক পণ্যের দাম ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রপ্তানি আয়ের নতুন রেকর্ড অর্জনে সহায়তা করেছে তৈরি পোশাক খাত। একই সঙ্গে তা নভেম্বরে হওয়া রেকর্ডকেও ভেঙেছে। ডিসেম্বরে ৯ শতাংশের কিছু বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি হয়েছে ৫.৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা একক মাসের হিসাবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।