ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

আন্তর্জাতিক

সরকারি পদে অযোগ্য হবেন ডনাল্ড ট্রাম্প!

মোহাম্মদ আবুল হোসেন
২৬ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার
mzamin

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কি ঝুলে যাবে! কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তার দল রিপাবলিকান যথেষ্ট ভালো করেছে। এই নির্বাচনে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে নিজের দলেই। তিনি যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন, তাদের বেশির ভাগেরই ভরাডুবি হয়েছে। অন্যদিকে জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত সিনেটর রন ডি’স্যান্তিসের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন। নির্বাচনের আগেই ডি’স্যান্তিসকে তিনি হুমকি দেন। বলেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন। তারপরও যদি ডি’স্যান্তিস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে ডি’স্যান্তিস সম্পর্কে তার স্ত্রীও যে গোপন কথা না জানেন, তা প্রকাশ করে দেয়ার হুমকি দেন ট্রাম্প। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক বিতর্ক। দলের মধ্যেও বিতর্ক। রিপাবলিকানরাই তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।

বিজ্ঞাপন
ট্রাম্পকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। দৃশ্যত রিপাবলিকান শিবিরে গ্রুপিং দেখা দিয়েছে। 

ফলে দলের কর্তৃত্ব ট্রাম্পের হাতে দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। কংগ্রেশনাল প্যানেল ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে সহিংসতার তদন্ত করছে। তারা এরই মধ্যে এই হামলা নিয়ে ৮৪৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বহুপক্ষীয় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতসব ঘটনার পর ট্রাম্পের রাজনীতির ভবিষ্যৎকে ক্ষুণ্ন্ন করবে? এমন আলোচনা চারদিকে। কংগ্রেশনাল প্যানেল তাকে অভিযুক্ত করার পর তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন কিনা অথবা দলের নেতৃত্বে থাকবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এই তদন্তে কখনোই ‘ডনাল্ড’ অথবা ‘ট্রাম্প’- শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। তাদের তদন্ত রিপোর্টে বেশকিছু বিষয়, লক্ষ্য, কার্যক্রম, তথ্যপ্রমাণ এবং প্রভাবশালী ফ্যাক্টর সহ বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তাদের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে সুপারিশ করা হয়েছে কীভাবে ভবিষ্যতে এমন হামলা এড়ানো যায়। 

৬ই জানুয়ারি ফৌজদারি অপরাধের জন্য যারা দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার একটি রোডম্যাপ দেয়া হয়। মূলত: এই রিপোর্টে জোর দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের দিকে। এতে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সাবেক উপদেষ্টা এবং পরিবারের সদস্যদের নতুন ও বিস্তারিত সাক্ষ্য যোগ করা হয়েছে। এতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম- ইলেকটোরাল কলেজ আইন নতুন করে লিখতে হবে। যাতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে ভোট ‘ব্লক’ করে দেয়ার জন্য যে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন- তা যেন পরিষ্কারভাবে আটকে দেয়া যায়। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ইলেকটোরাল কাউন্ট অ্যাক্ট হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে।  প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে কেন্দ্রীয় তহবিল বিষয়ক একগাদা বিল পাঠানোর কথা। তার সঙ্গে এই বিলটিও তার টেবিলে যাওয়ার কথা। তিনি এতে স্বাক্ষর করার পর তা আইনে পরিণত হবে। বিলটি শুক্রবার প্রতিনিধি পরিষদে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।  সোমবার চারটি অভিযোগের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের বিচারের জন্য সুপারিশ করেছে। 

বর্তমানে এই সুপারিশ জমা আছে আইন মন্ত্রণালয়ে। প্যানেল এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার শেষ সপ্তাহগুলোতে আভ্যন্তরীণভাবে এক নাটকীয়তায় রূপ নেয়। বর্তমান ও সাবেক উপদেষ্টারা কোন বিষয়টিতে তদন্তে অগ্রাধিকার দেয়া হবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে এক রকম লড়াই হয়।  এসব বিরোধ থাকা সত্ত্বেও আইনপ্রণেতা এবং নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে কৃতিত্ব দেন। কারণ, এই কমিটি ৬ই জানুয়ারির ওই দাঙ্গায় ট্রাম্পের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য দেয়। যা থেকে বোঝা যায়, তার জড়িত থাকার কারণে ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়েছিল। দাঙ্গা হওয়ার কমপক্ষে তিনঘণ্টা পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাই নেননি।  

ট্রাম্পের মিথ্যা দাবি 

ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচন নিয়ে বরাবরই মিথ্যা দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালের নির্বাচনের রিপোর্ট রাতে মিথ্যাভাবে ঘোষণা করা হয়। এটা ছিল ‘পূর্ব পরিকল্পিত’। তাকে এমন দাবির পক্ষে একজন মাত্র আইনজীবী, নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানি।  সঙ্গে সঙ্গেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অপ্রমাণিতভাবে ব্যাপকমাত্রায় ভোট কারচুরির অভিযোগ আনেন। নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করার পর তিনি এই দাবি ঘন ঘন উত্থাপন করতে থাকেন। এর প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা ও আইনজীবীর সাক্ষাৎকারের দিকে দৃষ্টি ফেরায় কমিটি। এসব উপদেষ্টা ও আইনজীবীরা বলেছেন, নির্বাচনে জালিয়াতির বিষয় তারা বিশ্বাস করেন না অথবা এর পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাননি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সাবেক এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। তিনি কমিটিকে বলেছেন, আমি এটা পরিষ্কার করেছি যে, নির্বাচন ‘চুরি’ করা হয়েছে এই ধারণার সঙ্গে আমি একমত নই। আমি বলেছি, প্রেসিডেন্ট বাড়িয়ে বলেছেন। ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তার এ দাবি সত্য নয়। তা সত্ত্বেও ডনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের বীজ বুনতে থাকেন।  

ট্রাম্পের উস্কানিতে ওয়াশিংটনে দাঙ্গাকারীরা 

 কমিটি এই যুক্তি দাঁড় করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের হামলায় উস্কানি দিয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প নিজে। ট্রাম্পের বার বার জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে কংগ্রেশনাল কমিটি ২০২০ সালের ১৯শে ডিসেম্বরের একটি টুইটের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। সেখানে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লিখেছেন- (ওয়াশিংটন) ডিসি’তে ৬ই জানুয়ারি বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। সেখানে থাকুন, বন্য হয়ে উঠতে হবে।  এসব তথ্য, আদালতের ডকুমেন্ট, দাঙ্গাকারী এবং মিলিশিয়া সদস্যরা যারা ওইদিন ক্যাপিটল হিলে উপস্থিত ছিলেন, তারা ট্রাম্পের এই টুইটের উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এই টুইটের কারণে তারা ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। কংগ্রেশনাল কমিটি রবার্ট মোরস-এর মতো ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি তুলে ধরেছে। ক্যাপিটল হিলসে নিয়ম লঙ্ঘন করে কর্মকর্তাদের অবমাননা করার জন্য দায়ী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন রবার্ট মোরস। তিনি ‘বিশ্বাস করেন ৬ই জানুয়ারিকে এমন একটি মুহূর্ত হিসেবে, যখন ‘১৭৭৬ আবার শুরু হবে’। কারণ, তখনকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদেরকে সেদিন ‘যেতে বলেছিলেন এবং বন্য হয়ে উঠতে বলেছিলেন’- একতা বলা হয়েছে রিপোর্টে। এতে কমিটি সিক্রেট সার্ভিসের সতর্কতাও তুলে ধরেছে। তাতে বলা হয়েছে, ৬ই জানুয়ারি ওয়াশিংটনে জমায়েত হতে যাচ্ছে লোকজন এবং তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারে।  

 

 

দাঙ্গাকালে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ ট্রাম্প 

কংগ্রেশনাল কমিটি যুক্তি দেখিয়েছে যে, ৬ই জানুয়ারি হামলা শুরু হলেও তখনকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কোনো ব্যবস্থাই নেননি। কংগ্রেস থেকে তাকে মারাত্মক হামলার সতর্কতা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। হোয়াইট হাউসের সাবেক স্টাফার ক্যাসিডি হাচিনসনের সাক্ষ্য দিয়ে রিপোর্টে উপসংহার টানা হয়েছে। এ বছর নাটকীয়ভাবে শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। ওইদিনের বিশঙ্খলা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন তিনি, যা তিনি হোয়াইট হাউসের ভিতরে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তার এই সাক্ষ্য বৃহস্পতিবার প্রকাশ পেয়েছে। তিনি কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেয়ার আগে তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি কমিটিতে বলেছেন, যতই কম জানবেন, ততই ভালো। ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে আটকে পড়া আইনপ্রণেতা এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডো’র মধ্যে যে যোগাযোগ হয়েছিল, তা উদ্ধৃত করেছে কংগ্রেশনাল কমিটি। এ সময় কংগ্রেসের সদস্যরা আত্মগোপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ডনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে অনুগত সহযোগী হোপ হিকস হোয়াইট হাউসে উদ্‌ভ্রান্ত স্টাফদের মধ্যে অন্যতম। তার টেক্সট তুলে ধরা হয়েছে। ট্রাম্পের কন্যা ইভানকা ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ জুলি র‌্যাডঢোর্ডকে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছিলেন দাঙ্গার পর। এতে তিনি বলেছিলেন- ‘আমাদের সবাইকে এখন মনে হচ্ছে আভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী’। তিনি হোয়াইট হাউসের একজন আইনজীবীকে লিখেছিলেন- ‘আমি খুবই হতাশ। আমরা যার জন্য কাজ করেছি, তার সবটা শেষ হয়ে গেছে’।  

উগ্র-ডানপন্থি গ্রুপগুলোর পরিকল্পনা

 ওয়াশিংটনকে টার্গেট করা এবং ক্যাপিটল হিলে হামলা চালানোর বিষয়টি সশস্ত্র গ্রুপগুলো ২০২০ সালের ডিসেম্বরেই করে ফেলে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, উগ্র ডানপন্থি ‘ওথ কিপারস’ এবং ‘প্রাউড বয়েজ’ গ্রুপের বিষয়ে আগেই মেসেজ পাঠিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। তাদের একজন বলেছেন, সামনে পথ একটাই। এটা কোনো র‌্যালি নয়। এটা হবে বিস্ফোরক বুলেট।  প্রেসিডেন্টকে সুরক্ষিত রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপিটল পুলিশ এবং সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ভিতর থেকে এবং অন্যদের কাছ থেকে একই রকম বার্তা পায়। এর কিছু কিছু বার্তায় ক্যাপিটলকে বড় রকম সহিংসতার মুখোমুখি হিসেবে বলা হয়। এর কিছুটা বার্তা আছে ব্যক্তিগত চ্যাটিং অ্যাপস থেকে। অন্য  মেসেজগুলো ট্রাম্পপন্থি ওয়েবসাইট ও টুইটারে প্রকাশ্যে দৃশ্যমান ছিল। উগ্র ডানপন্থি গ্রুপগুলোর সদস্যদেরকে ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটলের ওই উগ্রতায় দেখা যায়। এ ছাড়া রুদ্ধদ্বার শুনানিতে প্রত্যক্ষদর্শীরা যেসব সাক্ষ্য দিয়েছেন তার কয়েক ডজন ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করেছে কংগ্রেশনাল কমিটি। এর মধ্যে আছেন ট্রাম্পের উগ্র-ডানপন্থি সবচেয়ে বড় সমর্থক- যেমন অ্যালেক্স জোনস, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী নিক ফিউয়েন্তেস। তিনি প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু ‘ওথ কিপারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা স্টিওয়ার্ট রোডস এবং ‘প্রাউড বয়েজ’ নেতা এনরিক তারিও যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দাঙ্গায় তাদের উগ্র ডানপন্থি অংশগুলোর জড়িত থাকার ষড়যন্ত্র প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে স্টিওয়ার্ট রোডসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সহ আরও কিছু অভিযোগ গঠন করা হয়েছে গত মাসে। এর ফলে তার কয়েক দশকের  জেল হতে পারে। অন্যদিকে এনরিক তারিও বর্তমানে বিচারাধীন।   

ভাইস প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প 

নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়ে গেছে। হেরে গেছেন ট্রাম্প।  জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হাজির করলেন ট্রাম্প। তিনি হোয়াইট হাউসেই টিকে থাকার কৌশল আবিষ্কার করতে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান তুলে ধরে তিনি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে আনেন। তিনি আশা করেছিলেন, নির্বাচনী ফল সার্টিফিকেশনের জন্য যে অধিবেশন ডাকা হয়, তাতে সভাপতিত্ব করেন তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তারই দায়িত্ব ছিল বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা। কিন্তু ট্রাম্প চাইছিলেন, মাইক পেন্স তার নাম ঘোষণা করুন। ৬ই জানুয়ারি তাই তিনি মাইক পেন্সকে ফোন করার উদ্যোগ নেন। সহযোগীদের অনুরোধ করেন ফোনে তাকে ধরে দিতে। এরপর ফোনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে বলেন, সার্টিফিকেশনে হস্তক্ষেপের ক্ষমতা আছে মাইক পেন্সের। কংগ্রেশনাল কমিটিতে প্রত্যক্ষদর্শীরা এক পর্যায়ে বলেছেন, এমন অবস্থায় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে ট্রাম্প একজন ‘হুইম্প’ বা কাপুরুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, পেন্স অতোটা কঠোর নন। ৬ই জানুয়ারির সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করেছিলেন মাইক পেন্স ঠিক কাজটিই করবেন। পরে হামলার মাঝামাঝি দাঙ্গাকারীরা স্লোগান দেন ‘হ্যাং মাইক পেন্স’। এই স্লোগান দিতে দিতে তারা ক্যাপিটল হিলে প্রবেশ করে।  

ট্রাম্পকে সরকারি অফিসে নিষিদ্ধ করা উচিত

 মার্কিন কংগ্রেশনাল কমিটি যে ১১ দফা সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- সরকারি পদে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অধীনে যে ব্যক্তি শপথ নিয়েছেন, অথচ তিনি বিদ্রোহে জড়িত, অথবা সহযোগীদেরকে সংবিধানের শত্রু হতে উৎসাহিত করেছেন অথবা বিদ্রোহ করেছেন- তিনি সরকারি দায়িত্বে অযোগ্য হবেন। বিদ্রোহে সহায়তা অথবা সহযোগিতার জন্য ট্রাম্পের নাম পাঠানো হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে।  এখন ভবিষ্যৎ বলবে ট্রাম্পের পরিণতি কি!

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status