প্রথম পাতা
শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশের শিক্ষণীয় আছে
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ মে ২০২২, মঙ্গলবারশ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পতন ঘটেছে রাজাপাকসে সরকারের। আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতি, পরিকল্পনাহীন ও অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল প্রকল্প, ঋণের জট, রিজার্ভ সংকটসহ সরকারের দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় বলে মনে করছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ. বি. মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি মানবজমিনকে বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সহসাই বাংলাদেশে হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কেননা, আমাদের রিজার্ভ পজিশন ভালো। এ ছাড়া ঋণের ব্যয়, রপ্তানি আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়- সেটিও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। রিজার্ভ কিছুটা কমলেও এখনো পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে। তাছাড়া শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটিও বাংলাদেশে বিদ্যমান নয়। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার কৃষি খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমেছিল, তাদের পর্যটন খাতে সংকট নেমেছিল। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রথমত, বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক হতে হবে, যাতে অতি মাত্রার বৈদেশিক ঋণ না হয়। বেশি মাত্রার সুদে যেন ঋণ নেয়া না হয়। শ্রীলঙ্কা বন্ড ইস্যু করেছিল সেখানেও উচ্চ ঋণ ছিল। এসব ব্যাপারে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বৈদেশিক ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাছাই করে নিতে হবে। যতদূর সম্ভব মাল্টিলেটারাল এজেন্সি অর্থাৎ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ- এদের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। উচ্চ ঋণের সুদ যতদূর সম্ভব কমিয়ে দিতে হবে। বড় প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছিল। ফলে তাদের এই বিপর্যয় হয়েছে। তাই এটা আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। সবমিলিয়ে আমি মনে করি, বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা সেটি শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো আছে। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের খুব একটা চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। তবে তাদের থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়।