ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

যে কারণে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি

সোহরাওয়ার্দীতে ২৬ শর্তে অনুমতি

স্টাফ রিপোর্টার
৩০ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
mzamin

আগামী ১০ই ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতিও চেয়েছিল দলটি। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। তাতে নানা বিধিনিষেধসহ ২৬ শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন- সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারা অনুমতি চাননি। নয়া পল্টনেই সমাবেশ করতে চান তারা। প্রয়োজনে ডিএমপি’তে আবারো চিঠি দেয়া হবে। তবে ডিএমপি’র অনুমতির চিঠির বিষয়টি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পর্যালোচনা হবে।  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি দিলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছি নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবো। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়।

বিজ্ঞাপন
ডিএমপি থেকে একটি চিঠি অফিসে পৌঁছেছে। আমরা নয়াপল্টন ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবছি না। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি চলছে।  বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশের জন্য আমরা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সমাবেশস্থল হিসেবে নয়াপল্টন চেয়েছি। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য অনুমতি চাইনি। ডিএমপি’র পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। 

এখনো আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাই। ডিএমপি’র চিঠির বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।  নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাওয়ার কারণ হিসেবে বিএনপি নেতারা বলছেন, শনিবার ছুটির দিন। নেতাকর্মীরা সরাসরি সমাবেশে অংশ নিতে পারবেন। আশেপাশে হোটেল-রেস্টুরেন্টে খাবার কিনে খেতে পারবেন। এর আগেও নয়াপল্টনে গণসমাবেশ হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সরকার সেসব গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় থাকায় সেখানে সভা-সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা অভ্যস্ত। এ ছাড়া নয়াপল্টনে বিপুল সংখ্যক মানুষের জনসমাগম করতে চায় বিএনপি।  নেতাকর্মীদের চাপ বাড়লে আশপাশের সড়কে তারা অবস্থান নিতে পারবেন। অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঠ ছোট।  এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের যে অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি, তাতে জুড়ে দেয়া হয়েছে ২৬ শর্ত। যাতে বলা হয়েছে, মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাওয়া যাবে না। সমাবেশ করা যাবে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। শর্তগুলো হলো- এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

 স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিউকল স্ক্যানারের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাথে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না। 

আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না। অনুমতি দেয়া সময়ের মধ্যে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থায় সমবেত হওয়াসহ যান ও মানুষ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না। পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-রড ব্যবহার করা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেয়া যাবে না। উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না। সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ করতে হবে। উল্লিখিত শর্তাবলী পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status