শরীর ও মন
মলদ্বারের সার্জারির পর যত্ন ও করণীয়
ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
১৯ নভেম্বর ২০২২, শনিবার
মলদ্বারের বা পায়ুপথের রোগ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্যকে এ রোগের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়। মলদ্বারের সাধারণ রোগগুলো হলো পাইল্স, ফিস্টুলা, ফিসার, এনাল ফিসার, রেকটাম ক্যানসার, রেকটাম পলিপ, ক্রনস ডিজিস, আলসারেটিভ কোলাইটিস, রেক্টাল ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, বৃহদান্ত্রের ক্যানসার, আইবিস প্রভৃতি। এসব রোগের মধ্যে অনেক রোগেরই শুরুতে সঠিক ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নিলে রোগী অপারেশন ছাড়াই সুস্থ হতে পারেন। তবে সময়ক্ষেপণ ও জটিল হয়ে গেলে অপারেশন প্রয়োজন। যেকোনো অপারেশনের পর রোগীর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।
এতে রোগী ভালো থাকে ও রোগ নিরাময় হয়। বিশেষ করে শরীরের অন্যান্য জায়গায় সার্জারির সঙ্গে মলদ্বারের সার্জারির কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। মলদ্বারের সার্জারির পর সাধারণত সেলাই হয় না, প্রতিদিন অপারেশনের স্থান মলের সংস্পর্শে আসে, প্রচুর পরিমাণে পানি ও রস নিঃসরণ হয়, ক্ষতস্থান শুকাতে দীর্ঘ সময় লাগে। তাই মলদ্বারে অপারেশনের পর বিশেষ যত্ন নিতে হয়। সাধারণত যেসব অপারেশনের পর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন হয় সেগুলো হলো, পাইল্স, ফিসার, ফিস্টুলা, বিশেষত জটিল ফিস্টুলা বা এবসেস সার্জারি, মলদ্বার চিকন হয়ে যাওয়ার অপারেশন বা এনাল স্টেনোসিস।
করণীয়-
অপারেশনের পর কী করবেন বা কীভাবে যত্ন নিতে হবে, তা চিকিৎসক বলে দেবেন। সাধারণত যা করতে হয় তা হলো- * পরিষ্কার রাখা। এ অপারেশনে এটিই মূল মন্ত্র। * অনেকদিন ধরে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। * প্রয়োজনে ড্রেসিং করা। * নরম কাপড় বা গজ ব্যবহার করা। * কোনো ধরনের টিস্যু ব্যবহার না করা। * সিজ বাথ বা গরম পানির সেঁক নেওয়া। * প্রয়োজনীয় ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।
ক্ষত শুকানোর সময়
মলদ্বারের অপারেশনের পর ক্ষত শুকাতে শরীরের অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি সময় লাগে। কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস লাগতে পারে ক্ষত শুকাতে। এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। সবার শরীরের ক্ষত শুকানোর ক্ষমতা একরকম নয়। কারো বেশি সময় লাগে কারো কম। ধৈর্য সহকারে পরিচর্যা করলে এবং নিয়মকানুন মেনে চললে ক্ষত দ্রুত শুকায়। নিয়মকানুন না মানলে বা অবহেলা করলে অপারেশনের পর পুনরায় ফিস্টুলা, মলদ্বারের যক্ষ্মা, বৃহদন্ত্রের প্রদাহ ইত্যাদি ফিরে আসতে পারে। তবে যে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা তা হলো, পায়ুপথের যেকোনো রোগ জটিল হয়ে যাওয়ার আগেই চিকিৎসা দরকার। জটিলতা যত বাড়বে অপারেশনে ঝুঁকিও ততই বাড়বে। ফলে পায়ুপথে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা জরুরি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কোলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ এবং কোলোরেক্টাল, ল্যাপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। চেম্বার: ১৯ গ্রীন রোড, এ.কে. কমপ্লেক্স, লিফ্ট-৪, ঢাকা। যোগাযোগ-০১৭১২-৯৬৫০০৯