নির্বাচিত কলাম
ভেতর বাহির
টাকার দ্রুত বড় মূল্যপতন অনিবার্য, প্রভাব কী হবে?
ডা. জাহেদ উর রহমান
১৬ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
বাংলাদেশের সামপ্রতিক সময়ে টাকা পাচার বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতভাবে টাকা পাচার হয় এটা নিশ্চিত। কিন্তু গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির পূর্ববর্তী টাকা পাচারের তথ্য থেকে আমরা জানি নির্বাচনের বছর টাকা পাচার আগের তুলনায় অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ বেড়ে যায়। নির্বাচন বাংলাদেশে কোনো নিশ্চিত বিষয় নয়। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, সেটা অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা, হলে পরিস্থিতি কী হবে, এমনকি আদৌ একটা নির্বাচন হবে কিনা ইত্যাদি নানা সংশয় এখন দেশের রাজনীতির মাঠে বিরাজ করছে
সামপ্রতিক সময়ে দেশের প্রায় সব মিডিয়ায় খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে দেশের ডলার সংকট। ব্যাংকগুলোতে আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছেন না এমন কি শতভাগ মার্জিন দিয়েও, এমন সংবাদে সয়লাব হয়ে আছে মিডিয়া। এই পরিস্থিতি কেন হচ্ছে? এর প্রভাবই বা কী হবে? ২০০৩ সালে টাকাকে কাগজে কলমে ভাসমান মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ সরকার ডলারের বিপরীতে টাকার কোনো দাম বেঁধে দেবে না, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য নির্ধারিত হবে বাজারের চাহিদা-যোগানের ভিত্তিতে। সেটা আসলে আজ পর্যন্ত হয়নি কখনো। বাজারের ডলার সরবরাহ হ্রাস/বৃদ্ধি করে সরকার ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করেছে। সামপ্রতিক বছরগুলোতে ডলারের মূল্য টাকার বিপরীতে ৮০ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে। অর্থনীতিবিদরা বারবার বলেছেন টাকাকে এত উচ্চ মূল্যে ধরে রাখা ঠিক হচ্ছে না। সরকারের উচিত টাকার মূল্য ডলারের বিপরীতে আরও পড়তে দেয়া। আমরা জানি ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমলে সেটা আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের চাপ বাড়ে। কিন্তু টাকার অবমূল্যায়ন যারা ডলারে কিংবা অন্য বৈদেশিক মুদ্রায় উপার্জন করেন তাদের জন্য ইনসেনটিভ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এতে রপ্তানি বাড়ে, দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণও বাড়ে। কিন্তু সরকার ধীরে ধীরে টাকার মূল্য কমানোর কথা শোনেনি।
এই সরকার তার আমলের উন্নয়নকে এনেছে জনগণের সামনে। বাংলাদেশের উন্নতির সূচক হিসেবে জিডিপি’র আকার এবং মাথাপিছু জিডিপি অর্থাৎ মাথাপিছু আয় সরকারের একটা বড় প্রচারণার বিষয় ছিল পুরো শাসনকালে। দেশের মোট জিডিপি টাকার অঙ্কে হিসাব হয়। এখন আমরা খেয়াল করলেই বুঝবো টাকার অঙ্ক স্থির কিন্তু এটাকে যদি ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী টাকা দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে জিডিপি’র আকার এবং মাথাপিছু জিডিপি ডলারের অঙ্কে বেড়ে যায়। যেকোনো একটা সংখ্যাকে ৮৫ দিয়ে ভাগ দিলে ফলাফল যা পাবো ১০৫ দিয়ে ভাগ দিলে ফলাফল তার চেয়ে কম পাব এটুকু নিশ্চয়ই বুঝি আমরা। অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে টাকাকে শক্তিশালী বানিয়ে রেখে সরকার কাগজে কলমে ডলারের অঙ্কে জিডিপি এবং মাথাপিছু আয় বেশি দেখাতে পেরেছে। আজ আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতেই পারি ডলারের মূল্য ধরে রাখতে গিয়ে বাজারে বড় পরিমাণের ডলার ছেড়ে ছেড়ে সরকার ডলারের রিজার্ভের উপরে চাপ তৈরি করেছে। আজকের ডলার সংকটের পেছনে এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক নিশ্চয়ই। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে সরকার এভাবে কী চালিয়ে যেতে পারবে? সমপ্রতি আইএমএফ’র স্টাফ কমিটির সঙ্গে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণপ্রাপ্তি নিয়ে সরকারের প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছে। আইএমএফ’র বোর্ড এই ঋণ এখনো অনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত না করলেও আমরা এটুকু জেনে রাখি স্টাফ কমিটির সঙ্গে কোনো দেশের সমঝোতার পর আইএমএফ’র বোর্ডে সেই ঋণ আজ পর্যন্ত কখনো প্রত্যাখ্যাত হয়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ এই ঋণটা পাচ্ছে, এটা আমরা ধরে নিতেই পারি।
এখন আইএমএফ তার ঋণের জন্য অনেকগুলো শর্ত রয়েছে যার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে ডলারের বিনিময়ে টাকার মূল্যকে পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। সত্যি বলতে আইএমএফ’র এই শর্ত না থাকলেও বাংলাদেশ সরকার এখন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ধরে রাখার সামর্থ্য আসলে পুরোপুরি হারিয়েছে। আগে যেভাবে রিজার্ভ থেকে ডলার বাজারে ছেড়ে এই মূল্য ধরে রাখা হচ্ছিল এখন ঠিক একই কাজটি করার মতো প্রয়োজনীয় ডলারের অঙ্কের আশেপাশেও নেই সরকার। বিলাসী পণ্য দূরেই থাকুক ব্যাংকগুলো ধান- গমের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য এবং ডিজেলের মতো অত্যাবশ্যকীয় জ্বালানি আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারিভাবে রিজার্ভের অঙ্ক ৩৪ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও আইএমএফ’র শর্ত মেনে তারাই এখন স্বীকার করছেন এই অঙ্ক ২৬ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল এবং বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প, বিমান কেনা এবং শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ঋণ বাবদ মোট ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিতে হয়েছে। এটা কোনোভাবেই ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ নয়। সত্যি বলতে এই ২৬ বিলিয়ন ডলারের উপরে অত্যন্ত বড় একটা চাপ আছে।
করোনার সময়ের বেশ কিছু এলসি পেছাতে পেছাতে (ডেফার্ড এলসি) এখন সেগুলোর মূল্য পরিশোধ করার সময় হয়েছে। এ ছাড়াও দেশীয় ব্যাংকের চাইতে তুলনামূলকভাবে সস্তায়, এই যুক্তিতে দেশের অনেকগুলো বড় বেসরকারি কোম্পানি বৈদেশিক ব্যাংক থেকে বিদেশি মুদ্রায় ঋণ নিয়েছিল। ২০২২ সালের মধ্যেই এরকম দায় পরিশোধের অঙ্ক ১৮ বিলিয়ন ডলার। কিছু শোধ করা হয়েছে এবং কিছু নিশ্চয়ই পেছানো যাবে আরও কিন্তু তারপরও এই বছর পরিশোধ করতেই হবে এমন অঙ্কটা অনেক বড় থাকবে এটা আমরা বুঝতে পারছি। আর পেছানোগুলো যুক্ত হবে আগামী বছরের দায় এর সঙ্গে। ওদিকে দেশের ভাড়াভিত্তিক রেন্টাল এবং কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ এবং বিদ্যুতের মূল্য বাবদ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার পরিশোধের বাকি আছে। আমরা অনেকেই জানি না এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনেকগুলোকে ডলারে বিল পরিশোধ করা হয়। এই সব কিছু বিবেচনা করলে সরকারের হাতে ব্যবহারযোগ্য ২৬ বিলিয়ন ডলারকে খুব তুচ্ছ অঙ্ক মনে হবেই। এই রিজার্ভ হাতে নিয়ে সরকারের পক্ষে নিশ্চয়ই বাজারে ডলার ছেড়ে টাকার মূল্য আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এর মধ্যেই বিভিন্ন পত্রিকায় আমরা সংবাদ দেখেছি ব্যাংকগুলোতে ডলারের হাহাকার চলছে। অনেক আমদানিকারক এলসি খুলতে পারছেন না। এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিরাট বড় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং রপ্তানিকারকরা প্রাধান্য পাচ্ছেন। অর্থাৎ এখন বাজারের হাতে যদি টাকার মূল্যকে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে খুব দ্রুতই এর মূল্য পতন হবে। টাকার অত্যন্ত বড় মূল্য পতনের অর্থ হচ্ছে আমরা সাধারণ মানুষ চরম সংকটে পড়ে যাবো।
বাংলাদেশ আবহমানকাল থেকেই ঋণাত্মক লেনদেনের ভারসাম্যের দেশ। অর্থাৎ আমাদের আমদানি রপ্তানির চাইতে অনেক বেশি। বিলাসী পণ্য নয় এই দেশে চাল, গমের মতো প্রধান খাদ্যশস্য, ডাল পিয়াজ, ভোজ্য তেল, চিনির মতো প্রতিটি মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি হয়। ফলে ডলারের বিপরীতে টাকার বড় মূল্যপতন, এর মধ্যেই চরম সংকটে পড়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস তুলে ফেলবে। সরকারি হিসাবে মূল্যস্ফীতি এখন ৯ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে অর্থনীতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি সংস্থাগুলো হিসাব করে সব সময় জানায় বাংলাদেশ সরকারের দেয়া হিসেবে তুলনায় মূল্যস্ফীতি সবসময় বাস্তবে দেড় থেকে দুই গুণ থাকে। তাহলে এখনকার প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আমরা অনুমান করতে পারি। এর সঙ্গে যদি টাকার খুব বড় মূল্যপতন হয় সেটা মূল্যস্ফীতিকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে আমরা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারছি। তবে টাকার মূল্য পতন কাগজে-কলমে সরকারকে একটা সুবিধা দেয়ার সম্ভাবনার কথা বলে। সেটা হচ্ছে ডলারের বিপরীতে যেহেতু অনেক বেশি টাকা পাওয়া যায় তাই রপ্তানিকারক এবং রেমিট্যান্স যারা পাঠান তারা উৎসাহিত হবেন।
দেখা যাক এটা কতোটা কার্যকর হতে পারে। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়া রপ্তানিকারককে প্রণোদনা দেয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বর্তমান বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে সেটা কতোটা হবে প্রশ্ন থাকতেই পারে। বিশ্ব একটা গভীর মন্দার দিকে ঢুকে যাচ্ছে ক্রমশ। ফলে আমাদের প্রধান রপ্তানি অন্য গার্মেন্টের অর্ডার কমে যাবে। এর মধ্যেই আমরা অর্ডার কমে যাওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাবার কথা মিডিয়ায় দেখেছি। একটা বড় অভ্যন্তরীণ সংকটও কিন্তু এই ক্ষেত্রে আছে। কাগজে কলমে যদি আমরা ধরেও নেই গার্মেন্টস মালিকরা যথেষ্ট পরিমাণ অর্ডার পেয়েছেন কিন্তু সেগুলো ডেলিভারি করা এখন এক বড় সংশয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ চরম জ্বালানি ঘাটতিতে ভুগছে। সরকার শিল্পে পর্যাপ্ত গ্যাস দিতে পারছে না। ফলে বড় বড় শিল্পগুলো, যেগুলো একসময় গ্যাসভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট (ক্যাপটিভ) করে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ছিল, তাদের উৎপাদনের সংকট তৈরি হয়েছে। ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ আছে এমন খবর নিয়মিত মিডিয়ায় আসছে। তাহলে রপ্তানি বাণিজ্যে যে সুবিধা আমরা পাবার কথা ছিল সেটা খুব বেশি কার্যকর হবে বলে মনে হয় না। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা যদি অনেক আসে সেটা সরকারের জন্য একটা লাইফলাইন হতে পারে।
সামপ্রতিক সময়ে হুন্ডির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। কারণ ব্যাংকিং চ্যানেলের সঙ্গে সরকারের দেয়া প্রণোদনা যোগ করলেও একজন রেমিট্যান্স প্রেরক যে টাকা পান খোলা বাজারে পান তার চাইতে বেশ খানিকটা বেশি। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই হুন্ডিতেই টাকা এসেছে অনেক বেশি। এখন টাকাকে যদি বাজারের উপরে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে ব্যাংকিং চ্যানেল এবং খোলা বাজারে ডলারের মূল্য যদি প্রায় কাছাকাছি চলে আসে তাহলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসার সম্ভাবনা অনেক বাড়ার কথা। কিন্তু আমার একটা ব্যক্তিগত সংশয় আছে এই ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের সামপ্রতিক সময়ে টাকা পাচার বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতভাবে টাকা পাচার হয় এটা নিশ্চিত। কিন্তু গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির পূর্ববর্তী টাকা পাচারের তথ্য থেকে আমরা জানি নির্বাচনের বছর টাকা পাচার আগের তুলনায় অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ বেড়ে যায়। নির্বাচন বাংলাদেশে কোনো নিশ্চিত বিষয় নয়। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, সেটা অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা, হলে পরিস্থিতি কী হবে, এমনকি আদৌ একটা নির্বাচন হবে কিনা ইত্যাদি নানা সংশয় এখন দেশের রাজনীতির মাঠে বিরাজ করছে। এসব অনিশ্চয়তাকে সামনে রেখে পাচারের পরিমাণ বাড়তে থাকবেই বলে আমি বিশ্বাস করি। যিনি ব্যাংকিং চ্যানেলে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পারবেন তিনি সেটাতে পাচার করবেন। যিনি সেটা করতে পারবেন না, তিনি হুন্ডিকেই বেছে নেবেন।
এ কারণে ডলারের বিনিময়ে ব্যাংকে প্রাপ্ত টাকা আর খোলা বাজারের টাকার একটা পার্থক্য ক্রমাগত হতে থাকবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। একটা উদাহরণ দেয়া যাক। পুরোপুরি বাজারের উপরে ছেড়ে দেয়ার পর ধরে নেয়া যাক টাকা ডলারের বিপরীতে ১২৫ টাকায় স্থির হলো। আমার ধারণা তখনো অসংখ্য দেশীয় লুটপাটকারী ডলারের জন্য এর চাইতে বেশ খানিকটা বেশি দাম দিতে চাইবেন হুন্ডি করার জন্য। দেশে ঘুষ, কমিশন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে যারা টাকা উপার্জন করেন, তারা তাদের অতি সহজে প্রাপ্ত টাকা থেকে বাজার দরের চাইতে কয়েক টাকা বাড়িয়ে দিতে তাদের গায়ে লাগার কোনো কারণ নেই। বরং তাদের সেই টাকার অতি দ্রুত সরিয়ে ফেলার বাধ্যবাধকতা তাদের মধ্যে থাকে। তাই হুন্ডি সিগনিফিক্যান্টলি কমবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। টাকার খুব বড় মূল্যপতন অনিবার্য এবং সেটা ঘটবে খুব কম সময়ের মধ্যে। এই মূল্য পতনের সুফল হিসেবে রপ্তানি আয় আর ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে যদি রিজার্ভ শক্তিশালী হতো তাহলে ধীরে ধীরে টাকা আবার তার মূল্য ফিরে পেতে পারতো। কিন্তু লক্ষণ বলছে রিজার্ভের খুব বেশি উন্নতি হবে না। বরং ক্রমান্বয়ে আরও খারাপ পরিস্থিতিতে যেতে থাকবো আমরা। এটা নিশ্চিত সরকারের চরম লুটপাট, অব্যবস্থাপনার মাশুল দিয়ে চরম অর্থনৈতিক সংকটে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে থাকা এদেশের সাধারণ মানুষের জন্য সামনে চরম সংকটকাল অপেক্ষা করছে। আগাম দুর্ভিক্ষের কথা বলে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জনগণকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে যাচ্ছেন।