প্রথম পাতা
সাক্ষাৎকার
বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যেতে পারে রিজার্ভ
এম এম মাসুদ
১৫ মে ২০২২, রবিবার
প্রায় সবদিক থেকে ভালো থাকা বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার চেয়ে অর্থনীতির সব সূচকে বাংলাদেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছে। তবে এখন যে স্বস্তি অবস্থা আছে সেটা বেশিদিন নাও থাকতে পারে। কারণ টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেড়েই চলেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে। তাই এখনই যদি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি রির্জাভ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপকালে একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মইনুল বলেন, খুব শিগগির বাংলাদেশ কোনো সংকটে পড়বে না। কিন্তু দেশে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন; রাশিয়ার ঋণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে ডলারের দাম বেড়েছে ৭০ পয়সা। গত সোমবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব জায়গায় মুদ্রাস্ফীতির আগুন লেগেছে। তেলের বাজারে আগুন। গম সংকট। ডলার ক্রাইসিস। রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছে। একটা অস্থির অবস্থায় যাচ্ছে আর্থিক ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত রোববার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২.২৪ বিলিয়ন (২২৪ কোটি) ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১.৯০ বিলিয়ন ডলার। গত তিন মাস ধরে (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ) প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি হচ্ছে দেশে। এ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এদিকে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। তবে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৩ শতাংশ। আবার প্রবাসী আয় যা আসছে, তা গত বছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম।
এসব বিষয়ে অধ্যাপক মইনুল বলেন, চলতি বছরই আমাদের আমদানি ব্যয় প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু রপ্তানি আয় প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যেতে পারে। ফলে ৩০ বিলিয়ন ডলারের একটা বাণিজ্য ঘাটতি হতে পারে। সেটা তো রেমিট্যান্স দিয়ে পূরণ করতে পারবো না। রেমিট্যান্স দিয়ে সর্বোচ্চ ২০ বিলিয়ন ডলার পূরণ করতে পারবো। কাজেই আমাদের ১০ বিলিয়ন ডলারের একটা ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে।
মইনুল বলেন, ইতিমধ্যেই গত ৮ মাসে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ তা এখন ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। পরের ২ মাসে এটা আরও ৪ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। এভাবে যদি আমাদের আমদানি ব্যয় রপ্তানি আয়ের তুলনায় বাড়তে থাকে এবং সেটা যদি রেমিট্যান্স দিয়ে পূরণ করতে না পারি তাহলে অতি দ্রুত আমাদেরও রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে। বিপজ্জনক অবস্থায় রিজার্ভ চলে এলে টাকারও দাম আরও কমবে। তখন অর্থনীতিতে একটা বিপদ দেখতে পাবো। এখন যে স্বস্তির অবস্থানে আছি সেটা বেশিদিন নাও থাকতে পারে।
বেশকিছু পরামর্শ দিয়ে এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারকে এখনই আমদানি ব্যয় কঠোরভাবে দমন করতে হবে। ব্যাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনার ওপর জোর দিতে হবে। অবৈধ চ্যানেল বা হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসার পথ বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে শ্রীলঙ্কার আজকের এই আর্থিক দেউলিয়ার জন্য অন্যতম দায়ী হুন্ডি ব্যবস্থা বন্ধ করতে না পারা।
পাঠকের মতামত
প্রতি মাসে দুই মিলিয়ন ডলার ঘাটতি। ১/ আমদানি ব্যায় কমিয়ে রফতানি বারাতে হবে। ২/ দেশের VIP / CIP দের উন্নত দেশে second home বন্ধ করতে হবে। ৩/ বৈদেশিক ঋন না নিয়ে দেশের উননয়ন করতে হবে। ৪/ রাস্তা - সরকারি প্রতিষ্ঠান বাঁশ দিয়ে তৈরি না করে রড দিয়ে ভালমত মজবুত করে বানাতে হবে যাতে ছয় মাস পর পর বানাতে না হয়। ৫/ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক পাঠাতে হবে এবং রেমিটেনস বৈধ পথে ব্যাংকের মাধ্যমে আনতে হবে। ৬/ বিদেশি গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দেশে বানানো গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। ৭/ প্রযুক্তি গত উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। “ ধুততরি কোন দেশ নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করছি যে দেশে অন্ধ লোক দিক নির্দেশনা দেয় আর যারা চোখে না দেখে নিজের পেট ভরে,এসিতে বসবাসকারী লোক দেশকে ভোগে পাঠাবে আর শ্রমিক পা ফাটা আমরা দেশের জন্য লরাই করব। এমন দেশ শ্রীলংকার মতো রসাতলে যাওয়াই উচিৎ।
Chittagong people no one send money by bank
সরকার শুধু একটি কাজ করলেই হবে, আমাদের মন্ত্রী, এমপি ও আমলারা - কানাডা, আমেরিকা, মালয়শিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে - বেগম পাড়া ও সেকেন্ড হোম নামক যেসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে, তা তুলে নিয়ে আসতে হবে - তাহলেই দেশে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে যাবে। সোজা হিসাব!!! কিন্তু তা পারবে না বরং নামে-বেনামে আমদানী ব্যয় বাড়াবে, বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করবে ও সেই স্বাধীনতার চেতনার বিক্রি বেড়ে যাবে এবং আসছে নির্বাচনের উছিলায় নতুন নতুন মেগা প্রকল্প গ্রহন করে - উন্নয়নের জোয়ারের নামফলক উন্মোচিত করা হবে - তো শ্রীংলকার উন্নয়ন মডেল দেখা যাবে আর আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেছিলেন, উনি ভারতকে যা দিয়েছেন তা তারা আজীবন মনে রাখবে - জানি না উনি কি দিয়েছেন, তা জানতে পারেনি - বাংলাদেশীরা!!! হায়রে স্বাধীনতা!!!
"সব মিলিয়ে এখনই ঋণ এবং প্রকল্প গ্রহণে যদি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো কঠিন অবস্থা হবে বাংলাদেশের। এখন যে স্বস্তি অবস্থা আছে সেটা বেশিদিন নাও থাকতে পারে"। - কথিত সেই 'কঠিন অবস্থা' হতে হতে ২০২৩ তো পেরিয়ে যাবে আর তখন যদি আবার বর্তমান জনপ্রিয় সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলেতো কোনো দুশ্চিন্তার কারণ দেখছিনা যেহেতু আমাদের চৌকস অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও খ্যাতিমান অর্থমন্ত্রী থাকবেন, আর সর্বোপরি জিডিপির উল্লম্ফণতো থাকবেই। আর যদি অভাবিত কোনো ষড়জন্ত্রের কারণে অন্য সরকারের আগমন ঘটেই যায় তাহলে সেই "কঠিন অবস্থা"টাতো তাদের কারণেই হবে, যেহেতু বর্তমানের প্রতিফলন ভবিষ্যতেই ঘটবে!
এই সব বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা যে ভাবে বয়ান করেন তাতে মনে হয় "নোবেল"-টা একান্তই তার প্রাপ্য। এরা এখন শ্রীলঙ্কা'র জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। আতঙ্ক গ্রস্ত করছে দেশের জনগন কে। এদের থেকে সাবধান! সাবধান। এরা এজেন্ট বাস্ত্যবায়ন কারী। এরা এখন বলছে পদ্মা সেতু-ই নাকি একটা প্রকল্প যার কোন প্রয়োজন ছিল না। এটা একটা "লস" প্রজেক্ট!!!! কত বড় "ডেন্ডারাস"-কথা ভেবে দেখেছেন? কি করার দরকার ছিল না আর কি দরকার সেটা ভেবে সেবেই করা হয়েছে। যারা করেছেন তারা সেটা করার দক্ষতা রাখেন। ক্ষমা চাই,দু'দিন পরে যেন না বলেন বাংলাদেশের-ই দরকার ছিল না, এটাও একটা ভুল প্রজেক্ট।
চমৎকার সময়োপযোগী পরামর্শ। সরকার আশাকরি এগুলো আমলে নেবে।
আমি উল্লেখ করতে ভুলে গেছি Global money Transfer চাই। তাতে ঘরে বসেই কানাডার একাউন্ট থেকে বাংলাদেশের একাউন্ট এ অনলাইন Global money transfer করতে পারবে যে কেউ।
আমি কানাডা থেকে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছিলাম । তিন মাস পর টাকা ফেরত দিয়েছে কানাডার ব্যাঙ্ক। কারণ কোড ভুল। সরাসরি রেমিট্যান্স পেতে হলে কানাডার ব্যাঙ্ক গুলিতে সব ব্যাঙ্কের ট্রান্সফার কোড পাঠানোর দরকার। যাতে ব্যাঙ্ক গুলি সরাসরি অনুসন্ধান করে সঠিক কোড ব্যবহার করে টাকা পাঠাতে পারে দ্রুত তর সময়ে ।
বাংলাদেশের এমপি মন্ত্রীরা কিভাবে বিদেশে বাড়ি বানাচ্ছে টাকা পাচার করছে তাতে বাংলাদেশ দেউলিয়া হতে বেশি সময় লাগবে না
No unnoyon........No corruption.
বন্ধুর মৃত্যুতে আলোর মিছিলকারীদের আমরা বিশ্বাস করব কিভাবে?
সরকারের উচিত বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা। বড় প্রকল্প গুলো চালু হলে যেন সেগুলো লাভজনক হয় সে বিষয়ে কাজ করা।
আপনার বক্তব্যে সরকারের নজরে আনতে হবে
আগামী আরও পাঁচটি বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের জন্য ভাল হবে। আওয়ামী লীগের একটি মহল ক্ষমতা ছাড়ার চেষ্টা করছে। আমরা উন্নত বাংলাদেশের সকল মেগা প্রকল্পের সুফল ভোগ করতে চাই। বাংলাদেশ কখনো ঋন খেলাপি হবে না, এর প্রমান দেখতে চাই। আর এ গুলোর সঠিক বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগের কোন বিকল্প নেই।
শ্রীলংকা যুযু আইলো l
দীর্ঘ প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।প্রবাস থেকে বৈধ পথে যে রেমিটেন্স প্রেরণ করে পরবাসীরা এর চাইতে দিগুন হুন্ডিতে প্রেরণ করে যা আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলা। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রবাসে কনস্যুলেটগুলো এবং এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ যদি প্রবাসীদের যতাযত মুল্যায়ন করে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণ বৈধ পথে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্বাস করি। প্রবাসীরা দেশের অক্সিজেন যদি প্রবাসীদের যথাযত মুল্যায়ন করা হয় এদেশকে এরা বাচিয়ে রাখবে। ওরাই দেশের প্রকৃত যোদ্বা। যারা দেশকে ভালোবাসে দেশের মাটিকে ভালোবাসে এরা কামলা দিয়ে রেমিটেন্স প্রেরন করে মা, মাটি আর দেশের জন্য। সরকারকে এব্যাপারে একটু যত্নবান হতে হবে।