শরীর ও মন
কাঁধের ব্যথায় কাতর, কী করবেন
ডা. জি. এম. জাহাঙ্গীর হোসেন
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবারপ্রায় প্রতিটি মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কাঁধের ব্যথায় আক্রান্ত হয়। আঘাত যে কারণেই হোক, ব্যথা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। কাঁধ শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ত্রিশটি পেশি, তিনটি হাড় ও চারটি জোড়ার সমন্বয়ে তৈরি। কাঁধে হাড়, জোড়া, পেশি ও স্নায়ু সমস্যার কারণে ব্যথাসহ অন্য উপসর্গ হতে পারে। অনেক সময় ঘাড়ের সমস্যা, ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডের রোগ এবং পিত্তথলির রোগের কারণে কাঁধে ব্যথা হয়। একে রেফার্ড পেইন বলে।
কাঁধের নিজস্ব ব্যথার কারণগুলো
* পেশি দুর্বলতা ও ছিঁড়ে যাওয়া। * জোড়ার আবরণ ছিঁড়ে যাওয়া বা জোড়া স্থানচ্যুত হওয়া। * আর্থ্রাইটিস হয়ে জোড়ায় হাড়ের ক্ষয় হওয়া। * সংক্রমণ ও জোড়া জমে যাওয়া।
করণীয়
প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও ফোলা সেরে ওঠার পর রোগের ইতিহাস শুনে এবং জোড়ার বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যথার কারণ এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করতে হবে। এ ছাড়া রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, এক্স-রে এবং প্রয়োজনে এমআরআইয়ের সাহায্য নিতে হয়। * কাঁধকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। * বরফের টুকরো বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা সেঁক দিলে ব্যথা ও ফোলা কমে আসবে। * কাঁধে ইলাসটো কম্প্রেসন ব্যবহারে ফোলা ও ব্যথা কমে। * এনালজেসিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া। * ব্যথা ও ফোলা সেরে ওঠার পর জোড়া নমনীয় এবং পেশি শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। * ফিজিক্যাল থেরাপি, যেমন এসডব্লিউডি, ইউএসটি, আইআরআর ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়। * জোড়ায় স্টেরয়েড ইনজেকশন দিলে সাময়িক উপসর্গ লাঘব হয়।
আর্থ্রাস্কোপিক চিকিৎসা কখন নিবেন
প্রাথমিক বা কনজারভেটিভ চিকিৎসায় নিরাময় না হলে, পেশি ইনজুরি হলে, জোড়া বারবার ছুটে গেলে, জোড়ায় অতিরিক্ত হাড় হলে এবং জোড়ার জায়গা কমে গেলে আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এ পদ্ধতিতে ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে কাঁধে আর্থ্রোস্কোপ প্রবেশ করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ) হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রোস্কোপিক সার্জন। চেম্বার: বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লি:, শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭। হটলাইন- ১০৬৩৩, ০১৭৪৬-৬০০৫৮২