প্রথম পাতা
প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দিন
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবারসরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের যোগ্য জবাব দিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে এবং বিশ্বে বাংলাদেশ যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা ধরে রেখে মাথা উঁচু করে বিশ্বব্যাপী চলার আহ্বানও জানান তিনি। শনিবার নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া ভার্চ্যুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন। যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতার খুনিদের আত্মীয়স্বজনদের পাশাপাশি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া অর্থ পাচারকারীসহ নানা অপরাধীরা রয়েছে এই অপপ্রচারের নেপথ্যে। তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগকেই অপকর্মে জড়িত থাকার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সরকার এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে অন্যদের সবক দিচ্ছেন- এমন ব্যক্তিদের চরিত্র ও অপকর্ম জনসমক্ষে তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না, বরং আমাদের উন্নয়নকে জনগণের সামনে তুলে ধরুন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে আপনার এলাকার কংগ্রেসম্যান, সিনেটর এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবহিত করুন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন। বিএনপি-জামায়াত জোট ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটের আকারের তুলনামূলক চিত্র দেখে তাদের দ্বারা কতোটা উন্নয়ন হয়েছে তা বিচার করতে পারবেন। তিনি বলেন, বিএনপি আমলে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রেখে সারাবিশ্বে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা সমুন্নত রাখার জন্য আমি আপনাদের সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প থেকে তাদের তহবিল প্রত্যাহারের বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান, যা পরবর্তীতে কানাডার আদালতেও ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভোট কারচুপিতে বিএনপি চ্যাম্পিয়ন ছিল। তারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল। দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য রাজনীতিতে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং এবং ঋণ খেলাপি সংস্কৃতির মতো সব খারাপ কাজের সূচনা করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান সেই বিচার বন্ধ করে দেন এবং তাদের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী বানিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা ও এরশাদ একই কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, সরকার সবসময় ন্যায়ের পক্ষে। তাই জাতির পিতা হত্যা মামলার বিচার করেছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সূচনা করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার না হওয়ার অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও প্রাণবন্ত হয়েছে এবং উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের মানুষকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের একজনও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ইতিমধ্যে ১০ লাখ পরিবারকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছেন এবং জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য আয়ের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন ভালো অবস্থায় আছে। তিনটি ব্যাংকসহ প্রবাসীদের সুবিধার্থে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সংকটকালীন সময়ে দেশের পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ দেশে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।