ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

শেয়ারবাজারে কারসাজি করে কেউ রেহাই পাবে না- বিএসইসি চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, রবিবার

শেয়ারবাজারে কারসাজি করে কেউ রেহাই পাবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক  শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। গতকাল রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে। সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, ড. এম খায়রুল হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) ড. মো. এজাজুল ইসলামসহ অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিএবি, আইসিএমএবি, আইসিএসবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, একজন জুয়াড়িকে আমরা ধরতে পারি, যখন স্টক এক্সচেঞ্জ তদন্ত রিপোর্ট দ্রুত দেয়। 

তারপর নিয়ম অনুসারে তথ্য প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে শাস্তি দিতে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যায়। ততক্ষণে বিনিয়োগকারী ও বাজারের যা ক্ষতি করার তা করে ফেলে। গণমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, যখনি আপনারা কারসাজির কোনো তথ্য পান, তখন দ্রুত লিখে দেবেন। বিনিয়োগকারীদের সচেতন করবেন। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের যেকোনো বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী সবসময় সচেতন।

বিজ্ঞাপন
ওনাকে (প্রধানমন্ত্রী) পুঁজিবাজারের কোনো বিষয় নিয়ে এসএমএস করলে সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেন। সুতরাং এ রকম একজন লিডার থাকার পর মার্কেট নিয়ে চিন্তা করার কোনো কিছু নেই। নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা গত ২ বছর ৩৬টি কোম্পানির আইপিও দিয়েছি। এই সময়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, চলতি বছরেই ট্রেজারি বন্ড লেনদেন শুরু হলে পুঁজিবাজারের গ্রোথ বাড়ার পাশাপাশি জিডিপিতে অবদান বাড়বে। কিছুদিন পর যদি আমরা সব ধরনের বন্ড ট্রেড শুরু করবো তখন তো মার্কেট ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর সেটা চলতি বছরেই দেখতে পাবেন। বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, বড় কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ইনসেপ্টা ও নেসলেসহ অনেক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। 

বেশকিছু কোম্পানি ইতিবাচক সাড়াও দিয়েছে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি বলেছে, বুকবিল্ডিং পদ্ধতির বর্তমান বিডিং প্রক্রিয়ায় শেয়ারের যৌক্তিক (তাদের ভাষায়) দাম পাওয়া সম্ভব নয়। তাই তারা বাজারে আসতে আগ্রহী না। বিএসইসি’র পক্ষ থেকে তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে, তারা যদি বাজারে আসতে চায়, তাহলে কেস টু কেস ভিত্তিতে আইনি শর্তে কিছু ছাড় দেয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করে দেখা হবে। তিনি বলেন, আমাদের মিউচুয়াল ফান্ড রিসেন্ট সিসিউশন খুবই ভালো, তারা ডিভিডেন্ডও দিতে শুরু করছে। না দিলে তাদের ডেকে কারণ দর্শানো হচ্ছে।  অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কতো টাকা ট্যাক্স দেয় এটা সবাই জানে। কারণ তারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু ইউনিলিভার ও নেসলে বাংলাদেশে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করে যাচ্ছে। তারা কতো টাকা ট্যাক্স দেয় তা কেউ জানে না। কারণ তারা তালিকাভুক্ত নয়। ইউনিলিভারের সাবান লাক্স, নেসলের নুডল্‌স কিনছি, তারা ব্যবসা করে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের মালিকানা দিচ্ছে না। তারা কেন তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা যখন বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের দিকে দেখি তখন টপ টেনে (শীর্ষ ১০) ইউনিলিভার ও নেসলে থাকে। 

তাহলে আমাদের এখানে নেই কেন ১৭ কোটি মানুষকে কি তারা মুর্খ মনে করে আবু আহমেদ বলেন, মেট লাইফে (আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি) লাইন ধরে পলিসি কিনছে। কিন্তু তারা তালিকাভুক্ত নয়। অন্যান্য দেশে যদি এসব প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত হতে পারে তাহলে আমাদের দেশে কেন তালিকাভুক্ত হবে না এ প্রশ্ন তুলতে হবে, বারবার তুলতে হবে। ১০০ টাকায় মাত্র ১০ টাকা মালিকানা দিতে তাদের এত অনিহা কেন তাদের তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থমন্ত্রণালয় ও এনবিআরকে এগিয়ে আসতে হবে। জাঙ্ক দিয়ে শেয়ারবাজার চলছে জানিয়ে শেয়ারবাজারের এ বিশ্লেষক বলেন, আমাদের বাজারে কয়টা ভালো কোম্পানি আছে। এখানে নেসলে, ইউনিলিভারের মতো কোম্পানি আসছে না। জাঙ্ক শেয়ার দিয়ে মূলত শেয়ারবাজার চালানো হচ্ছে। এই বাজারে ভালো কোম্পানি আনা দরকার হলেও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ব্যবধান কমিয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সরকার এক্ষেত্রে সঠিক পলিসি নেয়নি। তিনি বলেন, দেশে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো কর দেয় বেশি। এজন্য প্রণোদনা দিয়ে ভালো ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status