শরীর ও মন
রমজানে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি কমে গেলে
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল হাই
১৯ এপ্রিল ২০২২, মঙ্গলবার
ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখলে হঠাৎ করেই তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, যাকে বলা হয় হাইপোগ্লাইসিমিয়া। আবার রক্তে চিনির মাত্রা খুব বেশি হয়ে গেলে হাইপারগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। তখন অবসাদ, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি সমস্যার তৈরি হতে পারে। রক্তে চিনির মাত্রা খুব কমে গেলে অনেক সময় মানুষ অচেতন বা অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণসমূহ:
- অত্যাধিক ইনসুলিন গ্রহণ
- শারীরিক কার্যকলাপের পরিমাণ ও সময়
- খাবারে কতোটা ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার আছে
- গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া
- খাওয়া, ঘুম ইত্যাদির সময়সূচি পরিবর্তন
- ঋতুস্রাব
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো:
- অস্থিরতা
- মাথা ঘোরা
- ঘাম
- ক্ষুধা
- দ্রুত হার্টবিট
- মনোনিবেশ করতে অক্ষমতা
- বিভ্রান্তি
- বিরক্তি
- উদ্বেগ বা নার্ভাসনেস
- মাথাব্যথা
রক্তে শর্করার মাত্রা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) ৭০ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (এমজি/ডিএল) বা ৩.৯ মিলিমোলস প্রতি লিটার (এমএমওএল/এল) এর নিচে হলেই বুঝতে হবে তা কমতে শুরু করেছে। এ সময় সতর্ক থাকা জরুরি। দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে তখন গ্লুকোজ বা ফলের রস পান করতে হবে।
রোজা শুরুর অন্তত প্রথম তিন দিন পাঁচ বেলা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়মিতভাবে পরিমাপ করা উচিত। রক্তে চিনির মাত্রা অস্বাভাবিক হলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ অবশ্যই করতে হবে। মনে রাখবেন যারা ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তারা মোট ইনসুলিনের তিন ভাগের দুই ভাগ ইফতারের সময় নেবেন এবং তিন ভাগের এক ভাগ সেহরির সময় নেবেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা যদি দেখেন তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৩.৯ এর নিচে নেমে এসেছে, তাহলে আর রোজা রাখা ঠিক হবে না। কারণ হাইপো হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বা মৃত্যুও হতে পারে।
লেখক: (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ)
জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট।
চেম্বার: ২২, স্টেডিয়াম মার্কেট, সিলেট।
ফোন: ০১৭১২২৯১৮৮৭