শরীর ও মন
পানিঘটিত অ্যালার্জি হলে
ডা. মোহাম্মদ আবদুল হাই
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার
পানি হতে অ্যালার্জি! বিষয়টা বিস্ময়কর শোনালেও অনেকেই পানিঘটিত অ্যালার্জিতে ভোগেন। মেডিকেল পরিভাষায় এ রোগকে বলা হয় একুয়াজেনিক আরটিকারিয়া (Aquagenic urticaria)।
কি করে বুঝবেন?
পানির সংস্পর্শে ত্বকে অসংখ্য লাল বিন্দু বা ডটের সৃষ্টি হয়। ডটগুলো সাধারণত এক থেকে তিন মিলিমিটার ব্যসের হয়ে থাকে। এই অ্যালার্জি ফোটগুলো লালচে রঙের হয়ে থাকে। অ্যালার্জি বিন্দুগুলো যে শুধু পানির স্পর্শ স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকে তা নয়, ত্বকের অন্য জায়গায়ও সেটা বিস্তৃত হতে পারে। সাধারণত গলা, বুক, পিঠ ও বাহুতে এই উপসর্গগুলো বেশি দেখা যায়।
একই সময়ে ত্বকে মৃদু থেকে তীব্র চুলকানি অনুভূত হয়। পানির সংস্পর্শ থেকে দূরে চলে গেলে সাধারণত ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে অ্যালার্জি এমনিতেই সেরে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তীব্র উপসর্গ যেমন শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
ঠাণ্ডা বা গরম যেকোনো তাপমাত্রার পানি এ উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় বৃষ্টির কয়েক ফোঁটা পানিই তাৎক্ষণিক উপসর্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি অনেকের শরীরের ঘাম থেকে ও একই সমস্যা তৈরি হয়।
পানি পানে সাধারণত তেমন কোনো সমস্যা হয় না, তবে কারও কারও ঠোঁট ও মুখগহ্বরে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা:
রোগ নির্ণয়ে প্রথমত রোগীর কাছ থেকে রোগের ইতিহাসের ওপর নির্ভর করতে হয়।
কিছু কিছু উপায় অবলম্বন করলে এ রোগের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অধিক সময় ধরে গোসল করা উচিত নয়। বারবার গোসল করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে সাঁতার বিপদের কারণ হয়। মূল কথা হচ্ছে, ত্বকে পানির ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে।
কিছু কিছু ওষুধ বেশ কার্যকর। শক্তিশালী গ্রুপের এন্টিহিস্টামিন যথেষ্ট কার্যকরী। তবে এই গ্রুপের ওষুধগুলোর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া একটু বেশি, যেমন তন্দ্রাভাব বা চোখ মুখ সহজে শুকিয়ে যাওয়া। নতুন জেনারেশনের এন্টিহিস্টামিন ওষুধগুলো খুব বেশি কার্যকর না হলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম।
ত্বকে প্রয়োগের কিছু উপকরণও যথেষ্ট কার্যকরী।
গোসলের আগে পেট্রোলিয়াম জেলি অথবা ভালো মানের কোনো তেল শরীরে ম্যাসাজ করে নিলে উপসর্গ অনেকটাই কমে যায়। রোগের লক্ষণ বেশি তীব্র হলে ফটোথেরাপি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া জীবনযাপন কল্পনাও করা যায় না। তাই পানিতে অ্যালার্জি অবশ্যই একটি বড় সমস্যা। আমাদের দেশে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে প্রয়োজন সঠিক তথ্য ও রোগ-পরামর্শ।
লেখক: (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ), জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার-১২, স্টেডিয়াম মার্কেট, সিলেট।
ফোন- ০১৭১২২৯১৮৮৭
মন্তব্য করুন
শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন
শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত
৯৫ ভাগ কিশোরীকে টিকা দেয়ার টার্গেট/ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা পেল ১১ শিক্ষার্থী

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]